৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সিন্ডিকেট!
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট গত ৪ মাসে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস)। তাদের হিসাবে, গত ১২০ দিনে মোট ২৪ বার পণ্যটির দাম পরিবর্তন হয়েছে। এই সময়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০০ গুণ। আর অক্টোবর মাসে ভোক্তাদের পকেট থেকে দৈনিক প্রায় ৫০০ কোটি টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে সিন্ডিকেট।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্চে ‘পেঁয়াজের মূল্য সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরেন সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ।
পলাশ মাহমুদ বলেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে দিনকে দিন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। খেঁটে খাওয়া মানুষের ক্ষেত্রে পেঁয়াজ ক্রয় করা এখন বিলাসিতা পর্যায়ের। তিনি বলেন, পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে গত ৪ মাস আগে থেকেই। ঈদুল আযহার আগে থেকেই এর দাম বাড়তে থাকে। তখন ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ টাকা করা হয়। সেই থেকে সিন্ডিকেটের লোকেরা নিজেদের স্বার্থে পণ্যটির মূল্য বাড়িয়েই যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে তা গত ৪ মাসে মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী অন্তত ৫ বার স্বীকার করেছেন। তাছাড়া চট্রগ্রামে সিন্ডিকেটের ১৩ সদস্যকে চিহ্নিত করার পরও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আমদানি খরচ ও সরবরাহ সঙ্কটের যে কারণ দেখানো হচ্ছে তা নিয়ে সিসিএসের এই কর্মকর্তা বলেন, এই দুটি যুক্তি শুধুমাত্র ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণার কৌশল ও অজুহাত ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, এখন আমদানি বন্ধ হলেও, তখন ঈদুল আযহার সময় কিন্তু তা বন্ধ ছিলো না। ব্যবসায়ীরা কিন্তু তখন থেকেই দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। যা এখন অস্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।
ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার এক মাস হয়ে গেছে। কিন্তু দেশের সর্বত্র এখনো ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়া যায় উল্লেখ করে পলাশ মাহমুদ বলেন, এতেই প্রমাণিত হয় দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ যথেষ্ট ছিল এবং এখনো আছে।
দেশে বছরে ২৪ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখ টন চাহিদা দেশি পেঁয়াজেই পূরণ হয়। তাই দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলে সিসিএসের পক্ষ থেকে বলা হয়। ফলে কোনো দেশ রপ্তানি বন্ধ করলেও দেশি পেঁয়াজ সরবরাহ কমে যাওয়া বা বন্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তিনি জানান, ২ জুলাই থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোক্তাদের ৩ হাজার ১৭৯ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।