বউ বাপের বাড়ি, ফাঁসির সেলফি স্বামীর
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
প্রেমিকাকেই বিয়ে করে স্ত্রী করে ঘরে নিয়ে এসেছেন। সেই ঘরে আট বছরের ব্যবধানে এসেছে তিন সন্তান। সামান্য ঝগড়ায় বউ চলে গিয়েছে বাপের বাড়ি। এ অভিমানে স্বামী দিয়েছেন গলায় দড়ি। মৃত্যুর পূর্বে সেই ঘটনার সেলপি তুলেছেন স্ত্রীকে উপহার দিতে।
এমন ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজার জেলায়। জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ফাঁসির সেলফি ওয়ালা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েই আত্মহত্যা করেছেন রেজাউল করিম রনি (৩২) নামের এক যুবক। গত বুধবার(১ নভেম্বর) ভোরে জেলা শহরের পাহাড়তলীতে নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পারিবারিক সূত্র দাবি করেছে।
আত্মহত্যার আগে তার দেয়া স্ট্যাটাস ও সেলফিটি এলাকায় এখন ভাইরাল। এলাকাবাসী জানান, ওই এলাকার আলী আহমদের ছেলে রেজাউল করিম রনি কলেজে পড়াকালীন প্রতিবেশী পশ্চিম কহিনুরের প্রেমে পড়েন। পরে সামাজিকভাবে বিয়েও হয় তাদের। সংসার জীবনে রনি-কহিনূর দম্পতির ৮ বছর বয়সী এমটি মেয়ে, ৬ বছরের ও ৬ মাস বয়সী ৩টি সন্তান রয়েছে।
প্রেমের বিয়ে হলেও কিছুদিন ধরে পারিবারিক কলহে জড়িয়ে পড়েন তারা। ফলে ঝগড়া লেগেই থাকত স্বামী-স্ত্রীর মাঝে। মঙ্গলবারও ঝগড়া হয় তাদের। এরপর সন্তানদের নিয়ে একই এলাকায় বাপের বাড়ি চলে যায় স্ত্রী কহিনুর। ভালবাসার মানুষটি তাকে না বুঝে বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার ক্ষোভ ও অভিমানে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন রনি।
এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে। এসময় গলায় নীল রংয়ের একটি রশি লাগানো সেলফিও আপলোড করেন তিনি। সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর যুগল একটি ছবি এবং অভিমানী কিছু কথা লেখা স্ট্যাটাস দেন রনি। ধারণা করা হচ্ছে এর পরই তিনি ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
লেখাটি এলোমেলো ও বানানগুলো ভুলে ভরা। পাঠকের জন্য ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘আমি চলে যাব জীবনের প্রথম প্রেম শেষ পর্যন্ত একটা মরেন মানুষের মাঝে? মাঝে মাঝে মনে হতো না ? আমি একা নই, কিন্তু কহিনুর। আমি চলে যাচ্ছি মানুষ হিসাবে মরেছি আমি, বা। মনে পড়ে গেলো বৃষ্টি বন্ধ ব্যর্থ আজ। চলে গেলাম। আমাদের ছোট ছাত্র জীবনে প্রথম প্রেম শেষ করে মৃত্যুর কাছে? এসে সাক্ষ্য দিয়ে যেতে হবে না। আমি ভালোবাসি। আমি জানি না তবে আমি নিশ্চিত। মেয়ে তুমি কি আমার? সাথে দেখা হবে। আমি ভালোবাসি মেঘ আর দেখা হবে না? বলতে পারি।’
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রনজিত বড়ুয়া জানান, খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে এসআই জামাল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করেন। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি রনির বড় ভাই আনিসের হাতে হস্তান্তর করা হয়।
এসআই জামাল হোসেন জানান, স্ত্রী বলেছেন মঙ্গলবার কথা কাটাকাটির এক পর্যায় তাকে মারপিট করেন রনি। এরপরই তিনি সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। তাদের ভেতর পারিবারিক কলহ বেশ কিছু দিন আগে থেকেই হয়ে আসছিল।