রুহুল আমীন খন্দকার, ব্যুরো প্রধান :
মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য” এই প্রতিপাদ্যটিকে সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর আইকন কুমিল্লা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে, নেওয়া হয়েছে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কুমিল্লা জুড়ে জনসচেতনতা সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ। সেখানে ১৮টি থানার পুলিশের সকল স্তরের দুই হাজার ৩শো’ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন দিনে রাতে ২৪ ঘন্টায় কুমিল্লাবাসীর কল্যাণে। পুলিশ সদস্যরা বর্তমানে তাদের দৈনন্দিন কাজের ৮০ ভাগই করছে করোনা নিয়ে। মার্চ মাসে প্রবাস থেকে দেশে ফিরে আসা ১৫ হাজার ২৫৩ জন প্রবাসীর মধ্যে খোঁজ নিয়ে নয় হাজার ৮১৩ জনের বাড়িতে পুলিশ গিয়েছে। এর মধ্যে নয় হাজার ১৫৭ জনকে বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে পেয়েছে। এ সময় তাদের শারিরীক অবস্থা জানতে চান। হোম কোয়ারেন্টানে থাকার নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে বলেন। এসব প্রবাসীদের বাড়ির পাশের পাঁচজনের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে পুলিশ। প্রবাসীদের ব্যাপারে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কোয়ারেন্টাইনে আছে কিনা তাও খোঁজ নিচ্ছে।ইতোমধ্যে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত নিয়মকানুন সম্বলিত ৫০ হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও তাদের মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেন। এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও র্যাবের সাথে সম্মেলিত ভাবে করোনা রোধে কাজ করছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এরমধেই বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। খাদ্য সামগ্রীর আরো তিন হাজার প্যাকেট মওজুদ রাখা হয়েছে। প্রতি প্যাকেটে রয়েছে পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক কেজি পিয়াজ ও আধা কেজি সয়াবিন তেল। এ সকল প্যাকেট প্রতি থানার ওসি ও ফাঁড়ির ইনচার্জের মাধ্যমে ঐ সকল এলাকার হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে বাজার মনিটরিংয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। একই সাথে জেলা আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখার নিয়মিত দায়িত্বও পালন করছেন। এক সপ্তাহ পরে খাদ্যদ্রব্যের অভাব দেখা দিলে চুরি ডাকাতির আশঙ্কা রয়েছে সে বিষয়ে পুলিশের পূর্ব প্রস্তুতিও রয়েছে। করোনা রোধের কাজে ব্যবহারের জন্য পুলিশ সদ্যদের জন্য এক হাজার দুই শত রেইনকোট মওজুদ রাখা হয়েছে। যা দিয়ে পা থেকে মাথা পর্যান্ত নিজেকে আবৃত্ত রাখা যাবে। এ ছাড়াও আরও সুরক্ষা পোশাক তৈরি করা হচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে কোন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হলে তার যথাযথ সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। পুলিশ হাসপাতালে অসুস্থ পুলিশদেরকে রাখার জন্যও বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।এ বিষয়ে কুমিল্লার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মানবতার সেবক সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের এই মহামারী দুর্যোগে অন্য কোন সেবাদানকারী সংস্থার চাইতে পুলিশ কোন ভাবেই পিছিয়ে নেই। এমনিতেই দেশবাসীর বিপদে আপদে পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত। বর্তমান পরিস্থিতি মানুষের সেবাতেও পিছিয়ে থাকবেনা। আমরা সেবার মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছি। করোনা প্রতিরোধে আমরা সার্ব ক্ষণিক মাঠে থাকবো। রাষ্ট্রীয় সকল নির্দেশনা মেনে সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক দিক নির্দেশনায় আমরা শেষ পর্যান্ত কাজ করে যাবো। এতে জীবন বিপন্ন হলেও পুলিশ সদস্যরা পিছপা হবে না। এ কাজে আল্লাহ্ তায়লা আমাদের সহায়তা করবেন ইনশাআল্লাহ্।এসপি আরো বলেন, করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের লক্ষ্যে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানসহ জনবহুল জায়গা গুলোতে ৩ফিট পরপর রং দিয়ে রেখা অঙ্কন করে দেওয়া হচ্ছে। জনসাধারণকে কোয়ারিন্টাইন নিশ্চিত কারনের বিষয়টি বোঝানোর পাশাপাশি চালানো হচ্ছে করোনা সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। লক্ষ রাখতে হবে আমরা যেন কোনভাবেই আক্রান্ত না হই, সেজন্য প্রত্যেককে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে দেওয়া হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী। এমনকি রাস্তা-ঘাট, দোকান-পাটসহ জনবসতিপূর্ণ এলাকা গুলোতে স্প্রে ম্যাশিনের মাধ্যমে জীবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। একই সাথে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি সকল নির্দেশনা মেনে চলারও আহ্বান জানান এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/০১ এপ্রিল ২০২০/ইকবাল