ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
এবার সৌদি আরবের সঙ্গে গোপন সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেন একজন ইসরায়েলি মন্ত্রী। ইসরায়েল আরব দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারবে। তবে ওই সমস্যার সমাধান না হলে ইসরায়েলের সাথে সৌদি আরবের কোনও সম্পর্ক নেই। দেশটির জ¦ালানিমন্ত্রী ইউভাল স্টেইনিৎয গত রোববার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘আর্মি রেডিও’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ‘আর্মি রেডিও’কে উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে। সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল সরাসরি সৌদি আরবের নামোল্লেখ না করে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের আভাস দেন। আর ক’দিন আগে ইসরায়েলি সামরিক প্রধান দুই দেশের সম্ভাব্য সামরিক তথ্য বিনিময়ের কথা বলেন। তবে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি এই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। জ¦ালানিমন্ত্রী ইউভাল স্টেইনিৎয ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। তিনি ‘আর্মি রেডিও’কে বলেছেন, ‘অনেক মুসলিম ও আরব দেশের সঙ্গে আমাদের সত্যিকার গোপন সম্পর্ক রয়েছে। আর এ নিয়ে লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবই চেয়েছে ইসরাইলের সঙ্গে তার সম্পর্ককে গোপন রাখতে। এতে আমাদের কোনও সমস্যা ছিল না।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই মন্ত্রীর বক্তব্যের পর এখনও সৌদি আরব কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নোতানিয়াহুর একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ইসরায়েলি জ¦ালানি মন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবসহ কোনো আরব দেশ বা কোনো মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী হলে আমরা তাদের ইচ্ছাকে আমরা সম্মান জানাই। আমরা সে সম্পর্ক গোপন রাখি।’ সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ইসরায়েলের কী লাভ জানতে চাইলে স্টেইনিৎয বলেন, ‘ইরানকে প্রতিহত করতে সৌদি আরবসহ আধুনিক আরব বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ আমাদেরকে সাহায্য করেছে। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে আমাদের চেষ্টায়ও এই আরব দেশগুলো সহযোগিতা করেছে। এমনকি বর্তমানে আমাদের দেশের উত্তর সীমান্তে সিরিয়ায় ইরানের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের কাজেও সুন্নি আরব বিশ্ব আমাদেরকে সহযোগিতা করছে।’ এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল গ্যাদি এইজেনকোট বলেছিলেন, ইরানকে প্রতিহত করতে সৌদি আরবকে গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে তেল আবিব। এ সময় তিনি ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য প্রধান হুমকি চিহ্নিত করেন। গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কারও নাম প্রকাশ না করে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক থাকার কথা বলেছিলেন। ওই মাসেই ইসরায়েলের একটি রেডিও জানিয়েছিল, সৌদি যুবরাজ গোপনে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেছেন। তবে গত বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল জুবায়ের ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন। তিনি জানান, যদি ২০০২ সালে আরব লীগ প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির অনুযায়ী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হয় তাহলে তাদের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরি হবে।