ঢাকা-১৭ আসন থেকে সরে দাঁড়ালেন এরশাদ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করিয়ে দেশে ফিরে এইচ এম এরশাদ বলেছেন, মহাজোটের সিদ্ধান্তই মানবে জাতীয় পার্টি এবং তিনি নিজেও ঢাকা-১৭ আসনে ভোট করা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। সিঙ্গাপুর থেকে ফেরার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে জাতীয় পার্টির সব প্রার্থীকে মহাজোটের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এরশাদ বলেন, মহাজোটকে সমর্থন করবে জাতীয় পার্টি। মহাজোট যে সিদ্ধান্ত নেবে প্রার্থীদের তা মেনে নিতে হবে। এরশাদ রংপুরের পাশাপাশি ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এই আসনে আওয়ামী লীগেরও প্রার্থী রয়েছেন চিত্রনায়ক ফারুক (আকবর হোসেন পাঠান)। এরশাদ সাতক্ষীরার একটি আসনেও প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পরও শতাধিক আসনে জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাখার পর নানা গুঞ্জনের মধ্যে গত ১২ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন এরশাদ। ১৫ দিন পর ভোটের তিন দিন আগে গত বুধবার রাতে দেশে ফেরেন তিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেও তাতে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদ নাটকীয় অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি এমপি নির্বাচিত হন এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পান। জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের আসনে বসার পাশাপাশি সরকারেও যোগ দেয়। এবারও একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় ‘অসুস্থ’ এরশাদের সিএমএইচে ভর্তির খবর এলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। জাতীয় পার্টির নেতারা বলে আসছেন, ‘রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায়’ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৮৮ বছর বয়সী এরশাদ। দেশে থাকতে তাকে নিয়মিত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে যাওয়া-আসা করতে হচ্ছিল। জাতীয় পার্টির জোটসঙ্গী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেন, এরশাদের এবারের অসুস্থতা ‘রাজনৈতিক’ নয়; তিনি ‘সত্যিই’ অসুস্থ। তবে এরশাদের ভাই জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছিলেন, এই বয়সে যতটা অসুস্থ হয় মানুষ, তার ভাই তেমনই অসুস্থ। সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে এরশাদ তার দলে মহাসচিবও বদলে গিয়েছিলেন। নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে সেই পদে আনা হয় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে। তবে পরে আবার নিজের অবর্তমানে ‘চেয়ারম্যানের সার্বিক সাংগঠনিক দায়িত্ব’ হাওলাদারকে দিয়ে গিয়েছিলেন এরশাদ। ১০ বছর আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বাঁধার পর বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ-অনুযোগ করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন এইচ এম এরশাদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার বোন শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। আমি নির্বাচনে বোন শেখ হাসিনাকে সর্বোত সহযোগিতা করব। ঢাকার বারিধারায় নিজের বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ জানান, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মহাজোটের সিদ্ধান্তই মেনে চলবে।