May 9, 2024, 3:47 am

অবৈধ পাথর উত্তোলন থামছে না তিন উপজেলা

অং মারমা,বান্দরবান জেলা প্রতিনিধিঃ

থানছি,রুমা,লামা,আলীকদমে বিভিন্ন নদী, ঝিরি, খাল, ছড়া ও ঝর্ণা থেকে পানির উৎস নষ্ট করে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব এলাকার বেশকিছু স্থানে উত্তোলনকৃত প্রায় ১২  লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর পাচারের জন্য মজুদ করা হয়েছে।  বান্দরবান জেলা প্রশাসন কর্তৃক কোন প্রকার সরকারি অনুমোদন বা পারমিট না দিলেও নির্বিচারে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না।থানছি,রুমা,লামা,আলীকদমের বেশ কয়েকটি স্থানে বিশাল স্টক করে উত্তোলনকৃত এইসব অবৈধ পাথর রাখা হয়েছে।এদিকে কর্তৃপক্ষ যেন বিষয়টি জেনেও না জানার ভান করছেন। কখনো কখনো একে অন্যের দায়িত্ব বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে পাথর ব্যবসায়ীদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি বছরে থানছি,রুমা  লামা,আলীকদমে কোন পাথর উত্তোলনের পারমিট দেওয়া হয়নি।অবৈধ পাথর ব্যবসায়ী ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।এলাকাবাসী বলছে, থানছি,রুমা,লামা,আলীকদম উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে রাতের আঁধারে পাচারের জন্য মজুদ করা হয়েছে লাখ লাখ ঘনফুট অবৈধ পাথর। বিশেষ করে লামার ইয়াংছা কাঠাঁল ছড়া, বনপুর, হরিণঝিরি এবং আলীকদমের ১০ কিলো, ৬ কিলো, রেপারপাড়ি, চৈক্ষ্যং আবাসিক এলাকায়,থানছি-আইলমারা পাড়া ঝিড়ি,মাংগংই ঝিড়ি,স্বংরে ঝিড়ি, মংকহ ঝিড়ি,প্রাতা ঝিড়ি,পদ্মা ঝিড়ি,ডলু ঝিড়ি,রুমা- রুমা খাল,সোনাখাল সহ   বিশাল বিশাল পাথরের মজুদ করা হয়েছে। পাহাড়-খাল-নদী-ছড়া খুঁড়ে উত্তোলনকৃত এই অবৈধ পাথর থেকে কোন রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার।সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের কাছ থেকে জানা যায়,থানছি উপজেলা-  আইলমারা পাড়া ঝিড়ি,মাংগংই ঝিড়ি,স্বংরে ঝিড়ি, মংকহ ঝিড়ি,প্রাতা ঝিড়ি,পদ্মা ঝিড়ি,ডলু ঝিড়ি, রুমা- রুমা খাল,সোনা খাল,লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা বাজার, কাঠাঁলছড়া, ইয়াংছা মেম্বার পাড়া, গুলির মাঠ, শামুকঝিরি, বদুরঝিরি, মিরিঞ্জা, বনপুর বাজার, ছমুখাল, পাইকঝিরি, ওয়াক্রা পাড়া, খ্রিস্টান পাড়া, মরার ঝিরি, চচাই পাড়া, কেরানী ঝিরি, কইতরের ঝিরি, বুদুম ঝিরি, চিনির ঝিরি, গয়ালমারা, বালস্ট কারবারী পাড়া ঝিরি, জোয়াকি পাড়া, বাকঁখালী ঝিরি, হরিণ ঝিরি, রবাট কারবারী পাড়া ঝিরি, বালুর ঝিরি, আলিক্ষ্যং ঝিরি হতে নির্বিচারে পাথর তুলে মজুদ করা হয়েছে। এছাড়া গজালিয়া ইউনিয়নের ব্রিকফিল্ড, নিমন্দ মেম্বার পাড়া, মিনঝিরি, ফাইতং রাস্তার মাথা, আকিরাম পাড়া, নাজিরাম পাড়া, ফাইতং ইউনিয়নের মিজঝিরি অংশ, লম্বাশিয়া, মেহুন্ধা খাল, শিবাতলী পাড়া এবং সরই ইউনিয়নের লুলাইং, লেমুপালং এ কয়েক হাজার স্তুপে লক্ষাধিক অবৈধ পাথর জমা করা হয়েছে। বর্তমানে লামা উপজেলায় পাচারের জন্য ৪ লক্ষাধিক পাথর মজুদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রতিরাতে চুরি করে পাথর পাচার হচ্ছে বলে জানায় স্থানীয়রা।পাথর উত্তোলন, পাচার করতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা পানির উৎস নদী, খাল, ছড়া গুলো ধ্বংস করছে, অপরদিকে ভারি ট্রাকে করে পরিবহণ করতে গিয়ে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙে নষ্ট হচ্ছে। এতে করে অত্র অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।অপরদিকে আলীকদম উপজেলার ২৮৭নং তৈন মৌজার ছোট ভরি, বড় ভরি, ঠান্ডা ঝিরি, মাংগু ঝিরির শাখা প্রশাখা, আলীকদম-থানচি সড়ক, চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের পাট্টাখাইয়া সড়কের পথে পথে পাথরের স্তুপ, চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ভরিখাল, কলারঝিরির শাখা প্রশাখা, রেপারপাড়া এলাকার ডপ্রু ঝিরি, চিনারি দোকান এলাকার ভরিমুখ, মমপাখই হেডম্যান পাড়া, থানচি সড়কের ১০ কিলো, ৬ কিলো থেকে সরকারি অনুমতি ছাড়াই নির্বিচারে পাথর আহরণ ও পাচার করছে কয়েকটি সিন্ডিকেট। এইসব পয়েন্টে কমপক্ষে ২ লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর মজুদ করা হয়েছে।  এইসব অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীরা প্রায়সময় সরকারের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়েও পাথর নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।এইসব অবৈধ পাথরের বিষয়ে কিছুদিন আগে থানছি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নেত্রিতে পুলিশ সহায়তা নিয়ে  থানছি সদর ইউপি মংকহ ঝিড়িতে জব্দ করেছিল, তখন মালিকেরা ক্ষমা চেয়ে প্রথমবার মত ছেড়ে দিয়ে নিষেধ করা হয়েছে,তবুও পাথর উত্তোলন প্রতিনিয়ত চলছে ,রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নেত্রিতে পুলিশ সহায়তা নিয়ে বগালেঘ সোনা খালের অবৈধ পাথর উত্তোলনকৃত জব্দ করে মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল তবুও অবৈধ পাথর উত্তোলন থামেনি,  লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও আলীকদমের অতিরিক্ত দায়িত্বরত ইউএনও নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন, এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবহিত করুন।এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবানের উপ-পরিচালক একেএম সামিউল আলম বলেন, আমরা বান্দরবানে নতুন অফিস সেটআপ করছি। দ্রুত থানছি,রুমা, লামা আলীকদম সহ অবৈধ পাথরের বিষয়ে অভিযান চালানো হবে।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/ ৩০ মে ২০১৯/ইকবাল

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর