ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইরান সমর্থিত পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ)সহ সকল মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে ভেঙে দিতে ইরাকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইরাকি প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বানের ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও ম্যাক্রোঁ ইরাকের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ‘অগ্রহণযোগ্য হস্তক্ষেপ’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত শনিবার প্যারিসে ইরাকি কুর্দি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ আহ্বান জানান ম্যাক্রোঁ। গত শনিবার, কুর্দিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাচিরভান বারজানি এবং উপ প্রধানমন্ত্রী কুবাদ তালাবানির সঙ্গে বৈঠক করেন ম্যাক্রোঁ।
ইরাক থেকে কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা প্রশ্নে ২৫ সেপ্টেম্বর গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এটিউ প্রথম কুর্দি নেতাদের প্রথম আন্তর্জাতিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। গণভোটের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এবং ব্র্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দুজনই ইরাক সফর করলেও তারা কুর্দিস্তানে যাননি।
কেবল বাগদাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গেই দেখা করেছেন তারা। রয়টার্স জানায়, ইরাকি কুর্দি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্যারিসে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন ম্যাক্রোঁ। সেসময় তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে ইরাকে প্রতিষ্ঠিত হওয়া পপুলার মোবিলাইজেশন গোষ্ঠীটিকে ধীরে ধীরে নিরস্ত্র করতে হবে এবং সকল মিলিশিয়াকে ধীরে ধীরে ভেঙে দিতে হবে।’
রয়টার্স জানায়, ওই মন্তব্যের পর বাগদাদে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদির কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, টেলিফোনে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে আবাদির কথা হয়েছে এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ঐক্যবদ্ধ ইরাকের প্রতি তার দেশের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
তবে ম্যাক্রোঁ মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছেন কিনা তা ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি। সাবেক ইরাকি প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরি মালিকিও একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ফ্রান্সের এ অবস্থান পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।
এটি ইরাকের সার্বভৌমত্ব ও প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর।’ উল্লেখ্য, কুর্দিস্তান রিজিওনাল গভর্নমেন্ট (কেআরজি) কর্তৃপক্ষের দাবি আরব শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী পিএমএফ ইরাকের বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর সম্মিলিত বসবাসের অঞ্চলগুলোতে নিপীড়ন চালিয়ে থাকে।
তবে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদির সরকার তা স্বীকার করে না। যদিও সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। ইরাকের স্বায়ত্ত্বশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দিয়েছে শতকরা ৯৩ ভাগ মানুষ। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।