শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি(বান্দরবান)থেকে ::
অন্য বছরের চাইতে এবছর মৌসুমে অধিক বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ের ঘেষে খালের চরঞ্চলের দৌছড়ির ইউনিয়নের বাঁকখালী চরে।
উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নসহ ৫ ইউনিয়নে ৯৭ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে ।
পাহাড়ের চরাঞ্চলের নদীর শাখাপ্রশাখা চর গুলোতে যে কোন জাতের বাদাম চাষে অধিক ফলন পাচ্ছে কৃষকরা।
জানাযায়,এ বছর আবহাওয়া অনুকলে থাকার কারণে বাদামের ফলন ভাল হয়েছে। বাদাম চাষ লাভজনক হওয়ার চাষীরা বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে। আর অন্য ফসলের চাইতে বাদাম চাষ করতে খরচও কম লাগে। অল্প কিছু কীটনাশক ও অল্প পরিসরে চাষ দিলেই বাদাম চাষ করা সম্ভব। বাদাম চাষ করতে বাড়তি সেঁচ ও নিরানি কোন প্রয়োজন হয় না। অন্য ফসলের মতো যতন না করেও ভাল ফলন আশা করা যায়। ফলে কম খরচে বেশি মুনাফা অর্জনের জন্য কৃষকরা বাদাম চাষে আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছে। বাঁকখালী খালের শাখা-প্রশাখা জুড়ে চরের মাটি বেলে দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ মাটিতে অধিক তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত সূর্য্যেরে আলো ও মাঝারি বৃষ্টিপাত পেলে চীনাবাদাম,ত্রিদানা বাদাম ও দেশীও জাতের বাদামের ফলন ভাল হয়।
প্রতিবছর বাদামের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি অফিস।
দৌছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাঁকখালী এলাকার মেম্বার মাওলানা নুরুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরই উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে বাঁকখালী খাল পাহাড় ঘেষা বাঁকখালী খাল। খালের দুই পাশের চরঞ্চল গুলোতে বাদামের চাষ হয়। এছাড়াও নদী তীরবর্তী কিছু জমিতেও বাদাম চাষ করা হয়েছে। তাই দিনদিন নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম পাহাড়ের চরাঞ্চল বেলা ও দো-আঁশ মাটিযুক্ত জমিতে বাদাম চাষে ক্রমেই ঝুঁকছে চাষিরা।
সদর ইউনিয়নের ফুট্টাঝিরি এলাকার চাষী ছুরুত আলম জানান, আমি এ বছর ত্রিদানা জাতের বাদাম। ৪০শতকের মত জমিতে চাষ করেছি, ফলনও ভাল হয়েছে, এতে ১২ থেকে ১৬ মণ করে বাদাম পাচ্ছি এবং অন্য অন্য ফসলের চাইতে বাদাম চাষে শুধুই লাভ আর লাভ, খরচ কম হওয়ায় প্রতি বছরই বাদাম চাষ করে আসছি এবং লাভবানও হচ্ছি।
ব্যবসায়ী ও বাজার যাচাই করে জানা যায় এ বছর বাদাম ৩ হাজার ৭শ থেকে ৪ হাজার ৮শ টাকা মণ ধরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি এবং বাজারে চাহিদা থাকায় বেশ লাভবান হচ্ছে চাষী ও ব্যবসায়ীরা। ফলে গত কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষিরা একে অপরের দেখাদেখিতে লাভ জনক বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে।
চরাঞ্চলের বেলে দো-আঁশ মাটিতে লাভজনক বাদাম চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাদাম চাষিদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে,কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগীতা পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশী জমিতে বাদাম চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্থানীয় চাষীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার এনামুল হক বলেন, অত্র পাহাড়ের চরাঞ্চলের মাটি তথা আবহাওয়া ও চিনা বাদাম চাষের জন্য উপযোগী।এজন্য এ বছর উপজেলার সদর ,দৌছড়ি,বাইশারী,সোনাইছড়ি ও ঘুমধুম এই ৫ ইউনিয়নে ৯৭ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। ৪ ইউনিয়নের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে বাঁকখালী খালের শাখা-প্রশাখার চরাঞ্চলে অধিক ফলন হয়েছে। অত্র অফিস হইতে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের চিনা বাদাম বীজ বিতরণ করা হয়েছে। কৃষক ভাইয়েরা এতে স্থায়ী জাতের চেয়ে ও অধিক ফলন পাচ্ছে। এতে কৃষকেরা দিন দিন চিনা বাদাম ও ত্রিদানা বাদাম চাষের দিকে ঝুঁকছে, আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রতি বছর কৃষকদের সাহায্য সহযোগিতা করব।