সাবেক সিএমপি কমিশনারের নামে ভুয়া ফেইসবুক আইডি, যুবক গ্রেপ্তার
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল ম-লের নামে ফেইসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতানোয় জড়িত একটি চক্রকে শনাক্ত করেছে গোয়েন্দা পুলিশ; গ্রেপ্তার করা হয়েছে চক্রের এক সদস্যকে।
সাবেক পুলিশ কমিশনারের নামে খোলা ফেইসবুক পেইজ থেকে কখনও মায়ের নামে মসজিদ নির্মাণ, কখনও পুলিশের জব্দ করা মোটর সাইকেল বিক্রি আবার কখনও চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে চক্রটি।
২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন আবদুল জলিল ম-ল। সেখান থেকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হন। বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে আছেন তিনি।
বিভিন্ন সময়ে পুলিশের কাছে আসা প্রতারণার অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ ফেনীর দাগনভূঁঞা এলাকা থেকে গত শনিবার মো. রনি (২০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। এলাকায় রনির একটি মোবাইল ফোনের দোকান আছে।
রনিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছে, এ চক্রটির সাথে তিনজন জড়িত। তাদের মধ্যে আতাউর ও নজরুল নামে দুইজন থাকেন কাতারে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (বন্দর) আবু বকর সিদ্দিকী জানান, আতাউর নামে কাতার প্রবাসী এক যুবক সাবেক সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল ম-লের নামে ভুয়া ফেইসবুক আইডি পরিচালনা করতেন। সে আইডিতে বিভিন্ন মোটর সাইকেলের ছবি দিয়ে তা বিক্রি করা হবে এবং সে টাকায় মায়ের নামে মসজিদ নির্মাণ করা হবে বলে প্রচার চালাতেন। ছবি দেওয়া মোটর সাইকেলগুলো পুলিশের জব্দ করা উল্লেখ করে তা কিনতে টাকা পরিশোধের কয়েকটি বিকাশ নম্বর দিতেন এবং টাকা পরিশোধ করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স গেইট থেকে মোটর সাইকেল সংগ্রহ করার কথা বলতেন। এতে প্রলুব্ধ হয়ে সেসব নম্বরে অনেকে টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হয়েছেন।
গত কয়েক মাসে চক্রটি সাত-আট লাখ টাকা মানুষের কাছে হাতিয়ে নিয়েছে উল্লেখ করে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, প্রতারিতদের কাছ থেকে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিয়ে সেপ্টেম্বরে তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্ত করে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকার চরপাথরঘাটার বাসিন্দা কাতার প্রবাসী আতাউরের সন্ধান পাওয়া যায়। সে এলাকায় গিয়ে দাগনভূঁঞার রনির সন্ধান পাওয়া যায় এবং গত শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এডিসি বক্কর বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে দাবি করা টাকাগুলো পাঠানোর জন্য আতাউর রনির বিকাশ নম্বর দিতেন। সেসব নম্বরে পাঠানো টাকা নজরুল নামে ফেনীর এলাহাবাদের কাতার প্রবাসী অপর এক যুবকের নির্দেশনা মতে রনি বিভিন্ন জনকে পাঠিয়ে দিত এবং আতাউরকে নজরুল কাতারের মুদ্রা পরিশোধ করত।
গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) আসিফ মহিউদ্দিন বলেন, “আতাউর মোবাইল ফোনে জলিল ম-লের মতো করে কথা বলতে পারেন। ভুয়া ফেইসবুক আইডি খুলে সে বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তাকে রিকোয়েস্ট পাঠাতেন এবং কথা বলতেন।
“আইডিতে আবদুল জলিল ম-লের বিভিন্ন ছবির পাশাপাশি ফ্রেন্ড লিস্টে বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তার ছবি দেখে সহজে প্রতারিত হতেন সাধারণ মানুষসহ অনেক পুলিশ সদস্য।”
পুলিশ কর্মকর্তা আসিফ আরও জানান, সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগর পুলিশ সদর দপ্তরে অফিস সহকারী নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেও অনেকের সাথে যোগাযোগ করেন আতাউর।