ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নিজেকে নিষিদ্ধ-ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) মহা সমর্থক ঘোষণা করেছেন সাবেক পাকিস্তানি সেনাশাসক পারভেজ মুশাররফ। গত মঙ্গলবার পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল এআরওয়াই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুশাররফ এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে দেশটির আরেক সংবাদমাধ্যম ডন।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি মুশাররফ ঘোষিত ২৩ দলীয় মহজোট নিয়ে এআরওয়াই চ্যানেলের ইলেভেনথ আওয়ার অনুষ্ঠানে আলোচনার আয়োজন করা হয়। ওই টকশোতে উপস্থিত ছিলেন মুশাররফ। তার পাশেই বসেছিলেন মজলিম-আই-ওয়াহদাতুল মুসলিমীন, সুন্নি ইতেহাদ কাউন্সিল এবং পাকিস্তান সুন্নি তেহরিকের মতো দলগুলোর নেতারা। অনুষ্ঠানে উপস্থাপক সাবেক এই সেনাশাসককে উদ্দেশ্য করে বলেন, যে মুশাররফ ‘মধ্যমপন্থী অবস্থান ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি আলোকপাত করেছেন, সেই মুশাররফকে বিভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী ধর্মীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে দেখাটা কৌতুহলের।
জবাবে মুশাররফ বলেন, ‘আপনি আমাকে উদারপন্থী হিসেবে উল্লেখ করছেন…হ্যাঁ আমি তাই। এগুলো আমার চিন্তা। তার মানে এই নয়, আমি সব ধর্মীয় দলগুলোর বিপক্ষে। আমি এলইটি এর মহা সমর্থক এবং আমি জানি এলইটি এবং জেইউডিও আমাকে পছন্দ করে।’
এ জামাত-উদ-দাওয়া লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা। লস্কর-ই-তৈয়বার প্রতিষ্ঠাতা ও ২৬/১১ মুম্বাই সন্দেহভাজন ষড়যন্ত্রকারী সাঈদ হাফিজকে সমর্থন করেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁসূচক উত্তর দেন সাবেক পাকিস্তানি সেনাশাসক। জানান, হাফিজের সঙ্গে তার দেখাও হয়েছে। সাক্ষাৎকারে মোশাররফ জানান, সাইদ শুধু কাশ্মির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এবং তিনি (মুশাররফ) কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর ওপর চাপ তৈরির পক্ষপাতী।
২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাফিজের মাথার দাম ধার্য করে। তবে ওই হামলার সঙ্গে সাঈদ জড়িত নন বলে দাবি করেন মোশাররফ। গত সপ্তাহে লাহোর হাইকোর্টের নির্দেশে গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি পান সাঈদ। যুক্তরাষ্ট্র তাকে আবার গ্রেফতারের জন্য পাকিস্তান সরকারকে আহ্বান জানায়। তবে মুশাররফের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বিবৃতিটি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের জন্য অপমানজনক’।
মুশাররফ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২০০২ সাল থেকে পাকিস্তানে লস্কর-ই-তৈবাকে নিষিদ্ধ করা হয়। এ ব্যাপারে পাকিস্তানের সাবেক এ সেনাপ্রধান জানান, সেই সময় তিনি হাফিজ সাইদের ব্যাপারে কিছু জানতেন না। তখন তিনি সাঈদকে চিনলে লস্কর-ই-তৈয়বাকে কখনই নিষিদ্ধ ঘোষণা করতেন না বলেও দাবি করেন মুশাররফ।