মোশাররফ হোসেন শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
শেরপুর-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হুইপ আতিউর রহমান আতিকের কন্যা ডা: শারমিন রহমান অমি ও বিএনপি প্রার্থী ডা: সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকার গাড়িবহরে হামলার অভিযোগে ২ প্রার্থী পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ২৫ ডিসেম্বর
মঙ্গলবার শহরের চকবাজারস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও বিএনপি প্রার্থী ডা: প্রিয়াংকার মাধবপুরস্থ বাসভবনে ওই সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়।সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, শেরপুর-১ আসনে নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকে বিএনপি প্রার্থী ডা: সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকার ইন্ধনে তার কর্মী-সমর্থকরা শেরপুরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও নির্বাচন বানচাল করতে নৌকার প্রতীকসহ নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর-হামলা করছে। ইতি পূর্বে সদর উপজেলার ধলা, লছমনপুর, খাসপাড়া, শহরের গৌরীপুর মহল্লাসহ বেশ কয়েকটি নৌকার নির্বাচনী অফিস হামলা ভাঙচুর করা হয়। এ আসনে বিগত ৪টি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকালে এমন পরিস্থিতি হয়নি এবং কোথাও নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন। সেই সাথে বিএনপি প্রার্থী প্রিয়াংকার গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিএনপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ কাজগুলো করছে। এজন্য তিনি প্রসাসনের সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে হুইপ আতিকের কন্যা ডা: শারমিন রহমান অপি অভিযোগ করে বলেন, সোমবার বিকেলে তার স্বামী ডা: জহিরুল ইসলাম জুয়েল, ছোটবোন সাদিয়া রহমান অপিকে নিয়ে নৌকার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে গাড়ি নিয়ে যাবার পথে লছমনপুর ইউনিয়নের কুসুমহাটী বাজার পৌঁছামাত্র ওই গাড়িকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে। এছাড়াও গত ২ দিন ২০ ডিসেম্বর বাজিতখিলা ২২ ডিসেম্বর দরিয়ারপাড় এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকরে প্রার্থী ডা: প্রিয়াংকার নির্দেশে বিএনপির সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ওইসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, সহ-সভাপতি ফখরুল মজিদ খোকন ও মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জুনায়েদ নুরানী মনি, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।এদিকে হুইপ কন্যা ডা: অমি তার উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে ডিসি গেইটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত প্রমুখ।অপর দিকে বিএনপি প্রার্থী ডা: সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা সংবাদ সম্মেলনে সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার ঘুঘুরাকান্দি এলাকায় গণসংযোগ করতে যাওয়ার পথে তার গাড়িবহরে হামলা ভাঙচুর,আত্তীয় সহ নেতাকর্মীদের মারপিট এবং ঘটনার বিচার দাবীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান কালে উল্টো তারই কয়েকজন আত্তীয়-নেতা কর্মীকে আটকের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। সেইসাথে তিনি নিজেকে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী দাবী করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি সবার সন্তানতুল্য। আমি সুষ্ঠ নির্বাচন চাই, হানাহানি চাই না।আমার দলের সব নেতা-কর্মী হামলা মামলায় জর্জরিত। তারা প্রতিপক্ষের উপর হামলা করবে কিভাবে? তিনি বলেন আমার দলকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমার। নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। জিতলে জিতবো, তা না হলে হারবো। তিনি বলেন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমার নেতা-কর্মীদের উপর মিথ্যা মামলা ও হামলার জন্য কারও কাছে বিচার চেয়ে লাভ নেই। তবে আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তার কাছেই বিচার দিলাম। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা: প্রিয়াংকার মা নিলুফা খানম, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট তৌহিদুর রহমান, সাবেক যুগ্ম আহব্বায়ক প্রভাষক মামুনুর রশিদ পলাশ প্রমুখ। এরপর ডা: প্রিয়াংকা শহরের নিউমার্কেট ও ওবটতলা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় সংক্ষিপ্ত পথসভায় তার উপর হামলা, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ তুলে জনতার কাছে তার সমুচিত জবাব দিতে অনুরোধ করেন।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৫ ডিসেম্বর ২০১৮/ইকবাল