নির্বিঘ্ন ঈদ কেনাটাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মার্কেটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা বলয় গড়ার উদ্যোগ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
আসন্ন ঈদে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্ন কেনাকাটায় মার্কেটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর সব মার্কেট ও শপিংমলকেন্দ্রিক নিরাপত্তার পাশাপাশি মার্কেটকেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানো হয়েছে। নগরবাসীর সহযোগিতায় ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় হিসেবে মার্কেট ও শপিংমলের প্রতিটি অংশ সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর ক্রেতাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। ঈদ কেনাকাটায় বড় অঙ্কের টাকা আনা-নেয়ার জন্যও রয়েছে পুলিশের ‘মানি এস্কর্ট’ ব্যবস্থা। মার্কেটের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক পাহারায় নারী পুলিশের বিশেষ দল থাকবে। তাছাড়া মার্কেটে ইভটিজিং প্রতিরোধে কাজ করছে বিশেষ ইউনিট। পাশাপাশি মার্কেটের সামনে যানজট এড়াতেও ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে কমিউনিটি পুলিশ। পুলিশ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাতে ঈদ কেনাকাটার পর সাধারণ মানুষ নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে পুলিশের একাধিক দল টহল রয়েছে। পাশাপাশি শপিংমলের অধিক জনসমাগমস্থলে পকেটমার, ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান-মলম পার্টি প্রতিরোধে ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে সাদা পোশাকের পুলিশ। পুলিশ সদর দফতর দেশের সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ এবং সকল মার্কেট মালিকদের তাদের নিজ নিজ মার্কেটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। আর মার্কেটগুলোকে কেন্দ্র করে পুলিশ, র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাতে মানুষ নির্বিঘেœ ঈদের কেনাকাটা করতে পারে।
সূত্র জানায়, ঈদ ঘিওে দেশের ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্র করেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যাতে মানুষ নির্বিঘ্ন ও নিরাপদে টাকা-পয়সা উত্তোলন করতে পারে। তাছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকের লেনদেন কিভাবে নিরাপদ করা যায় ওই ব্যাপারে পুলিশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জনগণকে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- শপিংমলের সামনের রাস্তায় কোন অবস্থায় অবৈধ গাড়ি পার্কিং করা যাবে না, রিকশামুক্ত রাস্তায় রিকশা প্রবেশ করতে দেয়া হবে না, ইন্টারসেকশনের মুখে ও শপিং সেন্টারের সামনে অযথা রিকশা ভিড় করতে দেয়া হবে না।
পাশাপাশি বড় অঙ্কের অর্থ একা বহন না করতে এবং সঙ্গে অতিরিক্ত একাধিক বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে রাখতে বলা হয়েছে। অর্থ বহন সংক্রান্তে কোনো তথ্য আগেই অন্যকে জানানো থেকে বিরত থাকা, পায়ে হেঁটে বা রিকশায় অর্থ বহনের পরিবর্তে মোটরসাইকেল কিংবা গাড়িতে অর্থ বহন করা, সকল টাকা একসঙ্গে না রেখে বিভিন্ন জায়গায় যেমন: পকেটে, ব্যাগে, সঙ্গীয় ব্যক্তির কাছে ভাগ করে রাখারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পুলিশের সহকারী উপ-মহাপরিদর্শক (এআইজি) সহেলী ফেরদৌস জানান, পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ডিএমপির পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ছিনতাই, পকেট কাটাসহ অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে সিসিটিভি, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মতো যন্ত্রপাতি স্থাপন করে শপিংমলে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র এএসপি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া জানান, সাধারণত রমজান মাসে ফজরের নামাজ ও ইফতারির আগে ও পরে অপরাধ সংঘটিত হয় বেশি। ওই সময়ে র্যাবের নজরদারি বাড়ানো হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী র্যাবের টহল, তল্লাশি ও অস্থায়ী চেকপোস্টও বসাবে। চাঁদাবাজি-ছিনতাই রোধে র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট সার্বক্ষণিক কাজ করছে। রাজধানীর মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোর নিরাপত্তায় ২ হাজার র্যাব সদস্য স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে টহলে থাকবে।