মজুরী গেজেট প্রকাশ করা হয়। গেজেট অনুযায়ী দেশের রপ্তানী শিল্পের শ্রমিকদের নি¤œতম মজুরী বিজয়ের মাসে কার্যকর হয়ে জানুয়ারী‘ ২০১৯ মাসে শ্রমিকদের হাতে আসবে। গত ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ থেকে বিক্ষিপ্তভাবে এবং বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু কারখানায় মেহনতি শ্রমিকরা ঘোষিত নি¤œতম মজুরি নিয়ে তাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ক্ষোভ-বিক্ষোভ কারখানার অভ্যন্তরে কাজ বন্ধ রাখাসহ একযোগে কারখানা থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। সরকারের ঘোষিত মজুরী নিয়ে কোনো একক বা দলবদ্ধ শ্রমিকের কোনরুপ আপত্তি ও ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু জানুয়ারী, ২০১৯ ইং মাসের মজুরী প্রাপ্তির পূর্বেই ঘোষিত মজুরী নিয়ে কোনরুপ বিক্ষোভ, বিশৃঙ্খলা বা কাজ বন্ধ রাখার মত বিচ্ছিন্ন শ্রমিক অসন্তোষকে দায়িত্বশীল শ্রমিক সংগঠন হিসাবে সমর্থন করা যায় না।জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সমগ্র জাতি যেখানে নির্বাচনী কর্মকান্ডে মনোনিবেশ করছে সেখানে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ শ্রমিক সমাজ কোনরুপ দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। ঘোষিত মজুরী নিয়ে কোনরুপ ক্ষোভ বা অসন্তোষ থাকলে উহা আগামী জাতীয় নির্বাচনের পরে নির্দিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে অথবা বিজিএমইএ/বিকেএমইএ কে সাথে নিয়ে বা প্রয়োজনে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ত্রি-পক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সমাধানের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করবো। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ইং তারিখে মাননীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের সভাপতিত্বে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকার, শ্রমিক ও মালিকদের সমন্বয়ে ত্রি-পক্ষীয় সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, যদি মজুরির বিষয়ে কোন সমস্যা পাওয়া যায়, সে বিষয়টি জাতীয় নির্বাচনের পর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে প্রতিমন্ত্রী মহোদয় আমাদের কে আশ্বস্ত করেছেন। তৃণমূল পর্যায়ে শ্রমিকদের ব্যাথা-বেদনা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সমাধান করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে।আমরা দ্ব্যর্থহীণ কন্ঠে ঘোষণা করতে চাই যে, বিচ্ছিন্নভাবে যে সকল কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন তাদেরকে অবিলম্বে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করে শান্তিপূর্ণভাবে উৎপাদন কাজে নিয়োজিত থাকার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। জাতীয় নির্বাচনের পর যে কোন সমস্যা সমাধানে আমাদের উপস্থিত সকল সংগঠনগুলো সর্বদা প্রস্তত আছি। পাশাপাশি আমরা আপনাদেরকে স্বরণ করে দিতে চাই। আমাদের সংগঠনসমূহের বেসিক ইউনিয়ন, আঞ্চলিক/তৃণমূল নেতৃবৃন্দ এবং প্রাণপ্রিয় শ্রমিক ভাই-বোনেরা আমাদের অদ্যকার আহ্বানের পরও নিজ নিজ কর্মস্থলে শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগদান না করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ¯্রােতধারার সাথে মিশে অসন্তোষ কর্মকান্ডের মধ্যে জড়িত থাকলে তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন কোনরুপ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা তাদের পক্ষাবলম্বন করব না। এর দায়দায়িত্ব তাদের নিজেদেরকে বহন করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসাইন, বাংলাদেশ পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তৌহিদুর রহমান, বাংলাদেশ বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সালাউদ্দিন স্বপন, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাবুল আক্তার, বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশনের সহ সভাপতি রাশেদুল আলম রাজু, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন সহিদ, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, একতা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাণী খান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগম, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কামরুন্নাহার প্রমুখ।