রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ ভিআইপি নয়: হাইকোর্ট
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ভিআইপি প্রটোকল বিষয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ ভিআইপি নয়, বাকিরা সবাই রাষ্ট্রের চাকর। গতকাল বুধবার মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি না ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানিকালে আদালত এ মন্তব্য করেন। বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমন। স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পদমর্যাদায় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয়- এমন একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিষয়টি তদন্ত করে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নড়াইলের ওই স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কেন ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। নৌ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল, মিাদারীপুরের ডিসি, পুলিশ সুপার, কাঠালবাড়ী ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসাইন মিয়া ও কাঠালবাড়ী থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটকারী আইনজীবী মো. জহিরুদ্দিন লিমন এদিন নিজেই আদালতে শুনানি করেন; রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাসার। লিমন পরে সাংবাদিকদের বলেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আদালত ২৮ আগস্ট পরবর্তী শুনানির জন্য রেখেছে। মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়া নড়াইলের কালিয়া পৌর এলাকার একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষকে (১১) নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স গত বৃহস্পতিবার রাতে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ফেরিতে ওঠে। কিন্তু সরকারের এটুআই প্রকল্পে দায়িত্বরত আবদুস সবুর মণ্ডলের গাড়ির জন্য তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর রাত ১১টার দিকে ফেরিটি শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা করে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ফেরিতেই মারা যায় তিতাস। তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএর কর্তাদের অনুরোধ করেও কোনো কাজ হয়নি। এমনকি সরকারি জরুরি সেবার হটলাই ৯৯৯ এ ফোন করা হলেও ফেরি দ্রুত ছাড়তে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর যুক্ত করে তিতাস ঘোষের পরিবারের জন্য তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত মঙ্গলবার রিট আবেদন করেন মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহিরুদ্দিন লিমন। ওই ঘটনায় মাদারীপুরের জেলা প্রশাসন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ আলাদা তিনটি তদন্ত কমিটি করে। এর মধ্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কমিটিতে আবদুস সবুর মণ্ডলের সমপর্যায়ের একজন এবং তার চেয়ে নিচের পদের সাতজনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও সমালোচনা হয়।