March 19, 2024, 11:42 am

সংবাদ শিরোনাম
সিলেট তামাবিল মহাসড়কে ক্যারিক্যাব ও পিকআপের সংঘর্ষে নিহত ৫, আহত ৭ কুড়িগ্রামে ৩ শতাধিক রোগীদেরকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা প্রদান কুড়িগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রচারণায় পুলিশ সিংড়ায় চলনবিলে সরকারী খাল দখলমুক্ত হওয়ায় মাছ ধরলো শত শত মানুষ র‍্যাবের অভিযানে রাজশাহীর বানেশ্বরে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের সময় চক্রের মূলহোতা’সহ গ্রেফতার- ৩ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে লালমনিরহাট জেলা পুলিশের বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন তিস্তা ইউনিভার্সিটিতে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালন জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দলবদ্ধ হামলা লুটপাট ও ভাঙচুর, রমেকে ভর্তি র‍্যাবের অভিযানে জুয়া খেলার সরঞ্জাম, ফেন্সিডিল ও নগদ অর্থ উদ্ধার’ ০৮ পেশাদার জুয়ারী ও মাদকসেবী গ্রেফতার চিনিকলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বেতারের সাবেক শিল্পী নাজমুল ইসলামের ইন্তেকাল

সিলেট ওসমানী’র ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হুমকি, জরুরি ও বর্হিবিভাগের সেবাও বন্ধ করা হবে

খায়রুল আলম সুমন  সিলেট প্রতিনিধিঃ

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা দাবি পুরণে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলে এ সময়ের মধ্যে দাবি পুরণ না হলে বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগসহ ওসমানী হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন তারা। বুধবার বিকেলে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার শেষে এ ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।এর আগে দুপুরের দিকে ওসমানী হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা মেডিকেল সড়ক অবরোধ করেন। পরে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলা ও হাসপাতালের এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্চিতের প্রতিবাদ এবং দোষীদের আটকের দাবিতে সোমবার রাত থেকে আন্দোলন শুরু হয়। মঙ্গলবার পুলিশ, হাসপাতাল প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক হলেও কোন সমঝোতা হয়নি। মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হওয়ায় ওসমানী হাসপাতালের জরুরি ও হৃদরোগ বিভাগ ছাড়া সকল বিভাগে কার্যক্রম বন্ধ রাখেন ইন্টার্নরা। বুধবার সকাল থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। পরে তারা বিক্ষোভ করে দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। এসময় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি দেখা দেয়। পরে হাসপাতালের মূল ফটকও বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। ঘন্টাখানেক পর প্রশাসনের অনুরোধে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় তারা। এসময় কর্মবিরতি ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে ইন্টার্ন চিকিতসক পরিষদের সাধারন সম্পাদক ডা মতিউর রহমান জানিয়েছেন, আগামীকাল সকালের মধ্যে মূল আসামিরা আটক না হলে আমরা বহির্বিভাগ, জরুরি ও হৃদরোগ বিভাগসহ হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আন্দোলন করলেও হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, কিছু সমস্যা তো হচ্ছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বড় একটা রোল প্লে করে। এটা সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতেই। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যাবে।আন্দোলনকারীদের দাবি প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা জোরদার করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। হাসপাতালে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করা হচ্ছে। ইতোনধ্যে জায়গা চুড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়টি জানে।
তারা উপর থেকে কাজ করছেন। এখানকার ডিজি স্বাস্থ্য এবং ডিজি স্বাস্থ্য-শিক্ষাও খোঁজ রাখা হচ্ছে। পরিচালক আরও জানান, আমাদের আশা আসামিরা তাড়াতাড়ি আটক হবে এবং আমরা স্বাভাবিক কাজে ফিরে যাবো। বর্তমানে অন্যান্য ডাক্তার ও স্টাফ যারা আছেন, তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সুত্রে জানা যায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের)ল সঙ্গে গত রোববার দুপুরে এক রোগীর দুই স্বজনের বাগবিতণ্ডা হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এসময় ওই দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মীমাংসা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে সোমবার রাত ৮টার দিকে ইমন আহমদ ও রুদ্র নাথ নামে দুই শিক্ষার্থীর উপর কলেজের পেছনে হামলা হয়। আহত অবস্থায় তাদেরক উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন সহপাঠীরা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাত ১০টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা হাসপাতালের সব বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। এছাড়া কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। পরে রাত ১টার দিকে আন্দোলনরতের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মেডিকেল প্রশাসনের মামলা করাসহ পাঁচ দাবি জানান। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে রাত ৩টার দিকে ধর্মঘট ও অবরোধ স্থগিত করেন আন্দোলনরতা। তবে এসময় তারা হামলাকারীদের আটকের জন্য মঙ্গলবার বেলা ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বেলা ২ টার দিকে  আন্দোলনরতদের সঙ্গে কলেজ, হাসপাতাল, পুলিশ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ফের বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ইন্টার্ন চিকিৎসকের দাবিগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে হামলাকারীরা গ্রেপ্তাতর না হওয়ায় বৈঠক শেষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। পরে বিকেলে তারা কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তবে শুধু ইমার্জেন্সি ও হৃদরোগ বিভাগে সেবা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা। ২টি মামলার আসামিরা হলেন- দিব্য, আব্দুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি। আসামিদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে সাঈদ হাসান রাব্বি (২৭) ও এহসান আহমদকে সোমবার দিবাগত রাতে পুলিশ আটক করেছে।
Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর