প্রাথমিকের সমাপনী-ইবতেদায়ী ও জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ইবতেদায়ী এবং অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা জেএসসি ও জেডিসির ফল প্রকাশ করা হয়েছে গতকাল সোমবার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার গতকাল সোমবার সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন। পরে দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি। অন্যদিকে, বোর্ড চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল সোমবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন।
এ বছর পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং ইবতেদায়ীতে ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩ জন। আর ইবতেদায়ীতে ১২ হাজার ২৬৪ জন পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে। গত বছর প্রাথমিক সমাপনীতে ৯৫ দশমিক ১৮ শতাংশ ও ইবতেদায়ীতে ৯২ দশমিক ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। প্রাথমিকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ লাখ ৬২ হাজার ৬০৯ জন; আর ইবতেদায়ীতে ৫ হাজার ২৩ জন। এই হিসাবে এবার পঞ্চম শ্রেণির এই সমাপনী পরীক্ষায় পাসের হারের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণ জিপিএ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবার বেড়েছে। গত ১৮ থেকে ২৬ নভেম্বর প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীতে ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
অন্যদিকে, অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৮৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী; ৬৮ হাজার ৯৫ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। সেই হিসেবে এবার এ পরীক্ষায় পাসের হার বাড়লেও পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যায় বড় ধস নেমেছে। গত বছর জেএসসি-জেডিসিতে সম্মিলিতভাবে ৮৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। এর মধ্যে এক লাখ ৯১ হাজার ৬২৮ জন পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পেয়েছিল। ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তরের পর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগে অষ্টমের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়ের নম্বর ধরেই ফলাফল হিসাব করা হত। মূল্যায়ন পদ্ধতির ধারাবাহিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে এবার তা করা হয়নি। এ কারণেই জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, চতুর্থ বিষয়ের নম্বর যোগ করলে দেখা যাবে জিপিএ ফাইভ আবার বেড়ে গেছে। বেলা ১২টায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ এবারের জেএসসি-জেডিসির ফলাফলের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন। তার সংবাদ সম্মেলনের পরেই শিক্ষাথীরা ফল জানতে পারবে। গত ১ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৯ জন শিক্ষার্থী জেএসসি-জেডিসিতে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে ২২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৯ জন। এর মধ্যে আট বোর্ডের অধীনে জেএসসিতে পাসের হার ৮৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে জেডিসিতে পাস করেছে ৮৯ দশমিক ০৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। গণভবনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানর শিক্ষার্থীদের হাতে ২০১৯ সালের নতুন বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
মোবাইলে প্রাথমিক সমাপনী ও ইবতেদায়ীর ফল: যে কোনো মোবাইল ফোন থেকে EBT লিখে স্পেস দিয়ে থানা/উপজেলার কোড নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে প্রাথমিক সমাপনীর ফল জানা যাচ্ছে। আর ইবতেদায়ীর ফল পেতে EBT লিখে স্পেস দিয়ে থানা/উপজেলার কোড নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। এই এসএমএস লেখার সময় সরকারি অথবা রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঊগওঝ কোড নম্বরের প্রথম পাঁচ সংখ্যা উপজেলা/থানা কোড হিসেবে ব্যবহার করতে হবে; যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জানা যাবে। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট এবং টেলিটকের ওয়েবসাইট থেকেও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনীর ফল জানা যাচ্ছে।
জেএসসি-জেডিসি: যে কোনো মোবাইল থেকে JSC/JDC লিখে স্পেস দিয়ে নিজ বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৮ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস করলে ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষাবোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (http://www.educationboardresults.gov.bd) এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকেও জেএসসি-জেডিসির ফল জানা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ই-মেইলেও জেএসসি-জেডিসির ফলাফলের সফটকপি পাঠাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড। প্রয়োজনে এদের কাছ থেকেও ফলাফলের কপি সংগ্রহ করা যাবে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানিয়েছে।