মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে মাথা ন্যাড়া ও উলঙ্গ করে স্পর্শকাতর যৌনাঙ্গসহ পুরো শরীরে মরিচ গুড়া লাগিয়ে বাড়ীতে আটকে রাখে পাষন্ড স্বামী। পরে সুযোগ বুঝে বাড়ী থেতে পালিয়ে এসে জুড়ী পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অমানষিক এ নির্যাতনের কথা জানান গৃহবধু রাবিয়া বেগম। ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রাবিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন, জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের শুকনাছড়া গ্রামের হাতির মাহুত বদই মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয়েছে ক’বছর আগে। পারিবারিক বিষয় নিয়ে একটু ঝগড়াজাটি হলেই স্বামী বদই মিয়া আমাকে নির্যতান করতো। স্বামীর নির্যাতনের ভয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই। পরে স্থানীয় লোকদের মধ্যস্থতায় আমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ১২টায় স্বামী বদই মিয়া হঠাৎ আমার হাত পিছমোড়া করে বেঁধে লাথি মারতে থাকে। একপর্যায়ে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়। ভোর ৪ টায় বাঁধন খুলে দিয়ে গোসল করায় আমাকে। পরে ফের দড়ি দিয়ে শক্ত করে আমার হাত পা বেধে আমাকে উলঙ্গ করে যৌনাঙ্গসহ পুরো শরীরে মরিচ লাগিয়ে দেয় আমার স্বামী। এরপর লাথি মারতে শুরু করেন, লাথি আর চড় থাপ্পড়ের যন্ত্রনায় নিস্তেজ হয়ে পড়ি আমি। মাটিতে পড়ে গেলে আমার মাথা পুরো ন্যাড়া করে দেন। রোববার সারা দিন শরীরের যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকি। ওইদিন আমার শ^াশুড়ী সামছুন নাহার ও দেবর ময়নুল ইসলাম বাড়ীতে থাকলেও তারা কোন প্রতিবাদ করেননি। ২ অক্টোবর সোমবার সুযোগ বুঝে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করি এবং মঙ্গলবার দুপুরে জুড়ী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ে করি। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু রাবিয়া বেগম কুলাউড়ার জয়চ-ী ইউনিয়ের দানাপুর এলাকার মৃত আত্তর আলীর মেয়ে। এসময় গৃহবধূ রাবিয়া বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে আরও বলেন, শুধু সন্তানদের মুখে দিকে চাইয়া সব নির্যাতন সহ্য করছি। এখন আর পারছি না। তাই জীবন বাঁচানো জন্য পালিয়ে এসেছি। জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, রাবিয়া বেগম বদই মিয়ার ২য় স্ত্রী। বদই মিয়া রাবিয়া বেগমের মাঝে একবার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছিল। পড়ে আবার বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করেন তারা। রাবিয়া বেগমকে কাছ থেকে বর্বর নির্যাতনের কথাগুলো গা শিউরে উঠেছে। আসামী বদই মিয়া এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করতে একাধি স্থানে অভিযান চালনো হয়েছে। আমরা সোর্স লাগিয়েছি আশা করি শিগগির তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।