রাকিব হোসেন, ভোলা জেলা বুর্যে প্রধান :
ভোলার সাগর মোহনার পর্যটন দ্বীপ কুকরি মুকরির বাসিন্দারা ভাল নেই। সেখানে এখনো নেই উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত গভীর নলকুপ। দারিদ্রতার জন্য অভাবগ্রস্ত মানুষেরা ব্যবহার করছে অস্বাস্থ্যকার কাঁচা লেট্রন। যার কারনে প্রায় ১২ মাস লেগেই থাকে তাদের অসুখ বিসুখ। অসুস্থ্য মানুষ গুলো বছরের পর বছর ধরে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে থাকলেও চিকিৎসক না থাকায় অসহায় মানুষদেরকে হাতুরে ডাক্তার কবিরাজ ও পল্লী চিকিৎসকের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যার ফলে প্রায়ই বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে বহু মানুষ। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, সেখানে কোন ডাক্তার পদায়ন না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চরবাসী। কুকরি মুকরি নদী ও সাগর বেষ্টিত প্রায় ৪ শত বছরের পুরোনো দ্বীপ। কুকরিতে ১৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। যার অধিকাংশ দারিদ্রসীমার নিচে। শুধু ঝড়, জলোচ্ছাস আর প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করেই তারা জীবন ধারন করে না। তারা অসুখ বিসুখের সাথে লড়াই করে টিকে আছে। দারিদ্রতা ও স্বাস্থ্য সচেতনাতার অভাবে এখন বহু পরিবার কাঁচা লেট্রিন ব্যবহার করছে। টিউবওয়েলের অভাবে তাদের লবনাক্ত পানি পান করতে হচ্ছে। তাই বার মাস শিশু থেকে বৃদ্ধ পরিবারের কেউ না কেউ অসুখে আক্রান্ত থাকে। কোন ডাক্তার না থাকায় অসুস্থ্য রোগীরা পরে চরম বিপাকে। তাই বাধ্য হয়ে এলাকার হাতুরি ডাক্তার বা পল্লী চিকিৎসকের উপরই তাদের নির্ভর করতে হয়। আবার অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারাও যাচ্ছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে নজর দেয়ের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে চরবাসী। অন্যদিকে সরকার এই দ্বীপকে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষে নানা উদ্দ্যোগ নিলেও এখান কার মানুষ নুন্যতম স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না। দুর্গম এই দ্বীপে ২০০৪ সনের দিকে কুকরি মুকরি ইউনিয়ন স্থাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র স্থাপন করা হলেও সেখানে কোন চিকিৎসক থাকে না। ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বে পরিদর্শিকা শিউলি আক্তারের থাকার কথা থাকলেও তিনি সেখানে থাকেন না। অথচ সরকারি নিয়ম না মেনে ওই ভবনে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে মাঠ কর্র্মী সনিয়া আক্তার। সেখানে কোন স্থাস্থ্য কর্মী না থাকায় অন্যান্য রুমগুলোতে তালা ঝুলছে। এমনকি এখানকার ষ্টাফরা বিনা মল্যের জন্ম নিয়ন্ত্রনের ঔষধও টাকার বিনিময় মানুষকে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে ভোলার সিভিল সার্জন জানান, কুকরি মুকরিতে কোন ডাক্তার পদায়ন নেই। তবে সেখানে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের করার সিদান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। এলাকার নানুষেরর দাবী, চর কুকরি মুকরিকে পুনাঙ্গ পর্যটন এলাকা করতে হলে শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন করলেই হবে না। সেই সাথে মানুষের চিকিৎসা সেবাসহ মৌলিক মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৯ জুন ২০১৯/ইকবাল