প্রাইভেট ডিটেকটিভ ডেস্কঃ
টাঙ্গাইলে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে চার আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
সোমবার টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে বাস চালকসহ চারজনকে ফাঁসি, সুপারভাইজার সফর আলীকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে
ফাঁসির দণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর, হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর।
বগুড়ায় পরীক্ষা দিয়ে রূপা যে বাসে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন ছোঁয়া পরিবহনের সেই বাসটি তার পরিবারকে দিয়ে দেওয়ার আদেশ হয়েছে রায়ে।
কোর্ট ইন্সপেক্টর আরও বলেন, এ বছরের ৩ জানুয়ারি মামলায় বাদী মধুপুরের অরণখোলা ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ২০ দিনের মধ্যে এই মামলায় জব্দ তালিকা, সুরতহাল রিপোর্ট, চারজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলী এবং হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ২৫ অগাস্ট রাতে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের পাশে মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় জাকিয়া সুলতানা রূপার লাশ পাওয়া যায়।
ঢাকার আইডিয়াল ল কলেজের ছাত্রী রূপা একটি প্রতিষ্ঠানের বিপণন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায়।
ওই দিন বগুড়ায় একটি পরীক্ষা দিয়ে ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে কর্মস্থল ময়মনসিংহে যাওয়ার পথে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন তিনি। পরে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে মধুপুর থানা পুলিশ।
এর আগে গত বছরের ২৯ অগাস্ট ওই বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ অগাস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী রূপাকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
গত ১৫ অক্টোবর পাঁচ পরিবহন শ্রমিককে আসামি করে রূপা হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুই পক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বিচারক আবুল মনসুর মিয়া রায়ের এ দিন ঠিক করে দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আক্তার, তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আজাদ। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও দেলুয়ার হোসেন।