ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়: ওবায়দুল কাদের
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক এবং এটা মোকাবিলা করা কঠিন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয় ও সরকার চ্যালেঞ্জের সঙ্গে এটা মোকাবিলা করবে বলেও জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে আগস্ট মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধুর উপর চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা জানান। শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় আওয়ামী যুবলীগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা বারবার বলছি আমরা এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) উদ্বিগ্ন, তিনি লন্ডনে চিকিৎসায় আছেন তারপরও প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গে বলছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশে থাকলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ থেমে থাকেনি। এখন মোবাইলেও নির্দেশনা দেওয়া যায়। তিনি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) জরুরি কাজে বিদেশে যেতে পারেন, বিনা অনুমতিতে তিনি যাননি। একজন মন্ত্রীই শুধু মন্ত্রণালয় নয়, তিনি দেশে চলে এসেছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ডেঙ্গু শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে। ফিলিপাইনে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৮শ জনের মৃত্যু হয়েছে, এক লাখ আক্রান্ত হয়েছে। তারা জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করেছে। ভিয়েতনামেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে কম আছে, ইন্দোনেশিয়ায় অনেক বেশি, থাইল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়েছে, সিঙ্গাপুরে অনেকে আক্রান্ত। মিডিয়ার হিসাবে অনুযায়ী আমাদের দেশে ১৭ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। ১৩ হাজার চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এটাকে মহামারি বলুন আর যাই বলুন আমরা যা সত্য তা স্বীকার করে মোকাবিলায় কাজ করছি। অবস্থা অ্যালার্মিং। মোকাবিলা করা কঠিন। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়। আমরা এটা মোকাবিলা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমরা সাহস রাখি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবো। এসময় সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি টপ টু বটম নির্বাচনে ব্যর্থ, আন্দোলনে ব্যর্থ। অন্যের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলার আগে বিএনপির নেতাদের টপ টু বটম পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, আগস্ট মাস এলেই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে। একারণে চলতি মাসেও বিপদের ঝুঁকি। এজন্য তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগস্ট মাস এলেই জঙ্গিবাদ, নাশকতা, সাম্প্রদায়িকতা- যা যা নিষ্ক্রিয় আছে বলে মনে করি, সে অপশক্তিগুলো আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। আগস্ট মাস এলেই তারা হঠাৎ অপতৎপরতা চালায়। কারণ, তারা জানে, এক শেখ হাসিনাকে শেষ করে দিতে পারলে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। আমাদের এক দিকে হারানোর বেদনা, আবার নতুন করে হারানোর আশঙ্কা। পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা শেখ হাসিনা। আপনারা শোকের মাসের কর্মসূচি পালন করবেন, পাশাপাশি সতর্ক থাকবেন। আমাদের বিপদের ঝুঁকি আছে। তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বিভিন্নভাবে ধিকৃত করতে চান, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উদার রাজনীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার রাজনীতি শুধু রাজনীতি করার জন্য নয়, নির্বাচনী এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য নয়। শেখ হাসিনার রাজনীতি পরবর্তী প্রজন্মের ভিশন নিয়ে কাজ করা। তিনি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কর্মসূচিতে ১০০ বছর পেরিয়ে গেছেন। এ কারণেই যুবলীগ শেখ হাসিনাকে যে রাষ্ট্রনায়ক উপাধি দিয়েছে, তা যথার্থ। সেতুমন্ত্রী বলেন, আজ যদি শেক্সপিয়ার বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি নিশ্চয়ই লিখতেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বিশ্বের নৃশংসতম ও জঘন্যতম। কারা বঙ্গবন্ধু হত্যায় পেছন থেকে মদদ দিয়েছিল, ইনডেমিনিটি দিয়ে খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল, বিদেশে দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিল, ইডেমিনিটি আইনে পরিণত করেছিল- তা জাঁতি জানে। জিয়াউর রহমান এর সঙ্গে জড়িত ছিল, এগুলো ইতিহাস জানে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে, শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কারা করেছিল। তারপরও, পুত্রহারা মাকে সান্ত্বনা দিতে গেলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ নিষ্ঠুর রাজনীতিও তারা করে। ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্টের মতো ঘটনার পরেও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা একটা কর্মসম্পর্ক রাখতে চাই। কিন্তু, যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীতে কেক কেটে ভুয়া জন্মদিন উদযাপন করে, তাদের সঙ্গে আমরা কর্মসম্পর্ক রাখি কীভাবে? তারা যদি এ কাজ বন্ধ না করে, তবে তাদের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক গড়ে তোলা কঠিন। অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদ।