September 14, 2024, 4:48 am

সংবাদ শিরোনাম
যৌথবাহিনীর অভিযানে ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার-৫, মৃত্যু-২ বোরহানউদ্দিন কুঞ্জেরহাট বাজারে, অনুমতি বিহীন ওষুধের গুদাম সিলগালা সাধক কবি কাজী হেয়াত মামুদ এর কবর জিয়ারত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল শহীদদের স্মরণে ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী চিলমারীতে দূর্নীতির অভিযোগ এনে ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি পল্লী বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি খেলায়, সাধারণ মানুষ নাজেহাল হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জেল পলাতক আসামী মোঃ রুবেল’কে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব নাটোরে সাবেক কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার পার্বতীপুরে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় অতিষ্ঠ জনজীবন আর্থিক সাহায্যের আবেদন বিরল রােগ থাইমাস গ্লান্ডে আক্রান্ত রিয়াদ বাঁচতে চায়

মা-ছেলে খুনের পর রাজধানীতে বাবা-মেয়ে খুন

মা-ছেলে খুনের পর রাজধানীতে বাবা-মেয়ে খুন

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

রাজধানীর কাকরাইলে মা-ছেলে খুনের পরদিনই বাড্ডায় একটি বাসা থেকে এক গাড়ি চালক ও তার নয় বছর বয়সী মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে বাড্ডার হোসেন মার্কেটের পেছনে ময়নার বাগ এলাকার ওই বাড়ি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠান তারা। নিহত জামিল শেখের বয়স আনুমানিক ৩৮ বছর। গুলশানে এক ব্যক্তির গাড়ি চালাতেন তিনি। আর তার মেয়ে নুসরাত বাড্ডা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। চার তলা ওই বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন জামিল। পুলিশ গিয়ে বাসার ভেতর খাটের ওপর জামিল ও নুসরাতের লাশ পায়। জামিলের স্ত্রী আর্জিনা তখন তাদের পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে সিঁড়িতে বসে ছিলেন। ওসি বলেন, জামিল শেখের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর তার মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। আর্জিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, সে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। একটু সুস্থ মনে হলে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। ওই বাসায় এক দম্পতি সাবলেট থাকত। সকালে তাদেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। জামিলের দুঃসম্পর্কের ভাতিজা মনির জানান, তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের বনগ্রামে। জামিল গত ১৮ বছর ধরে বাড্ডা এলাকায় থাকেন। ওই বাসার তিন তলায় তারা ওঠেন মাস দুই আগে। কিছুদিন আগে চাচার সঙ্গে ঝগড়া হলে চাচী ছেলেকে নিয়ে সাভারে ওঁর মায়ের কাছে চলে যান। তখন চাচা আর নুসরাত এই বাসাতেই ছিলেন। সপ্তাহখানেক আগে চাচী আবার বাসায় ফেরেন। জামিল গাড়ি চালানোর পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে সুদে টাকা ধার দিতেন বলেও জানান মনির। তবে এ নিয়ে কারও সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি। ওই এলাকার বাসিন্দা মো. তুহিন জানান, তিনি একটি ওষুধ কোম্পানির গাড়ি চালান। তার বাড়িও গোপালগঞ্জে। আর পেশাগত কারণে জামিলের সঙ্গে আগে থেকেই তার পরিচয় ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে অফিসে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে তিনি জামিলের বাসার সামনে জটলা দেখেন এবং লাশ পাওয়ার খবর পান। আমি যখন বাসায় গেলাম, জামিলের শরীর কাঁথা দিয়ে ঢাকা ছিল। মাথায় জখম আর রক্ত। মনে হয় ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। পাশেই ছিল বাচ্চার লাশ। ওই সময় জামিলের স্ত্রী আর্জিনা সিঁড়িতে বসে ছিলেন জানিয়ে তুহিন বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, ভাবী, কীভাবে ঘটল। উনি বললেন, রাত ১০টা ১১টার দিকে কয়েকজন নাকি এসে খুন করে গেছে। কিন্তু আমি যখন গেছি তখন বাজে পৌনে ৬টা। রক্ত তখনও অনেকটা তাজা। মনে হল ঘণ্টাখানেক আগের। বাড্ডায় বাবা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের ১২ ঘণ্টারও কম সময় আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় কাকরাইলের এক বাসায় মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ওই বাড়ির গৃহকর্তা এবং তার তৃতীয় স্ত্রীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। এদিকে, বাড্ডায় বাবা-মেয়ে খুনের ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে পরিকল্পিত হত্যাকা- বলে ধারণা করছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাড্ডার হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) কৃপদ রায়। এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এই হত্যাকা-ের পেছনে পারিবারিক কোনো দ্বন্দ্ব আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এজন্য নিহত জামিলের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। স্ত্রীকে সন্দেহ করা হচ্ছে কেন? জানতে চাইলে কৃপদ রায় বলেন, কারণ জামিলের স্ত্রীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ঘরের ভেতর থেকে কেউ খুনিকে সহযোগিতা করেছে। তা না হলে এভাবে হত্যাকা- ঘটানো সম্ভব হতো না। এসব নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁকে আটক করা হয়েছে। নিহত জামিল ও তাঁর মেয়ে নুসরাতের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, তাঁরা মাসখানেক আগে বাসাটি ভাড়া নেন। কৃষ্ণপদ রায় জানান, জামিল যে ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন, সেখানে সাবলেট থাকা পরিবারটি ঘটনার পরপরই বাসা থেকে বের হয়ে চলে গেছে। এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজও পাওয়া যাচ্ছে না। ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে জামিলকে হত্যা এবং তাঁর শিশুসন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান কৃপদ রায়। তিনি বলেন, হত্যা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরে জানা যাবে। কাকরাইলের মা-ছেলে হত্যা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনা দুটি সম্পূর্ণ আলাদা। একটির সঙ্গে আরেকটির কোনো যোগসূত্র নেই। তবে দুই ঘটনাতেই পারিবারিক কোনো টানাপড়েন আছে বলে মনে হচ্ছে।

 

 

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর