January 17, 2025, 6:00 pm

সংবাদ শিরোনাম
সম্ভাবনার নতুন দ্বার ‘বাউ মুরগি’, চিলাহাটিতে ভাগ্য ফিরেছে নারীদের শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ টেকনাফ ২ বিজিবি”র অভিযানে আটক-৬ লক্ষ্মীপুরে তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন সিএনজি চালকরা মধুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেনাপোলে বিজিপি বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে দিশেহারা সন্তানরা ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন

কেশবপুরে সিগারেটের কৃত্রিম সঙ্কট সিন্ডিকেট চক্র প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা আইন শৃঙ্খলা কমিটির ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত

জাহিদ আবেদীন বাবু, কেশবপুর(যশোর) থেকেঃ

প্রতিকি ছবি

যশোরের কেশবপুরে সিগারেটের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। গত এক মাস ধরে এ অবস্থা চলমান থাকলেও প্রশাসনিকভাবে এসব সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, শহরের কতিপয় ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর সুপারভাইজার, এসআররা যোগসাজসে সিন্ডিকেট করে অতি মুনাফার লোভে সিগারেট বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এ সুযোগে কেউ কেউ শলাকা প্রতি ১ থেকে ৩ টাকা বেশী দামে ও প্যাকেট প্রতি পাইকাররা ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশী দামে বিক্রি করছেন। হঠাৎ করে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে।কেশবপুরে সিগারেট কোম্পানীর পরিবেশক, সুপার ভাই জার ও হাতে গোনা কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী ধুমপায়ীদেরকে জিম্মি করে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাজেট ঘোষণার আগ মুহূর্তে প্রশাসনের চোখের সামনে একই ভাবে অতিরিক্ত দামে সিগারেট বিক্রি করছেন। প্রতি বছর বাজেট পেশ হয়ে থাকে জুন মাসে। আর তা কার্যকর হয় অন্তত এক মাস পর। অথচ দেখা যায় বাজেট ঘোষণার আগেই সিগারেটের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের ভোক্তা অধিকার আইন লঙ্ঘন করে প্রতি বছরের মত এবারও বাজেট ঘোষণার আগে কেশবপুরে তামাকজাত দ্রব্যের বিভিন্ন ধরনের সিগারেট প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে। এর ফলে পরিবেশক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ধুমপায়ীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।সরেজমিনে বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রিটিশ টোবাকো লিমিটেডের একাধিক সিগারেটের মধ্যে কেশবপুরে বেশী চলে বেনসন, গোল্ডলিফ, ক্যাপেস্টান, স্টার ও ডারবি। অপরদিকে, জাপান টোবাকোর একাধিক সিগারেটের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বিক্রি হয় নেভী ও শেখ সিগারেট। বর্তমান বাজারে বেনসন ২০ শলাকার প্যাকেট ২‘শ ১০ টাকা যা এখন বিক্রি হচ্ছে ২‘শ ২০ থেকে ২‘শ ২৫ টাকায়। প্রতি শলাকা হিসেবে খুচরা বাজারে ১২ টাকার পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছে ১৩ থেকে ১৫ টাকায়। গোল্ডলিফ ও ক্যাপেস্টান ২০ শলাকার প্যাকেটের পাইকারি দাম ১‘শ ৪৮ টাকা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১‘শ ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, যা খুচরা ৮ টাকার পরিবর্তে ৯ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডার্বি ১০ শলাকার প্যাকেট ৩৫ টাকা দাম হলেও বাজারে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, খুরচা ৪ টাকার জায়গায় বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকায়। অনুরূপভাবে স্টার ৫ টাকার জায়গায় বিক্রি হচ্ছে ৬ টাকা দরে। একই সাথে ৪ টাকার শেখ বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা ও নেভী ৫ টাকার জায়গায় ৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন খুচরা দোকানে।সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে প্রতিদিন বেনসন ১৫ হাজার, গোল্ডলিফ ১৪ হাজার, স্টার ৫৫ হাজার, ডার্বি ৬০ হাজার, পাইলট ও হলিউড ১৮ হাজার, নেভী ১ লাখ ৫৫ হাজার ও শেখ ১ লাখ ৩০ হাজার শলাকা সিগারেটের চাহিদা রয়েছে। ফলে ওই সিন্ডিকেট চক্র বেনসন প্রতি শলাকা ৩ টাকা হারে ৪৫ হাজার, গোল্ডলিফ ২ টাকা হারে ২৮ হাজার, স্টার ১ টাকা হারে ৫৫ হাজার, ডার্বি ১ টাকা হারে ৬০ হাজার, নেভী ১ টাকা হারে ১ লাখ ৫৫ হাজার ও শেখ ১ টাকা হারে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকাসহ মোট ৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা প্রতিদিন অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন ধুমপায়িদের কাছ থেকে। এদিকে কেশবপুরে নিম্ন আয়ের ধুমপায়ীদের নিকট সোনালী বিড়ির চাহিদা বেশি হওয়ায় দোকানীরা প্যাকেট প্রতি ৩ টাকা হারে বেশি নিচ্ছে।এসব বিষয়ে একাধিক খুচরা ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানান, কোম্পানী থেকে চাহিদা অনুযায়ী সিগারেট দেয়া হচ্ছে না তাদের। ফলে তারা বাধ্য হয়ে বেশী দামে পাইকারি দোকান থেকে সিগারেট কিনে বেশী দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, শহরের পাইকারি ব্যবসায়ী মানিক দে, কৃষ্ণ সাহা, গৌতম দে, বরুন পাল, গনেশ পালসহ কতিপয় ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর পরিবেশক, সুপারভাইজার, এস.আরদের সাথে যোগসাজসে সিন্ডিকেট করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় লাখ লাখ শলাকা সিগারেট মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। যে কারণে বাজারে সিগারেটের সংকট ও মূল্য বেশী হয়েছে। ভুক্তভোগীরা দাম বৃদ্ধির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি দাবি জানিয়েছেন।কেশবপুর বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মানিক দে সিগারেট বাজারের অস্থিতিশীল অবস্থা দেখে তিনি কিছু বেনসন সিগারেট মজুদ করার কথা স্বীকার করেছেন।জাপান টোবাকোর কেশবপুরের সুপারভাইজার ইকবাল খান তোতা বলেন, মজুদ করার কোন সুযোগ নেই। দোকানদাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে দোকানদার ও ক্রেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ টোবাকো লিমিটেডের কেশবপুরের সুপারভাইজার সুব্রত সাহা জানান, কোম্পানী কোন সিগারেটের দাম বাড়ায়নি। দাম বাড়িয়েছে খুচরা দোকানদাররা। আমাদের কোম্পানীর কোন সিগারেট মজুদ করার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, দোকানদারদের চাহিদা অনুযায়ী সিগারেট সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু হঠাৎ তারা চাহিদা বেশী দেখিয়েছে যা কোম্পানীর পক্ষে সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে খুচরা দোকানদাররা ওই কোম্পানীর সুপারভাইজার সুব্রত সাহা ও ৮ জন এস.আরদের বিরুদ্ধে সিগারেট মজুদ করে রাখার অভিযোগও করেছেন।বিষয়টি উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয় যে, মজুদদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৮ জুন ২০১৯/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর