বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজন ও শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের মারপিটের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার তিন সদস্যবিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী। বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে জয়পুরহাট থেকে আসা রোগী রাহেলা বেওয়ার (৭৫) স্বজনরা তাদেরকে মারপিটের অভিযোগ তোলেন শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ করে। ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান হলেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. কামরুল আহসান এবং অপর দুই সদস্য মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. মমতাজুল ইসলাম ও ওয়ার্ড মাস্টার তবিবুর রহমান। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে তাদের, বলেন নির্মলেন্দু। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক সমিতির সভাপতি আসিফ বলেন, রোগীর স্বজনরা যখন মহিলা ইন্টার্ন চিকিৎসককে অশ্লীল ভাষায় কথা বলে এবং অন্য চিকিৎসকদের একটি রুমে আটকে রেখে হামলা করে, তখন হাসপাতালে অবস্থানরত অন্য রোগীর অ্যাটেন্ডেন্টরা তাদের মারপিট করে। রোগীর স্বজন আহত রুম্মান হোসেন শান্ত বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বিনা অপরাধে তাদের রুমে আটকে রেখে মারপিট করেছেন। মঙ্গলবার জয়পুরহাট সদরের পুরানাপৈল গ্রামের মাহেলা বেওয়াকে (৭৫) জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। মাহেলার নাতি রুম্মান হোসেন শান্তর দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে তার দাদির শরীরে রক্ত দেওয়া হচ্ছিল। রক্ত দেওয়া শেষ হলেও লাইন খুলে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি এক নারী ডাক্তারকে বলতে গিয়ে আপু বলে সম্বোধন করেছিলেন তিনি। এ কারণে তিনি ও অপর এক চিকিৎসক আমার শার্টের কলার ধরে মারধর করেন। একটু পরই একদল ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী ছুটে এসে আমাকে ও আমার বাবাকে মারধর করেন। তিনি বলেন, গত শুক্রবার জোর করে তার দাদি মাহেলা বেওয়াসহ তাদের জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জয়পুরহাটে নেওয়ার পথে তার দাদির মৃত্যু হয়। এদিকে হাসপাতালের উপ-পরিচালক নির্মলেন্দু বলেন, রোগীর দুই স্বজন নারী চিকিৎসককে অশালীন ভাষায় কথা বলায় বাকবিত-া হয়। একপর্যায়ে তাদের হামলায় তিন ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত হন। রোগীর অবস্থা আশাংকজনক হওয়ায় স্বজনরা স্বেচ্ছায় রিলিজ নিয়েছেন। জোর করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।