রংপুরে হিন্দু বাড়িতে হামলা: তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় সেই টিটু রিমান্ডে
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
রংপুরে ফেসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে যার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছিল, সেই টিটু রায়কে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বাবুল ইসলাম গতকাল বুধবার টিটুকে রংপুরের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার চার দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন। রংপুর সদর উপজেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামের খগেন রায়ের ছেলে টিটু একজন গ্রাম্য কবিরাজ বলে তার মায়ের ভাষ্য। ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনের এক মামলায় গত মঙ্গলবার নীলফামারী থেকে টিটুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের লাল চাঁচপুর এলাকার মুদি দোকানী রাজু মিয়া ৬ নভেম্বর টিটির বিরুদ্ধে গঙ্গাচড়া থানায় ওই মামলা করেন। এরপর টিটুকে গ্রেফতারের দাবিতে গত শুক্রবার কয়েক হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে ঠাকুরপাড়া গ্রামে বিভিন্ন হিন্দুবাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন দেয়। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হাবিবুর রহমান নামে ৩০ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যু হয়; আহত হন আরও অন্তত ১১ জন। পুলিশ বলছে, আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে ওই হামলা চালায়। হামলার ঘটনায় শনিবার গঙ্গাচড়া ও কোতোয়ালি থানায় দুই হাজারের বেশি লোককে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। সদরের খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম সিরাজুল ইসলাম সিরাজুল ইসলামসহ ৫৩ জনকে ওই দুই মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গত মঙ্গলবার ঠাকুরপাড়া গ্রামের পোড়া বাড়িঘর পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, শুনেছি টিটু লেখাপড়া জানেন না। তিনি নাকি আট-দশ বছর আগে থেকে বাড়ি ছেড়ে নারায়ণগঞ্জে থাকেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। এটা আসলে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা। এজন্য এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। ফেসবুকে টিটুর পোস্ট সম্পর্কে জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান গত মঙ্গলবার বলেন, ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার সেই কথিত স্ট্যাটাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।