October 14, 2024, 9:38 pm

সংবাদ শিরোনাম
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরানের রাজউকে শক্তিশালী সিন্ডিকেট তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিককে হুমকি বারুদের গন্ধ বিশ্ববাসী সহ্য করতে পারছেন না (পর্ব ১৩) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল( বিএনপি) ভুল পথে কেন (পর্ব- ১২) মাতৃভূমি সুরক্ষার জন্য আবারো রক্ত দিতে হবে কেন? পর্ব -১১ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তিনজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ নবাবগঞ্জে বজ্রপাতে দুই বিয়াইয়ের মৃত্যু শাহবাগে ছাত্র জমিয়তের সীরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে বৈষম্যমুক্ত আদর্শ দেশ গড়ার চাবিকাঠি কুড়িগ্রামে হত্যায় মামলায় সাংবাদিকদের আসামী! কক্সবাজারে অভিযানে ৬ দূর্বৃত্ত অস্ত্র সহ আটক কুড়িগ্রাম পৌরসভার সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদ

ফেসবুক থেকে মুখ ফিরিয়েছেন রসরাজ

ফেসবুক থেকে মুখ ফিরিয়েছেন রসরাজ

এক বছর আগে এই দিনে নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বালিঙ্গা বিল থেকে দুপুরে বাড়ি ফেরেন রসরাজ দাস। ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্টের ঘটনায় স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে এই বিলেই ভাত খেতে বসে এক বছর আগের স্মৃতি তাঁর হঠাৎ মনে পড়ল।

আগে রসরাজ রাতে বিলে গিয়ে মাছ ধরতেন। চার-পাঁচ দিন থাকতেন। এখন রাতে তাঁর ভয় লাগে। যদি কেউ মারধর করে। তাই রসরাজ দিনে মাছ ধরেন। আর রাতে বাড়ি থেকে বের হন না।

আগে টাচ স্ক্রিন মুঠোফোন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করতেন রসরাজ। এখন ১ হাজার ২০০ টাকার একটি মুঠোফোন ব্যবহার করেন। ফেসবুক আর ব্যবহার করেন না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর থেকে নাসিরনগর উপজেলার সদরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। উপজেলা সদর থেকে হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। সেখানেই বালিঙ্গা বিল। নৌকায় বসে কথা হচ্ছিল রসরাজের সঙ্গে। রসরাজ জানান, ২ মাস ১৯ দিন কারাভোগের পর গত ১৬ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান তিনি। পুলিশ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি জামিনে আছেন।

প্রায় এক বছর আগে রসরাজ দাস নামের ফেসবুক আইডি থেকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্ট করা হয়। ঘটনার এক বছর পার হলেও তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে কে বা কারা, কার ফেসবুক আইডি থেকে কিংবা কোথা থেকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে, এসব বিষয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

ঢাকা ফরেনসিক বিভাগ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানায়, রসরাজের মুঠোফোন বা মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে এই পোস্টটি দেওয়া হয়নি। এমনকি রসরাজের ফেসবুকে এই পোস্টের কোনো অস্তিত্ব নেই। পিবিআই এই প্রতিবেদন জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দিয়েছে।

ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্টের অজুহাতে গত বছরের ৩০ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলা সদরের ১৫টি মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে অবশ্য জানা যায়, পাশের একটি ইউনিয়ন থেকে ট্রাক ও ট্রাক্টরে ভরে হামলার জন্য লোক পাঠিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা। গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পর চলতি বছর সেই নেতা হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান ওরফে আঁখিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। আতিকুর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। আবার নাসিরনগরের সাংসদ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক অবশ্য সরাসরি উবায়দুল মোকতাদিরকেই ওই ঘটনার জন্য দায়ী করেন। আবার উবায়দুল মোকতাদিরও বরাবরই এ ঘটনার দায় অস্বীকার করে আসছেন।

হামলার ওই ঘটনায় ২৫১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা তিন হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে নাসিরনগর থানায় আটটি মামলা হয়। পুলিশ এ পর্যন্ত ২২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

সূত্র : প্রথম ‍আলো

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর