সিলেট প্রতিনিধিঃ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ১২ টা থেকে নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দেশের ৩৮৯ উপজেলায় সেনাবাহিনী এবং ১৮ উপজেলায় নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন শুরু করে।এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনসহ জেলার প্রতিটি উপজেলায় গড়ে ৫০ জন করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) সিলেটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এম কাজি এমদাদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।তিনি জানান- সারাদেশের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন ও ১৩টি উপজেলায় ৫০ জন করে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হয়েছে।তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৭ জনের সমন্বয়ে করা প্লাটুনে সিলেট জেলায় ৭০০ জন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার ভোর থেকে সিলেটের মাঠে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে তিনি জানান।প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয়সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশের তিনশ’ সংসদীয় এলাকায় ‘ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ অনুযায়ী সশস্ত্রবাহিনী কাজ করবে। ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১০ দিন মাঠে থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রে সশস্ত্র বাহিনীর এই কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে।নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ‘ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু দ্যা সিভিল পাওয়ার’ অনুযায়ী কাজ করবেন। মূলত তারা জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকার সংযোগ স্থলে অবস্থান করবেন, প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে পারবে সশস্ত্র বাহিনী। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে ইসির কাজে যাবতীয় সহায়তা দেয়াসহ প্রয়োজনে পরিস্থিতি বিবেচনা বা নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এই বাহিনী।পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী। অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন। এছাড়া জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিতে পারবেন। সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।এছাড়া ইভিএম পরিচালনায় থাকছেন সাড়ে ৩ হাজার ৩শ’ সেনা সদস্য মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এর মধ্যে ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরি সহায়তার জন্য থাকবে মোট ২ হাজার ৫৩৫ জন সেনা সদস্য। আর প্রতি কেন্দ্রের জন্য গঠিত একেকটি টিমে থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর তিন জন করে সদস্য।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৫ ডিসেম্বর ২০১৮/ইকবাল