ফয়সাল মাহবুব সিলেট ঃ
সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার এলাকায় শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়ার দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর, দলিল জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। সোমবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক মো. শরিফুল হক তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে দীর্ঘ ২১ মাস তদন্ত শেষে গত ১৩ এপ্রিল সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মোহন লাল তালুকদার। পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের এক সপ্তাহের মাথায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিজানুর রহমান।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাপ্রাপ্তরা হলেন– আখড়া পরিচালনা কমিটির বিভিন্ন সময়ের দায়িত্বশীল বিরাজ মাধব চক্রবর্তী, দিবাকর ধর রাম, সুধাময় মজুমদার, মিহির লাল দে, অমলেন্দু ধর, কিশোর কুমার কর, বিমান দাস, প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য, শান্তনু দত্ত শন্তু, চন্দন রায়, মলয় পুরকায়স্থ, সুপর্ণ দে মন্তু, সুদীপ রঞ্জন দেব, সুদীপ সেন বাপ্পু, কৃপেশ পাল, তপন মিত্র, উদয়ন পুরকায়স্থ, দলিলের সাক্ষী আব্দুর রহিম শামীম, আবুল কালাম, এজাজ উদ্দিন, খন্দকার কামরুজ্জামান, দলিল লেখক বীরেশ দেবনাথ, সেবায়েত বিভা বসু গোস্বামী বাপ্পা, দলিলগ্রহীতা নিতাই চন্দ্র পাল, ফখর উদ্দিন, এরশাদ উদ্দিন, ফারহানা রহমান, ইমরানা বেগম, সুলতানা বেগম ও রওশন আরা বেগম।
জানা গেছে, ১৮৬৮ সালে স্থানীয় বিত্তবান মায়ারাম দাস বৈষ্ণব শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়ার জন্য প্রায় তিন একর জমি দান করেন। জীবদ্দশায় তিনি মন্দিরটি পরিচালনাও করেন। জিন্দাবাজারের সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পাঁচপীরের মাজারসংলগ্ন আখড়াটি সিলেট মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার জেএল নম্বর ৯১-এর অন্তর্গত।
মন্দিরের সেবায়েত বিভা বসু গোস্বামী বাপ্পার তথ্যমতে, মন্দিরের রেকর্ডে ৮৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ জমি। এর মধ্যে দখলে রয়েছে ৪০ শতাংশ, বাকি জমি বেহাত। বিভিন্ন সময়ে জায়গা বেহাতের পর সর্বশেষ ২০০৫ সালে পরিচালনা কমিটি মন্দিরের ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ জমি হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই আদালতে মামলা করেন আখড়ার বাসিন্দা ও ভক্ত রাহুল দেবনাথ। তিনি মামলায় আখড়ার জায়গা অবৈধভাবে হস্তান্তর ও ১২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ, দলিল জালিয়াতি ও বিক্রির অভিযোগ করেন। গত ১৩ এপ্রিল আদালতে মামলার পঞ্চম তদন্ত কর্মকর্তা মোহন লাল তালুকদার প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি আখড়ার জায়গা হস্তান্তর ও দলিল জালিয়াতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।