নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
পর্যটন নগর কক্সবাজারকে যানজটমুক্ত ও পর্যটকদের যাতায়াতের সুব্যবস্থা এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ নিরাপদ যানবাহনের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সাথে মত বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (৮ মে) কক্সবাজার ওশান প্যারাডাইজ এ নাম্বার ওয়ান ইলেকট্রনিক্স আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন ।
উক্ত মত বিনিময় সভায় তিনি ২০২৩ সালে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কক্স ক্যাব উদ্যোগের ব্যাপারে তুলে ধরেন। কস্ক্যাবের মাধ্যমে তিনি শহরের প্রচলিত থ্রি হুইলার গুলোর চালকদের ভেরিফিকেশন কার্ডের ব্যবস্থা করেছিলেন।
যার মাধ্যমে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও চালকদের নিয়ম শৃঙ্খলার জন্য বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে।
তবে বর্তমানে প্রচলিত টমটমের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনের সংখ্যা অধিক হওয়ায় তিনি শহরের যানজট ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছুটা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
ই টমটম গাড়িগুলো দেখে পর্যটকদের জন্য একটি নিরাপদ ও টেকসই পরিবহন হিসেবে তিনি মনে করেন ভালো বিকল্প হতে পারে। যা পর্যটক নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির সাথে সাথে আধুনিক পরিবহন হিসেবে পর্যটন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে বলে মনে করেন।
তিনি আরো বলেন, পর্যটন নগরীর বাস চলাচল নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা করার লক্ষে উনাদের একটি কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
পর্যটকদের কে আধুনিক পরিবহন দেওয়ার ক্ষেত্রে ই টমটম রেন্টাল সেবা একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে।
ই টমটম এর প্রতিষ্ঠাতা এন্ড সিইও জয়নাল আবেদীন জানান পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই ভালো মানের হোটেল সুবিধা পেলেও কক্সবাজার ঘুরে দেখার জন্য কোন ভালো ব্যবস্থা ছিল না। এবং অনেকেই এসে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে।
তাই তিনি চান একটি নিরাপদ ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা যা পর্যটকদের ন্যায্য ভাড়ার ভিত্তিতে আরামদায়ক ভ্রমণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তেমনিভাবে মালিক ও চালকদের নিরাপত্তা ও বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দিবে। পর্যটক ও স্থানীয়রা চাইলে সহজে অ্যাপস / ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে বুকিং দিতে পারেন। ই টমটমের চালকগণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ।
*সেইফ এন্ড সাসটেইনেবল* স্লোগান কেন্দ্র করে ই টমটম ঝুঁকিপূর্ণ ইলেকট্রিক গাড়িগুলো পরিবর্তন ও এসিড ব্যাটারির পরিবর্তে লিথিয়াম আয়ন ফসফেড ব্যাটারি প্রচলন সহজলভ্য করতে ইভি টার্মিনাল (ওয়ান স্টপ সলিউশন) শুরু করেছে।
বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা পাওয়া গেলে ক্রমান্বয়ে পুরনো ঝুকি পূর্ণ ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা , মিশুক ও টমটম গুলোকে পরিবেশবান্ধব লিথিয়াম আয়ন ফসফেট ব্যাটারির মাধ্যমে চালিত বিকল্প হবে ই টমটম। নিরাপদ ও টেকসই গাড়িগুলো পর্যটির নগরীর সৌন্দর্য ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে।
মত বিনিময় সভায় ট্রেড ইন্টার কন্টিনেন্টাল এর ইলেকট্রিক গাড়ির হেড অফ বিজনেস নাঈম হাসান জানান চায়না থেকে নাম্বার ওয়ান ইলেকট্রিক থ্রি হুইলার ব্র্যান্ড জিনপেং গাড়ি বাংলাদেশে আমদানি করছেন এবং অদূর ভবিষ্যতে বিক্রয় বৃদ্ধি হলে বাংলাদেশে উৎপাদন করবেন।
স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে গাড়িগুলো বিক্রির জন্য কিস্তি সুবিধা দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।
তিনি আরো বলেন ইতিমধ্যে বিআরটিএ তে তাদের গাড়ি আবেদন করা হয়েছে এবং বুয়েটে টেস্ট চলছে তার মেকার সার্টিফিকেট এই মাসের মধ্যে পাবেন বলে আশা করেছেন।
পরবর্তীতে বৈধ গাড়ি হিসেবে জিনপেং ও ই টমটম হতে পারে বাংলাদেশের ইলেকট্রিক পরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তনের অন্যতম অংশীদার।
বর্তমানে গাড়িগুলোর মান যেহেতু ভালো তুলনামূলক দাম বেশি এই সমস্যার সমাধানের জন্য টাইগার নিউ এনার্জির ব্যাটারি সোয়াপিং একটি সহায়ক হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চিপ অপারেটিং অফিসার মিস ইউএ জু। তিনি জানান দৈনিক ভাড়ার ভিত্তিতে পরিবেশবান্ধব লিথিয়াম ব্যাটারি সোয়াপিং পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাটারি কেনার ঝামেলা নেই।
তাই ক্রেতারা চাইলে ভালো মানের গাড়ি কিনতে পারবে সেই সাথে দৈনিক বাড়ার ভিত্তিতে তাদের সেবা গ্রহণ করতে পারবে।
বর্তমানে প্রচলিত থ্রি হুইলার গুলো এসিড ব্যাটারি ব্যবহার করার কারণে মারাত্মকভাবে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই সাথে চালক ও মালিক এবং যাত্রীদের সীসা দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অত্যাধিক। লিথিয়াম ব্যাটারি এর দাম অনেক তাই তারা এসিড ব্যাটারি ছাড়া বিকল্প নিতে পারছে না।
সারা বিশ্বে ইলেকট্রিক গাড়ির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা রাখছে।
সবার সদিচ্ছার থাকলে বাংলাদেশেও এগিয়ে যাবে।
এ যাত্রায় ইলেকট্রিক টমটম অবদান রাখতে চায় ও সারা বাংলাদেশে তাদের ইভি টার্মিনাল ওয়ান স্টপ সলিউশন স্থাপন করতে চায়।