জঙ্গি হামলা নাইজেরিয়ায়, বহু হতাহতের শঙ্কা
ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় গুদুমবালি শহরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে বলে শঙ্কা প্রত্যক্ষদর্শীদের।
শনিবার শহরটির দুই বাসিন্দা ও স্থানীয় নজরদারি কমিটির এক সদস্য এ শঙ্কা ব্যক্ত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এক দশক ধরে জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের সঙ্গে চলা লড়াইয়ের কারণে গুদুমবালির কয়েক হাজার বাসিন্দা পালিয়ে সরকারি ত্রাণশিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিল। চলতি বছরের জুনে তাদের শহরটিতে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিল নাইজেরীয় সরকার।
ত্রাণশিবির ছেড়ে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় নাইজেরিয়ার অন্যতম সবচেয়ে বিপজ্জনক এই শহরটিতে যারা ফিরে যেতে চায়নি তাদের খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন কর্মকর্তারা।
এসব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত সূত্রগুলো রয়টার্সকে বলেছে, ইসলামি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রগতি হয়েছে, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এমনটি দেখানোর বিষয়ে চাপ বৃদ্ধি পাওয়াতেই এটি ঘটেছে।
এ পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার বোর্নো রাজ্যের গুজামালা অঞ্চলের গুদুমবালিতে জঙ্গিরা হামলা চালায়। সামরিক বাহিনীর পোশাক পরা জঙ্গিরা নাইজেরীয় সৈন্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালায়। জঙ্গিদের গুলির মুখে বেসামরিকদের পাশাপাশি সৈন্যরাও পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য নাইজেরীয় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মোহাম্মদ নামের শহরটির এক বাসিন্দা বলেছেন, “অনেক বেসামরিক প্রাণ হারিয়েছে, তবে কতোজন হতাহত হয়েছে সেই সংখ্যাটি এখনও জানতে পারিনি আমরা। হাজারো লোক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।”
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলায় জঙ্গিদের প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার হুমকি থাকায় মোহাম্মদের নামের প্রথম অংশটিই শুধু ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
নজরদারি কমিটির সদস্য বাবা আলি মুসা জানিয়েছেন, জঙ্গিরা মোটরসাইকেল ও বিমান বিধ্বংসী কামান বসানো পিকআপ ট্রাকে করে শহরে প্রবেশ করে, তাদের সহযোগীরা শহরে রকেট চালিত গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
তিনি বলেন, “বিক্ষিপ্তভাবে গুলিবর্ষণ করতে করতে তারা শহরে প্রবেশ করে। তারা বলতে থাকে, যদি তোমার মনে হয় তুমি নির্দোষ তাহলে শহর ছেড়ে চলে যাও, তুমি আমাদের লক্ষ্য নও, অথবা তুমি যদি আমাদের সঙ্গে থাকতে চাও, কোনো ব্যাপার না, আমাদের সঙ্গে থাকতে পারো।”
নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে দুটি ইসলামপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী সশস্ত্র বিদ্রোহে সক্রিয় আছে। এর একটি বোকো হারাম, অপরটি বোকো হারাম ভেঙে তৈরি হওয়া ইসলামিক স্টেট ইন ওয়েস্ট আফ্রিকা (আইএসডব্লিউএ)। বর্তমানে নতুন জঙ্গিগোষ্ঠীটিই বেশি শক্তিশালী বলে ধারণা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের।
গুদুমবালির অবস্থান যে এলাকায় সেখানে আইএসডব্লিউএ-র প্রভাবই বেশি।