প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরও রমজানে খোলা রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নির্দেশনা অনুযায়ী পহেলা রমজান থেকেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও তা মানেনি চাঁদপুরের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই। বিশেষ ক্লাস, ভালো রেজাল্ট, গভর্নিং বডির চাপসহ নানা অজুহাতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে ক্লাস ।কোন কোন প্রতিষ্ঠানে ছুটি’র কথা বলা হলেও বিশেষ ক্লাসের নামে চলছে রমরমা বাণিজ্যও। এমনকি একেকজন শিক্ষকের নামে একেকটি ক্লাসরুম বরাদ্দ দিয়ে বিশেষ ক্লাসের নামে চলছে বাড়তি অর্থ আদায় করছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্টার গার্ডেন স্কুলগুলোতে ছুটির নির্দেশনা থাকলেও কোচিংয়ের নামে বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরো ক্লাস করানো হচ্ছে। স্কুল-কলেজ খোলা থাকায় শিক্ষার্থীরা উৎসাহী হয়ে রমজানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রোজা পালনে একদিকে যেমন ভোগান্তিতে পড়ছেন অন্যদিকে অনেকটাই অপ্রয়োজনীয় ক্লাসে দুর্বল এবং অসুস্থ পড়ছে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ। এছাড়া ক্লাস শেষে ঘরের কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনা নেয়া করা অভিভাবকরাও। অভিভাবকেরা অভিযোগ করেছেন, সরকারী আইন অমান্য করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হচ্ছে। এটি অমানবিক আচরণ বলেও মন্তব্য করেছেন অনেক অভিভাবক। এসব স্কুলে ক্লাসকে অপ্রয়োজনীয় বলেও অভিযোগ তাদের।
২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কষ্ট এবং রমজানে যানজটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোজার প্রথম দিন থেকেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি দেয়ার পক্ষে মত দেন। ওই সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ হরতাল-অবরোধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রথম ১০ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার প্রস্তাব করলেও প্রধানমন্ত্রী তা নাকচ করে দেন। প্রধানমন্ত্রীর মতামত দেয়ার পরপরই ওই বছর রোজার প্রথম দিন থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ বছর রমজানের শুরু থেকেই ওই নির্দেশনা অমান্য করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী রমজানের প্রথম দিন থেকেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান পহেলা রজমান থেকে বন্ধ হলেও এখনো অনেক প্রতিষ্ঠানই শিক্ষা কার্যক্রম (ক্লাস ও পরীক্ষা) চালিয়ে যাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যুক্তি দেয়া হয়েছে বিশেষ ক্লাস, পরীক্ষা, ভালো রেজাল্টের আশা, গভর্নিং বডি ও অভিভাবকদের চাপেই ক্লাস নেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই খোলা রয়েছে।স্কুল খোলার কারন জানতে চাইলে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের কথা চিন্তা করেই প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে। রমজানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা উচিত মনে করে তিনি বলেন, আমরা চাইলেও গভর্নিং বডির চাপের কারণে স্কুল বন্ধ রাখতে পারছি না। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে খোলা রাখতে। এছাড়া অভিভাবকদের চাপও রয়েছে। তিনি আরো বলেন, স্কুলের কিছু কিছু শাখায় বিশেষ ক্লাস নেয়া
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথম রোজা থেকেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি হয়ে গেছে। এরপরও যদি নির্দেশনা অমান্য করে কোন প্রতিষ্ঠান ক্লাস-পরীক্ষা গ্রহণ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কোন প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্য করার সুযোগ নেই। এধরণের অভিযোগ থাকলে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানোরও অনুরোধ জানিয়ে ঘোষনা দিয়েছিলেন।