স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণের ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত কামরাঙ্গীচর। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই কামরাঙ্গীচরে অসংখ্য বহুতল ভবন সিটি কর্পোরেশন ও রাজউক এর কোন নিয়মকানুন তোয়াক্কা না করে নকশা অনুমোদন ছাড়ায় স্ব গৌরবে নির্মিত হয়েছে। পরবর্তীতে সেগুলো বহুতল ভবনের হাতেগোনা কিছু বাড়িতে শুধুমাত্র দুই চুলায় গ্যাস ব্যবহার করার সরকারী অনুমোদন নিয়ে পরবর্তীতে প্রতিটি তলার সকল ফ্ল্যাটে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দুই চুলার গ্যাস সংযোগ লাগানো হয়।
বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় কয়েকজন দলীয় নেতা ও গ্যাস অফিসের কিছু ঠিকাদারের সাথে মানথি করে অর্থাৎ মাসিক চাঁদা সিস্টেম চালু করে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ ও হাজার হাজার ফ্লাটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করার অনুমতি পায় বলে জানান এলাকাবাসী।
অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ ও অসংখ্য ফ্ল্যাটে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করার অনুমতি বা সহায়তা করার জন্য সিটি কর্পোরেশন ও গ্যাস অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও ঠিকাদার এবং এই কামরাঙ্গীচরের কিছু আওয়ামী লীগের নেতা ও মাস্তানদের কাছে প্রতি মাসে গুনতে হত লক্ষ লক্ষ টাকা।
কামরাঙ্গীচরে যেকোন আইন বহির্ভূত কাজ করা যেন একটা শিল্পে পরিনত হয়েছে। যারা মানে না কোন সরকারী দপ্তর, তোয়াক্কা করে না কোন সরকারী নিয়ম-কানুন বা আদেশ।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় হর্তাকর্তাদের জায়গায় কিছু অন্য দলের হর্তাকর্তা ও আমলাদের সহায়তায় এসব অবৈধ সকল কার্যক্রম বর্তমানে নতুন উদ্যোমে শুরু হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এই কামরাঙ্গীচরে গড়ে উঠেছে কয়েকশো অবৈধ মিল, কারখানা। যে মিল কারখানা গড়ার জন্য মানা হয়নাই সরকারী কোন নিয়ম কানুন। স্থানীয় জনসাধারণ বলেন, “যত্রতত্র ছোট বড় অনেক মিল, কারখানা গড়ে উঠেছে। যার একটিতেও সরকারী কোন অফিসের নিয়ম কানুন মানা হয় নাই।
এই কারখানাগুলোর অনেকটাতে গ্যাস, আগুন, এসিডের মত বিভিন্ন রকমের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, যেগুলোর একটু অসাবধানতার ফলে জীবন যেতে পারে বহু মানুষের। এমন এমন চিপাগলি গলিগুলোতে এই রকম ছোট বড় মিল, কারখানা গড়ে উঠেছে যেগুলোতে কোনভাবে আগুন ধরলে সেই আগুন পুরো এলাকায় ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে শতভাগ। কারণ এগুলো মিল বা কারখানায় আগুন লাগলে নেভানোর জন্য ফায়ারসার্ভিসের কোন গাড়ি সেগুলো মিল বা কারখানা পর্যন্ত কোনভাবেই পৌঁছানো সম্ভব নয়।”
পরিবেশ দূষণ, শব্দ দূষণ, পানি দূষণ করে জনজীবনের দুর্ভোগ সেই সাথে চাঁদাবাজি, মাস্তানী, সরকারী কোন আইন কানুনের তোয়াক্কা না করা, এমন কোন আইন বহির্ভূত কাজ নাই যে কামরাঙ্গীচরে হয় না। ঢাকার মধ্যে এ যেন এক অপরিকল্পিত নগর। সকল সরকারী সিস্টেম কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ঢাকার মধ্যে যেন একটা অনিয়মের দূর্গ গড়ে উঠেছে এই কামরাঙ্গীচর।
এলাকাবাসীর দাবি, শীগ্রই যদি সরকারী সকল দপ্তর হস্তক্ষেপ না করে তাহলে পরিবেশগতভাবে এই কামরাঙ্গীচরে জনজীবন পরিচালনা করা হুমকির মুখে পরবে।