ঢাকা মেডিকেলে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগী, ৫০০ চিকিৎসকের ঈদের ছুটি বাতিল
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা রোগীদের ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ার কারণে এ বিভাগের প্রায় পাঁচশ’ চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এবার ঈদে সবাইকেই ডিউটি করতে হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে এ কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, এ বছরের জুলাই মাসেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তবে এটা আতঙ্কের কোনো বিষয় নয়। আমাদের চিকিৎসকরা ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দিচ্ছেন। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা যেহেতু বাড়ছে, সে কারণে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এদের মধ্যে আনুমানিক পাঁচশ’ চিকিৎসক রয়েছেন। খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত শনিবার মেডিসিন বিভাগের একটি ওয়ার্ডের মাত্র দু’টি ইউনিটে ১২০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল। এদের মধ্যে ১১৫ জনকে সুস্থ করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আরও পাঁচ জন আছেন, তাদেরও শিগগিরই ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এরকম মেডিসিন বিভাগের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের মধ্যে অনেক ইউনিট আছে, এখনো সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সবাইকে চিঠির মাধ্যমে ছুটি বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক, সরকারি অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকসহ মেডিসিন বিভাগের সব চিকিৎসক। তবে আগস্টের ৮ তারিখের মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা যদি কমে যায়, তখন ছুটির বিষয়ে আবার চিন্তা-ভাবনা করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আমাদের অধীনে না। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অধীনে। তবে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার নাসির উদ্দিন বলেন, মেডিসিন বিভাগের সব ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ভর্তি হয়েছেন ১৫৫ রোগী। এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ২৩৯৫ জন। এছাড়া, বহির্বিভাগেও প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, বাইরের হাসপাতাল থেকে অনেক ‘ক্রিটিক্যাল কেস’ আসে, যেগুলো আগে থেকেই খারাপ অবস্থায় থাকে। এজন্য এখানে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। তবে, আমরা খুবই সফলভাবে এসব সামলাচ্ছি। রোগীদের আধুনিক ও যুগোপযোগী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, ঢাকা মেডিকেলে সবসময়ই রোগীর চাপ থাকে। সে অনুযায়ী আমাদের ‘ক্যাপাসিটি’ বাড়াচ্ছি। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স সবাইকেই আগাম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন করে অনেক যন্ত্রপাতি দিয়েছে। সেগুলো কাজে লাগাচ্ছি। আরও বেশি রোগী আসলেও হাসপাতাল তাদের চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।