ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
স্পেনের নিকট থেকে স্বাধীনতা অর্জনে কাতালুনিয়ার চেষ্টার ব্যর্থতা তাইওয়ান বিষয়েও একই বার্তা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা। বুধবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যই এখন সব দেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। দেশে দেশে স্বাধীনতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রে চীন এতদিন ধরে ভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতির উক্তি বলে আসলেও কাতালুনিয়া বিষয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট বলে জানিয়েছে রয়টার্স। বেইজিং বলছে, তারা স্পেনকে যা খ-ন করা হয়েছে করার যে কোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার প্রশ্নে অনুষ্ঠিত এক গণভোটের সূত্র ধরে গত মাসে কাতালুনিয়ার আঞ্চলিক সরকার স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘোষণা দিলেও আন্তর্জাতিক সমর্থন না পাওয়ায় তা বাস্তবতার মুখ দেখেনি। ওই গণভোট এবং স্বাধীনতা ঘোষণার প্রত্যুত্তরে মাদ্রিদ কাতালুনিয়ার স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয় এবং আঞ্চলিক সরকারকে বরখাস্ত করে। কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার বিষয়টি তাইওয়ানের মতো হওয়ায় বিষয়টি বেইজিংয়ের জন্যও ‘সংবেদনশীল’ বলে জানিয়েছে রয়টার্স। স্বায়ত্তশাসিত ও গণতান্ত্রিক তাইওয়ানকে চীনের অন্তর্নিহিত ভাগ বলে দাবি করে আসছে চীন; অন্যদিকে তাইওয়ানের ভেতরে বাড়ছে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার চাপ। বুধবার চীনের তাইওয়ান বিষয়ক নীতি নির্ধারণী দপ্তরের মুখপাত্র মা জিয়াওগুয়াং কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা ব্যর্থ হওয়ায় বেইজিংয়ের সন্তুষ্টির উক্তি জানান। তিনি বলেন, “গণভোটের পরও কাতালুনিয়ার ব্যর্থতায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আঞ্চলিক অখ-তাই এখন পূর্ব-পশ্চিমের সব দেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের বিষয়। এ কারণেই তাইওয়ানের স্বাধীনতা চেষ্টাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।” গত বছর সাই ইং ওয়েন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দ্বীপটির সঙ্গে চীনের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণায় আগ্রহী বলে ধারণা বেইজিংয়ের। আর সাই বলছেন, তাইওয়ানের গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা রক্ষা করেই তিনি চীনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে চান। সম্প্রতি তাইপের সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করে দ্বীপটির আশপাশে সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে চীন। তাইওয়ানের কুটনীতি-সম্পর্কিত মিত্রদের ওপর চাপ বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দ্বীপটির পরিসর সঙ্কুচিত করে আনছে দেশটি। চলতি সপ্তাহে জার্মানিতে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি তাইওয়ানের পরিবেশ মন্ত্রী। চীনের চাপের কারণে বেসরকারি প্রতিনিধি হিসেবেও তাদের মন্ত্রী ওই সম্মেলনে ভাগ নিতে পারেনি বলে নালিশ তাইওয়ানের। অভিযোগের জবাবে জিয়াওগুয়াং বলেছেন, সম্পর্কের দুর্বলতা ও অযোগ্যতার কারণে তাইওয়ান জলবায়ু বৈঠকের মতো এই ধরণের আয়োজনে ভাগ নিতে পারেনি। “তাইওয়ানের ভিন্ন কাউকে দায়ী সাধন উচিত নয়; যেখানে তারা নিজেরাই দোষী। তাদের উচিত এগুলোর ব্যাপারে আরও আন্তরিক হওয়া,” বলেন তিনি।