December 10, 2023, 11:12 am

সংবাদ শিরোনাম
রংপুরের পায়রাবন্দে রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হলো রংপুরে মডেল মাল্টিপারপাস সমিতির সভাপতির পকেটে হতদরিদ্রদের সঞ্চয়ের টাকা ৮ কোটি, প্রাপ্তির আশায় গুড়ে বালি র‍্যাবের অভিযানে রাজশাহীর গোদাগাড়ী হতে ২০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার গ্রেপ্তার ০১ জন ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক মহানগর কমিটি অনুমোদন শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইস জালিয়াতির দায়ে ১৯ জনকে গ্রেফতার ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমে ১৭ জনের প্রাণহানি এক টুকরো কাপড় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে কারিমার মাদক সাম্রাজ্য, দেখার মতো কেউ নেই উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১৩ উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে দূর্বৃত্তদের গুলিতে যুবক খুন

অভিনন্দন আম্মি, আপনি আপনার মেয়ের জন্য ১৭তম জামাই পেলেন

অভিনন্দন আম্মি, আপনি আপনার মেয়ের জন্য ১৭তম জামাই পেলেন

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

সংগৃহীত

 

বিত্তশালী ও বৃদ্ধ আরব শেখরা কিশোরী বউয়ের খোঁজে ভারতের হায়দরাবাদকেই বেছে নিয়েছেন। এখানে তাঁরা অর্থের বিনিময়ে চুক্তিতে কিশোরীদের বিয়ে করেন। যৌন চাহিদা শেষ হলেই ফিরিয়ে দেন তাদের।

তাদেরই একজন ১৪ বছরের কিশোরী রেহানা। তার বাড়ি ভারতের হায়দরাবাদের নাশিমান নগরে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ২০০৪ সালে দুবাই থেকে আসা ৫৫ বছর বয়সী এক ধনী শেখের সাথে তাঁর বিয়ে দেন মা-বাবা। কিন্তু বিয়ের এক মাস পরই রেহানাকে রেলস্টেশনে ফেলে যান ওই শেখ। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাড়ি ফিরতে হয় তাঁকে।

রেহানার মতো সেখানকার অনেক কিশোরীর জীবনেই ঘটছে এমন দুর্বিষহ ঘটনা। এসব ঘটনায় হায়দরাবাদের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শাহীনের মতো আরও কয়েকটি সংস্থা এখন সোচ্চার হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে সংস্থাগুলো।

হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মুখপাত্র সুলতানা বলেন, বিপুল অর্থের বিনিময়ে অটোরিকশার চালক বাবা সিরাজ উদ্দিন ওই শেখের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুবাই থেকে আসা বৃদ্ধ ওই আরব শেখের সঙ্গে বিয়ের পর রেহানার জীবনে একের পর এক নেমে আসে আরও করুণ পরিণতি।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাড়ি ফেরার কিছুদিন পরই মা-বাবা কাতারের এক শেখের সঙ্গে আবার তাঁর বিয়ে দেন। এবার এই পাত্রের বয়স ৭০। আবার স্বামীর সঙ্গে সংসার করার স্বপ্নে বিভোর হন রেহানা। তাঁকে নিয়ে কাতারে উড়াল দেন ওই শেখ। কিন্তু এবারও স্বপ্ন ভঙ্গ। কাতারে গিয়ে কয়েক মাসের মাথায় অন্য এক শেখের কাছে রেহানাকে বিক্রি করে দেন তাঁর স্বামী। এরপর গত চার বছরে আরও ১৪ জন শেখের কাছে তাঁকে বিক্রি করা হয়।

এসব ঘটনায় একবার রাগে-অভিমানে মা মইন বেগমের মোবাইল ফোনে একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন রেহানা। ওই বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘অভিনন্দন আম্মি, আপনি আপনার মেয়ের জন্য ১৭তম জামাই পেলেন।’

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শাহীনের চেয়ারপারসন জামিলা নিশাত বলেন, ‘আগে এ ধরনের বাল্যবিবাহের কোনো তথ্য ছিল না। গত ১০ বছরে আমরা এ ধরনের প্রায় ৫০০টি ঘটনার তথ্য পেয়েছি। কিন্তু আমাদের ধারণা, এই সংখ্যা আরও ১০ গুণ বেশি হবে। গত বছরেই ১০০টি ঘটনার অভিযোগ আমরা পেয়েছি।’

গত কয়েক সপ্তাহে পুলিশ এসব ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যারা আরব শেখদের হায়দরাবাদে সহায়তা করছে, দালাল ও যেসব কাজি অর্থের বিনিময়ে কিশোরীদের বিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

গত ২০ সেপ্টেম্বর পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাতারের আটজন শেখ, একজন কাজি ও একটি হোটেলের মালিককে গ্রেপ্তার করে। এর এক সপ্তাহ পর হায়দরাবাদের প্রধান কাজিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর নির্দেশেই বিয়ে পড়ানো হয় বলে অভিযোগ।

হায়দরাবাদ পুলিশের উপকমিশনার (সাউথ জোন) ভি সত্যনারায়ণ বলেন, ‘২০১০ থেকে এ ধরনের মাত্র ৯টি মামলা নিবন্ধিত হয়েছে। উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার কর্মী ও পুলিশের উদ্যোগে এখন এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার মেয়েরা পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসা শুরু করেছে।’

প্রসঙ্গত, রেহানার এই দুর্বিষহ জীবনের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত চার দশকে শুধু যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য হায়দরাবাদের হাজারো কিশোরী আরব শেখদের চুক্তিভিত্তিক স্ত্রী হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বিত্তশালী শেখরা অর্থের বিনিময়ে চুক্তিতে তাদের কিনে নেন। শেখদের যৌন চাহিদা মিটে গেলে কিশোরীদের ফেরত দিতেন তাঁরা। কিন্তু সম্প্রতি অনেক মেয়ে শেখদের কাছে প্রতারিত হয়ে ফিরে এসে অভিযোগ দায়ের করায় বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। নড়ে বসেছে প্রশাসনও।

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর