December 4, 2023, 6:19 am

সংবাদ শিরোনাম
পুতিন বাড়ালেন সেনাবাহিনীর সংখ্যা ২ দিনের হামলায় মৃত ১৯৩,গাজায় রংপুরে মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের প্রথম দিনে ৩ আসনে বৈধ ১৯, বাতিল ৫, স্থগিত ৩ রংপুরে চলন্ত বাসের ধাক্কায় নিহত ১, আহত ৫ রংপুর মেডিকেলে ভর্তি সুনামগঞ্জ ৫টি সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগ,জাতীয়পার্টি, স্বতন্ত্রসহ বিভিন্নদলের মোট ২১জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে দূর্বৃত্তদের গুলিতে যুবক খুন আছমা খানম গোপালগঞ্জের টেংরাখোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান সিলেট জেলার শাহপরান (রঃ) এলাকায় চাঞ্চল্যকর সাদেক হত্যা মামলার পলাতক আসামী তানিয়া’কে গ্রেপ্তার গাজীপুর-৫ আসনে আখতারউজ্জামানসহ ৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল গোপালগঞ্জ -১ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী সহ মোট ৫জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন

সাঈদ-মুরাদের দ্বন্দ্ব চরমে সভায় ময়লার স্তূপ, আজিমপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ

সাঈদ-মুরাদের দ্বন্দ্ব চরমে সভায় ময়লার স্তূপ, আজিমপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষ

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক                  

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের দ্বন্দ্ব আরো তীব্রতর হলো। লালবাগের আজিমপুর রোডের পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কামরাঙ্গীর চর, লালবাগ ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির আয়োজন করেন দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ। আর মেয়রের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার আবু আহমেদ মান্নাফিকে ‘লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে তার সমর্থকরা পার্ল হারবারের সামনের সড়কে একই সময়ে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে এলাকাবাসী দেখতে পান, কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জমে আছে ময়লার পাহাড়। আর পুরান ঢাকার এই দুই আওয়ামী লীগ নেতার দ্বন্দ্বের জেরে তাদের কর্মী-সমর্থকরা আজিমপুর এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায়। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে বেশ কিছু যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ঢিল ছাড়াছুড়ির মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত আজিমপুর এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। ঘটনার সূত্রপাত হয় আজিমপুর রোডের পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের অনুষ্ঠানস্থলের সামনে ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সেই কমিউনিটি সেন্টারে কামরাঙ্গীর চর, লালবাগ ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন মুরাদ। অন্যদিকে দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফিকে ‘লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে তার অনুসারীরা একই সময়ে আজিমপুর রোডে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসী ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জমে আছে ময়লার পাহাড়। মুরাদের সমর্থকরা সকালে সেখানে এসে ময়লার স্তূপ দেখে দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়, পুরো এলাকায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। কিন্তু বেলা ১১টার দিকে মেয়রপন্থি আওয়ামী লীগ কর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আজিমপুর রোডে ঢুকতে চাইলে শুরু হয় গ-গোল। ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান বলেন, ওই রোডে তাদের বিক্ষোভ সমাবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা ঢিল ছুড়তে শুরু করে। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পলাশীর মোড়ে দুই পক্ষের কয়েকটি মোটরসাইকেল জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বেলা ১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি ছিল থমথমে। এর মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে শুরু হয় ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ। এ সময় আজিমপুর এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আজিমপুর চৌরাস্তা, পলাশী, ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ এতিমখানা রোডের পুরো এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আজিমপুর চৌরাস্তায় পুলিশ অবস্থান করলেও ভেতরের রাস্তাগুলো দিয়ে পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে জানান একাধিক প্রত্যক্ষ্যদর্শী। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মেয়র সাঈদ খোকন এবং শাহে আলম মুরাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছে। গত ২৬ অক্টোবর মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে ওঠা নিয়ে দুই পক্ষের কর্মী সমর্থকরা হাতাহাতিতে জড়ালে দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্য রূপ পায়। এর জের ধরে ১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় মুরাদের সমর্থকদের সঙ্গে মান্নাফির অনুসারীদের ফের হাতাহাতি হয়। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর শাহে আলম মুরাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের অনুষ্ঠান করছি। সেখানে কেনই বা ডাস্টবিনের ময়লা দিয়ে আটকে দেওয়া হল, তারপর আবার কেন পুলিশের সাথে মারামারি করেছে- এটা বুঝতে পারছি না। সাঈদ খোকনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ঢাকা ২৬ নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিল হাসিবুর রহমান মানিককে ইঙ্গিত করে মুরাদ বলেন, ওখানকার এক কমিশনারসহ কিছু লোক পুলিশের সাথে মারামারি করেছে বলে আমি খবর পেয়েছি। এমনকি দীপুমনি আপার গাড়িতেও আঘাত করেছে। যারা আওয়ামী লীগ করে তারা কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। এ বিষয়ে হাসিবুর রহমান মানিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের কোনো লোকজন ওখানে মারামারি করতে যায়নি। আমাদের লোকজন আজিমপুর বাসস্ট্যান্ডে ছিল। দীপুমনি আপার গাড়িতে যারা ঢিল ছুড়েছে এবং ভাংচুর ও পোড়ানোর কাজ করেছে তারা উনাদের(মুরাদ) লোক। আমি ওয়ার্ড কমিশনার, আমার লোকজন কেন মারামারিতে যাবে? এর আগে মুরাদের অনুষ্ঠানস্থলের সামনে ময়লা ফেলার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি বলেন, ময়লার মালিক তো আর আমি না। অনেক সময় গাড়ির সঙ্কট থাকেৃ অনেক জায়গায় ময়লা জমে থাকে। হয়ত সরিয়ে নিয়ে যাবে। আসলে তারা বিরোধিতা করার জন্য বিরোধিতা করে। এর আগে হাতাহাতির দুটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মান্নাফি বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করেছে। ওঁরা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা, আমিও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা। এর প্রতিবাদে আমরা কর্মসূচি দিতেই পারি। তবে এ কর্মসূচিতে আমি যাচ্ছি না। নাগরিক সমাজসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা যাচ্ছেন। দুটি কর্মসূচি কীভাবে একইসঙ্গে অনুমতি পেল জানতে চাইলে পুলিশের উপকমিশনার ইব্রাহীম খান বলেন, শাহে আলম মুরাদের অনুষ্ঠান কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে। সেখানে অনুমতির প্রয়োজন নেই। আর দ্বিতীয়টি রাস্তায় হবে। সেজন্য আমাদের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এই এলাকায় কোনো রকম বিক্ষোভ করতে দেওয়া হবে না।

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর