June 24, 2025, 12:47 am

সংবাদ শিরোনাম
সুনামগঞ্জে সেনাবাহিনী-অস্ত্রধারীদের গোলাগুলি, ৪ জন আটক যশোরে মাদক মামলায় বেনাপোলের দু’জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ঢাকার কামরাঙ্গীচর যেন অনিয়মের দূর্গ সিরাজগঞ্জে কাব স্কাউটদের কাব কার্ণিভাল অনুষ্ঠিত বেনাপোল কাষ্টমস হাউজে ফের কলমবিরতি চলছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে প্রতিবেশীর ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ৬টি গাছের নিচে মৃত্যু ঝুঁকিতে সাংবাদিক পরিবারের বসবাস, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা! ইউএনও’র তদন্ত ‘দায়সারা’ ভারতীয় পন্যসহ ৩ জনকে আটক করেছে শেরপুর ফাঁড়ি পুলিশ ভারতে যাওয়ার পথে বেনাপোলে আটক “তারাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান” আনিছুর রহমান গৌরনদীতে ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন ব্রিজে পারাপার এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়মুখী মানুষের চরম দুর্ভোগ বামনায় নবগঠিত গভনিং বডির অভিষেক অনুষ্ঠান

হালিশহরে যুবক খুনের ঘটনায় অস্তিত্ব সংকটে দুইটি পরিবার

পেকুয়া প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রাম বন্দর থানাধীন হালিশহর এলাকায় যুবক খুনের ঘটনায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দুইটি পরিবার। এই দুই পরিবারের মধ্যে একটি হল এক পরিবার থেকে গ্রেফতারকৃত তিনজন আসামীর পরিবার, অপর পরিবার হল নিহত সাহেদ প্রকাশ রনির পরিবার। চট্টগ্রামে মিসটার্গেট খুনের মামলায় এক পরিবারের তিনজন আসামী এবং তিনজনই গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে রয়েছে। তাদের পরিবারে বইছে কান্নার রোল। গত ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে বন্দর থানাধীন হালিশহর শহরের ইছাক ডিপু এলাকায় সাহেদ প্রকাশ রনি নামে এক যুবক খুন হয়। তার বাড়ি নগরীর এনায়েত বাজার কষাই পাড়ায় এবং সে হালিশহরের নয়া বাজার পানির কল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় লক্ষ্যভ্রষ্টে আঘাতে তার মত্যু হয় বলে বন্দর থানা সূত্রে জানা গেছে। এই ঘটনায় বন্দর থানায় দায়েরকৃত মামলায় মোট ১১ জনকে এজাহারভুক্ত কর অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭ জনকে আসামী করা হয়েছে। মোঃ রনি, মোঃ আলা উদ্দীন ও মোঃ তাজউদ্দীন এই ৩ জনকে ৫, ৬ ও ৭ নং আসামী করা হয়েছে। ৬ নং আসামী মোঃ আলা উদ্দীন ও ৭নং আসামী মোঃ তাজ উদ্দীন রানার আপন চাচা। তারা এখনও যৌথ পরিবার। তারা মধ্যম হালিশহর আদর্শ পাড়ার স্থায়ী বাসিদা এবং চাকুরীজীবী। এক মামলায় ৩ জন আসামী হওয়ায় ঐ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের পরিবারেও নেমে এসেছে হতাশা ও কান্নার রোল। তারা সবাই ছাটখাট চাকুরী করে, পরিবার চালাতো। তাদের সবারই ছেলমেয় রয়েছে। বর্তমান এই ৩ জন জেল হাজতে থাকায় তাদের পরিবার পড়েছে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে। রানার চাচা এবং আলা উদ্দীন ও তাজ উদ্দীনের ভাই হারুন অর রশিদ জানায় রানা বন্দর খালাসীর চাকুরী করে। ঘটনার দিন সে বিকাল ৪টা থেকে রাত ১২টার শীপটে ডিউটি করে বাড়িতে আসার সময় হট্টগোলের মধ্যে তার চাচা আলা উদ্দীনকে আটক করা হচ্ছে দেখে সে, ঘটনার কারণ জানতে এগিয়ে গেলে তাকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। আলা উদ্দীন ঘটনাস্থলের কাছাকাছি শুকতারা মোটর ওয়ার্কশপের সিকিউরিটি গার্ড। সে একটু সহজ, সরল বলে গন্ডগোল দেখে বাড়ির দিকে চলে আসছিল। এই সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। মোঃ তাজ উদ্দীন একজন টম টম চালক। স্থানীয় বাদশা কমিউনিটি সেন্টার থেকে বিয়ের দাওয়াত খেয়ে আসার সময় আব্দুল গণি সুকোনীর বাড়ির সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে তখনও খুনের ঘটনা সম্পর্কে অবগত ছিল না। মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন, আমার পরিবারের সবায় কর্মজীবী, কর্ম করেই সবাই জীবিকা নির্বাহ করে। কোন প্রকার ধাদাবাজ বা অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে আমার পরিবারের কেউ কখনও জড়িত ছিল না। একই পরিবারের তিনজন কর্মক্ষম লোক খুনের মামলায় আসামী হয়ে জেল হাজতে থাকায় আজ আমরা পরিবার, পরিজন নিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছি। হারুন অর রশিদ এর মা সালেহা খাতুন বলেন, আমার ছেলেরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কালাম পড়ে। কোন অসামাজিক কাজ-তা দূরে থাক আমার ছেলেরা পান, বিড়ি, সিগারেট পর্যন্ত খায় না। কারো দুশমনীর শিকার হয়ে আজ আমার ছেলেরা জেল হাজতে গেছে। আমার দুই ছেলেও নাতি নির্দোষ। আমি তাদের মুক্তি চাই। রানার মা আলমাস বেগম বলেন, আমার ছেলে বন্দরে চাকুরী করে। ঘটনার দিনও আমার ছেলে চাকুরীতে ছিল। চাকুরী থেকে আসার সময় আমার ছেলেক গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার ছেলে কখনও কোন খারাপ কাজে লিপ্ত ছিল না। তার একজন পুত্র সন্তান রয়েছে। এখনও তার স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা। তার অনুপস্থিতিতে সবকিছু আমি কিভাবে সামাল দেব? আমার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ, আমি তার মুক্তি চাই। এলাকার প্রবীণ লোক ছালে আহম্মদের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু রনি, আলা উদ্দীন, তাজ উদ্দীন নয়, তাদের ভাই-বোন সবাই আমাদের চোখের সামনে বড় হয়েছে। এই পরিবারের কাহাকেও আমরা কখনও কোন অসামাজিক বা উচ্ছৃংখল কাজে লিপ্ত দেখি নাই। তারা কোন দিনও কোন প্রকার মারামারি হানাহানিতে জড়িত ছিল না। তাদের একই পরিবারের দুই সহোদর ভাই সহ ৩ জনকে আসামী হতে দেখে আর্শ্চয্য হয়েছি। এলাকার মহল্লা সর্দ্দার জসিম জানান, এই পরিবারের কারো বিরুদ্ধে কোন প্রকার দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারামারি বা অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযাগ ছিল না। কিভাবে তারা একই পরিবারর ৩ জন এই মামলায় আসামী হল বুঝতে পারছি না। বন্দর থানার ওসি মহিউদ্দীন মাহমুদ এর নিকট উপরোক্ত তিনজন আসামীর নামে থানায় পূর্বের কোন মামলা, জিডি বা অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে এখন কিছু বলা সম্ভব নয়। আসামীদের বিরুদ্ধে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ড শেষে তাদের বক্তব্য খতিয়ে দখা হব। এজাহারভুক্ত ১১ জন আসামী ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জন আসামী রয়েছে। মামলা তদন্তাধীন, তদন্তে কাহাকেও নির্দোষ পাওয়া গেলে তার জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন নির্দোষ ব্যক্তি যাতে সাজা না পায় এবং কোন দোষী ব্যক্তি যাতে রেহাই না পায়, আমরা সেই চেষ্টা করব। এদিকে নিহত সাহেদ প্রকাশ রনির এনায়েত বাজারস্ত বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তার পরিবারের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়, বাড়িতে স্থান সংকুলন না হওয়ায় তারা বিগত ২০/২৫ বছর পর্যন্ত নয়া-বাজার, ১নং পানির কল, ধোপা পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকত। রনি ছিল তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। রনির ফুফু পারভিন আক্তার জানায় রনির পিতা বর্তমানে প্যারালাইসিস এ আক্রান্ত। রনির আয় দিয়ে তাদের সংসার চলত, রনির ২টি মেয়ে আছে। রনির মৃত্যুতে ঐ পরিবার জীবনের শেষ অবলম্বন হারিয়েছে। রনি যাদের হাতে নিহত হয়েছে তা তাদের জানা নেই।তবে তারা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ট বিচার চায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৪ ডিসেম্বর ২০১৮/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর