তিনি বলেন, দেশের জন্য, স্বাধীনতার জন্য আমার বাবার (বঙ্গবন্ধু) যে সংগ্রাম সে সংগ্রামের সারথি ছিলেন আমার মা। বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে আমার মা (বঙ্গমাতা) যেভাবে সাহস যুগিয়েছেন তা সব নারীর জন্য অনুকরণীয়।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গমাতা : এ প্যারাগন অব উইমেন লিডারশিপ অ্যান্ড ন্যাশন-বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের আয়োজন করে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের জন্য বাবা বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকলেও কখনোই বিরক্ত করতেন না। বলতেন আমি দেখব তুমি চিন্তা করো না। সংসার সামলানোর পাশাপাশি জাতির পিতার অনেক সময়োচিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতার পরামর্শ আন্দোলন-সংগ্রামে গতির সঞ্চার করেছিল।
সংসার সামলানোর পাশাপাশি জাতির পিতার অনেক সময়োচিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতার পরামর্শ আন্দোলন-সংগ্রামে গতির সঞ্চার করেছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমার মা খুনিদের কাছে নিজের জীবন ভিক্ষা চান নাই। তিনি নিজে জীবন দিয়ে গেছেন। জাতির পিতার সিঁড়িতে পড়ে থাকা মৃতদেহ দেখে সোজা বলে দিয়েছেন, ‘তোমরা ওনাকে মেরেছ, আমাকেও মেরে ফেলো’। সেখানেই আমার মাকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে।
শেখ হাসিনা বলেন, মাতৃভাষা থেকে শুরু করে স্বাধীনতা দেশের সব আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার পর দেশ গঠন এবং সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। আজকে আমরা যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি তারও সবচেয়ে বড় অবদান এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাই আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে গর্ববোধ করি। আমাদের পরিবারের প্রায় সবাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সম্মেলন এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ উদ্বোধন ঘোষণা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার মায়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের এ উদ্যোগ সফল হোক। আমি আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব, সে আশ্বাস দিচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খ্যাতিমান কথা সাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি মিসেস সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ- এর পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া হক।