-
- সারাদেশে
- রক্তাক্ত আগষ্ট: জাতীয় শোক দিবস ও বাঙ্গালী জাতি
- আপডেট সময় August, 3, 2019, 1:40 pm
- 227 বার পড়া হয়েছে
ফারজানা ইসলাম মিম :
বাঙ্গালী জাতির জীবনে এক হৃদয় বিধারক ও বিভীষিকাময় অধ্যায় প্রবেশ করে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট সেই অমানিশার সর্বকালের ভয়াবহ র্নিমমতম বর্বরোচি ও পৈশাচিক কলঙ্কিত হত্যা কান্ডের মধ্যে দিয়ে হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বিশ্বের মানচিত্রে অঙ্কিত স্বাধীন সার্বভৌম সোনার বাংলার অন্যতম ব্যতিক্রম ধর্মী বৈশ্বিক জাতি সত্তার রুপকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্ব-পরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধী মানব নামের দানব একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের ষড়যন্ত্র কল্পে কতিপয় উচ্চবিলাসী বিপথগামী উচ্ছৃঙ্খল সামরিক অফিসারগণ। ১৯৭৫ সালের সেই ভয়াল ১৫ আগষ্ট ভোর রাতে এই র্নিমম কলঙ্কিত হত্যা কান্ড ঘটায়। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধুর স্ব-পরিবারে এ র্নিমম পৈশাচিক হত্যা কান্ডের ফলে শোকে বিমূর হয়ে পড়ে গোটা বাঙ্গালী জাতি।স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা কান্ডের ফলে সারা বিশ্ব হারিয়েছে এক মহান নেতা, আর বাঙ্গালী জাতি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট র্নিমম হত্যা কান্ডের মধ্যে দিয়ে হারিয়েছে তাদের প্রানের প্রিয় বঙ্গবন্ধুকে।বাঙ্গালী জাতির জন্মের ইতিহাস পৃথিবীর বুকে একটি বিরল ইতিহাস। যা ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু হয়ে ধাপে ধাপে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ,১৯৬৬ সালের বাঙ্গালীর বাঁচার সনদ ছয় দফা , ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যূথান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকা রমনা রেসকোর্স ময়দানের মহাজনসমূদ্রে মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ সাত কোটি মানুষ কে দাবায়ে রাখতে পারবানা। “এ বারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এ বারের সংগ্রাম -আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এই ভাষণের ফলে সাত কোটি বাঙ্গালীর দীপ্ত শপথের মাধ্যমে দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানী স্বৈরাচারী শাসক ও সেনাবাহীনির সাথে যুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ শহীদের বুকের তাজা রক্ত, মা বোনের ইজ্জত সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতি পেয়েছে স্বাধীনতা নিজস্ব মাটির অধিকার, নিজস্ব পতাকা আর বিশ্বের মানচিত্রে আত্মমর্যাদার বোধ সম্পন্ন স্বাধীন বাঙ্গালী জাতির স্বীকৃতি। বাঙ্গালী জাতির জন্মের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর অবদান অপরিসীম।তারই নেতৃত্বে বাঙ্গালী জাতি অর্জন করে বহু কাঙ্খিত স্বাধীনতা তাই তো অন্নদাশঙ্কর রায়ের কন্ঠে”যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান,ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান। দিকে দিকে আজ অশ্রু গঙ্গা রক্তগঙ্গা বহমান, তবু নাই ভয় হবে হবে জয়, জয় মুজিবুর রহমান।” আজ বাংলাদেশীরা বিশ্বের দরবারে একটি স্বাধীন বাঙ্গালী জাতি হিসেবে পরিচিত।১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগষ্ট ভোর রাতে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী গণমানুষের বাংলার বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পুত্র ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লে.শেখ জামাল, ছোট শিশু শেখ রাসেল সহ পরিবারের ১৮ জন লোককে র্নিমমভাবে হত্যা করে- গর্বিত বাঙ্গালী জাতির কপালে কলঙ্ক লেপন করে। আর সেই ১৯৭৫ সালের ভয়াল ১৫ই আগষ্ট অমানিষার অন্ধকারে ভোর রাতের নিষ্ঠুর, বর্বরতম হত্যাকান্ড গোটা বাঙ্গালী জাতির তথা বিশ্বের ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে পরিচিত। যে হত্যা চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের এ দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শোকাবহ ও কলঙ্কের দিন হিসেবে চিহ্নিত। ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস। বাঙ্গালী জাতি স্বাধীনতার মূল চেতনার দিকে অগ্রসর হয়ে প্রতি বছর ১৫ই আগষ্ট বিনম্র শ্রদ্ধা পালন করছে জাতীয় শোক দিবস। তাছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হয়। বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে সূর্যোদয়ের সময় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় বিভিন্ন অফিস, স্কুল, কলেজ তথা সরকারী ও বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানে। তাছড়া শোক দিবস উপলক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলেচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, চিত্রাঅঙ্কন, রচনা লিখন শিল্পকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা ও কাঙ্গালী ভোজ এবং তবারক বিতরণের আয়োজন করে আসছে। যুগ থেকে যুগান্তরে তিনি যুগপৎ ভক্তদের দ্বারা প্রশংসিত। তার মরদেহ মৃত্তিকায় বিলীন হলেও তাঁর কাজ ও স্মৃতি অনাদিকাল থাকবে। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রকে মূল চেতনার দিকে ফেরার ডাক নিয়ে সারাদেশে প্রতিবছর ১৫ই আগষ্ট বিনম্র শ্রদ্বায় পালিত হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস।বাঙ্গালী জাতির জীবনে জাতীয় শোক দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। জাতীয় শোক দিবস পালনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে ১৯৭৫ সালের ভয়ংকর খুনিদের মূখোশ উম্মোচন ও তাদের বিচারের দাবি এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ প্রেম, দেশের মানুষের প্রতি দায়বোধ, কথা ও কাজের সাযুজ্য, সত্যনিষ্ঠা, আপোসহীন মনোভঙ্গি, সংগ্রামী চেতনা ইত্যাদি তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে।পরিশেষে এ কথা বলা যায় যে বাঙ্গালী জাতির মহত্তম অর্জন যেমন স্বাধীনতা তেমনি সবচেয়ে চরম শোকাবহ ও লজ্জাসকর ঘটনা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের র্নিমম হত্যাকান্ড। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদের হত্যা করে গর্বিত জাতির ললাটে কলঙ্ক লেপন করে। বাঙ্গালী জাতি যদি সর্বচেতন্য সমাচ্ছন্ন করা শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রুপায়িত করতে পারে তাহলেই তাঁর জীবনদান সার্থক হবে। দেশকে ভালবেসে এদেশের স্বাধীনতার জন্য গণমানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য তিনি তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাই বাঙ্গালী জাতির মুক্তির অনিঃশ্বেষ লড়াইয়ে চিরদিন প্রেরণা জোগাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী জাতীয় শোক দিবস পালনের মাধ্যমে। পাশাপাশি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। আল্লাহ তাকে জান্নাতের সর্বোচ্ছ সমাসীন দান করুক। আমিন।
.লেখক:- ফারজানা ইসলাম মিম শিক্ষার্থী- মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজ।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/০৩ আগস্ট ২০১৯/ইকবাল
এ জাতীয় আরো খবর