কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) থেকে ঃ
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার সোনালী ব্যাংক শিরগ্রাম শাখা স্থানান্তরের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংবাদটি জানতে পেরে প্রায় তিন হাজার গ্রাহকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শাখাটি যাতে স্থানান্তর না হয় সে ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী।জানা যায়, উপজেলাধীন হাট-বাজার গুলোর ভিতর শিরগ্রাম বাজার প্রাচীন এবং অন্যতম। দুটি উপজেলা ও চারটি ইউনিয়নের মধ্যে স্থলে অবস্থিত বাজারটি ভৌগলিক ও ব্যবসা বাণিজ্য’র দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই দিক লক্ষ্য রেখেই ১৯৮৬ সালে ব্যাংকটির শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় তিন যুগ শেষে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে ব্যাংকের শাখাটি অন্যত্র সড়িয়ে নেয়ার পায়তারা চলছে। এতে প্রায় তিন হাজার গ্রাহকরে মাঝে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকটি অন্যত্রে সড়িয়ে নিলে ভোগান্তিতে পরবে চারটি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতাভোগিগণ। এছাড়াও পেনশন ভোগি, বেশকয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি এনজিও, ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স সেবা গ্রহিতাদের বাড়বে ভোগান্তি।বানা ইউনিয়নের কোনা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ওহিদুর রহমান শেখের স্ত্রী তানিয়া বেগম (৩০) বলেন, আমার স্বামী আট বছর সৌদি আরবে চাকুরি করেন। সেই সময় থেকে সোনালী ব্যাংক শিরগ্রাম শাখায় লেনদেন করে থাকি। আমাদের বাড়ির আরও দুজন বিদেশে থাকেন। তারাও এই শাখায় টাকা পাঠায়। ব্যাংকটি অন্যত্র চলে গেলে আমাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে।পাচুড়িয়া ইউনিয়নের চরনারানদিয়া গ্রামের বিধবা ভাতাভোগী রাবেয়া বেগম (৬০) বলেন, আমরা গরীব মানুষ। ব্যাংকটি অন্যত্র চলে গেলে আমাদের মতো লোকদের ভাতার টাকা উত্তোলন করতে যাতায়াতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে।শিরগ্রাম বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র পাঠক জানান, আমার স্কুলের সাড়ে আটশ শিক্ষার্থীদের বেতনসহ স্কুলের আনুসাঙ্গিক লেনদেন এই ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই করে আসছি। শাখাটি অন্যত্র চলে গেলে আমাদের চরম বিপাকে পড়তে হবে।শিরগ্রাম বাজার বণিক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম হোসেন মিলু বলেন, ব্যাংকটি অন্যত্র সরে গেলে আমরা ব্যবসায়ীরা প্রচ- ক্ষতির সম্মুখিন হবো। তখন আলফাডাঙ্গা বা বোয়ালমারীতে নগদ অর্থ নিয়ে যাতায়াত করতে গেলে ব্যবসায়ীদের অত্যন্ত ঝুঁকির সম্মুখিন হতে হবে।শাখাটির ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম বলেন, শাখাটি অন্যত্রে স্থানান্তরের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চিন্তাভাবনা করছে, আমরা সরকারি কর্মচারী, কর্তৃপক্ষ যেখানেই ব্যাংকটি স্থানান্তর করবে আমরা সেখানেই যেতে প্রস্তুত।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/০২ আগস্ট ২০১৯/ইকবাল