কুবি উপাচার্যের দপ্তর ২০ দিন তালাবদ্ধ
কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) উপাচার্যকে আবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার দপ্তরে তালা দিয়ে কোনো কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। টানা ২০ দিন ধরে আন্দোলনে অনড় রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একাংশ। জানা যায়, ১৬ অক্টোবর সোমবার বিকালে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষকদের একাংশ। ১৭তম দিনের মতো গতকালও কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি। ২০দিন যাবৎ নিজ বাস ভবনে অফিসিয়াল কাজ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়ম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভয়ারণ্য সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জানা যায়, গত ১৬‘অক্টোবর থেকে টানা ২ সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন চলছে। শিক্ষক সমিতি নিজেদের ঘোষিত ১৪ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে উপাচার্য কার্যালয় তালাবদ্ধ করে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এ অবস্থায় উপাচার্য তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না। ফলে প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম নিজের বাস ভবনে করছেন। এছাড়াও সামনে ১৭ এবং ১৮ নভেম্বর পূর্ব নির্ধারিত ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষাও যথাসময়ে হবে কিনা তা নিয়েও এখন অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। চলমান আন্দোলন ভর্তি পরীক্ষা প্রভাব ফেলবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, আমরা কোনোভাবেই শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করতে চাই না।
জানা যায়, উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে বাণিজ্য, আত্মীয়করণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু, আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম বর্হিভূতভাবে প্রতি মাসে নিয়মিত ১৫ হাজার ২৯৮ টাকা ডেপুটেশন ভাতা, সান্ধ্যকালীন এমবিএ (ইএমবিএ) প্রোগ্রাম থেকে অর্ডিন্যান্স বহির্ভুতভাবে ২৫ হাজার টাকা, গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত জ্বালানির বাইরে অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা, ভারপ্রাপ্ত ডীন হিসেবে বিধি বর্হিভূত ভাবে দায়িত্ব ভাতা গ্রহনের বিচারসহ মোট ১৪ দফা দাবিতে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে নেমেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা। আন্দোলন প্রসঙ্গে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, উপাচার্য শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করবেন বলেও গত ২০ দিন ধরে কালক্ষেপণ করেছেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দুর্নীতির রাম-রাজত্ব কায়েম করেছেন। উপাচার্যকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি উপাচার্যের পদত্যাগ ও বিচার দাবি করেন। এ প্রসঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আলী আশরাফ তার বাস ভবনে এ প্রতিনিধিকে বলেন, তাঁদের এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাঁদের কাছে যদি কোনো প্রমাণ থেকে থাকে তাহলে, তাঁরা তা ইউজিসি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পেশ করুন। এ সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে তাঁরা আমাকে নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট করছে। যে কোনো ভিসির মেয়াদের শেষ সময়ে তাদের এই রকম আচরণ এখন ট্র্যাডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।