বিশেষ প্রতিনিধি :
বিদ্যুতের বিল দেওয়ার কথা বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার গৃহবধূ হাসি বেগম। তারপর তার বাবা-মা পুলিশে অভিযোগ করেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। অপরদিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলেন, হাসি টাকা-পয়সা ও গহনা নিয়ে পালিয়েছেন।
এর মধ্যে পুলিশ এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। হাসির মা, সেই লাশকে নিজের মেয়ে বলে শনাক্ত করার পর পুলিশ দাফনের অনুমতি দেয়। এর ঠিক দুদিন পর হাসি বাবা-মাকে ফোন করে জানান, তিনি বেঁচে আছেন। পরে পুলিশ তাকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এমন ঘটনায় উপজেলায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সদরপুর থানার ওসি মো. মামুন আল রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, “হাসি বেগম একজনের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তার মা-বাবা লাশটি শনাক্ত করতে ভুল করেছিলেন। নান্দাইল এলাকা থেকে তাকে থানায় আনা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও হাসি বেগমের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
হাসি বেগম (২৪) সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে এবং একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বড় বাড়ির মোতালেব শেখের স্ত্রী।
পরিবার ও পুলিশ জানায়, আট বছর আগে মোতালেব শেখের সঙ্গে হাসি বেগমের বিয়ে হয়। এই দম্পতির সাত বছরের এক ছেলেসন্তান আছে। এর চারদিন পর ১১ সেপ্টেম্বর হাসি বেগমের বাবা শেখ হাবিবুর রহমান থানায় অভিযোগ দিয়ে বলেন, তার মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুম করেছেন জামাতা মোতালেব শেখ।
এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর মোতালেব শেখ বাদী হয়ে পাল্টা এক অভিযোগে উল্লেখ করেন, হাসি বেগম নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছেন।
২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সদরপুর উপজেলা সংলগ্ন ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাওটানা এলাকায় কচুরিপানার ভেতর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটি নিখোঁজ হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করেন তার মা সালমা বেগম।
ময়নাতদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর ২১ সেপ্টেম্বর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে ওই লাশ দাফন করা হয়।
এর দুদিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম তার মা-বাবাকে ফোন করে বলেন, “আমি বেঁচে আছি।
পরে এসআই মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে হাসি বেগমকে সদরপুর থানায় নিয়ে আসেন।