March 28, 2024, 9:14 pm

সংবাদ শিরোনাম
মুন্সিগঞ্জ জেলার বৈখর এলাকা হতে ০৩টি দেশীয় অস্ত্র পাইপগান ফেনসিডিলসহ ০২ জন অবৈধ অস্ত্রধারী গ্রেপ্তার কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভূটানের রাজা ৭২ হাজার জাল টাকাসহ চক্রের সদস্য গ্রেফতার পটুয়াখালীতে শ্রমীক লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ সুন্দরগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামীসহ ৯ জুয়াড়ি গ্রেপ্তার র‍্যাব-৫, এর অভিযানে রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্তবর্তী দূর্গম চর হতে ১১০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার’ চিলমারীতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত রংপুরে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে কতৃপক্ষের ব্যাপক অভিজান পীরগঞ্জের ১৫টি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ, মামলার রায় পেয়েও ১৭ মাস ধরে অবরুদ্ধ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলে কাটা পড়ে কিশোরীর মৃত্যু

সংলাপ না হলেও গণভবনে কথা বলার সুয়োগ থাকবে: ওবায়দুল কাদের

সংলাপ না হলেও গণভবনে কথা বলার সুয়োগ থাকবে: ওবায়দুল কাদের

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

 

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ফের সংলাপ নিয়ে আলোচনার মধ্যে আগামি ২ ফেব্রুয়ারি গণভবনে আমন্ত্রণ পেয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে সংলাপ না হলেও সেখানে কথা বলার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ভোটের ফল প্রত্যাখ্যানকারী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি ফের সংলাপ চাইলে তা হচ্ছে না বলে আগেই জানিয়েছিলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ‘শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রে’ বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানালেও তারা যাবে না জানিয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ২ ফেব্রুয়ারি ঐক্যফ্রন্টসহ ৭৫টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারা কেন আসবেন না এটা তাদের ব্যাপার। তবে তারা আসতে পারেন। এটা একটা গার্ডেন পার্টি। জাস্ট ভিউজ এক্সচেঞ্জ (শুধু মতামত বিনিময়) করতে পারেন তারা। প্লেজেন্টলি এক্সচেঞ্জই (শুভেচ্ছা বিনিময়) মূলত প্রোগ্রাম, আর একটু চা-টা খাবেন একসঙ্গে। ফাঁকে ফাঁকে কথা বলা যাবে। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো সংলাপ নয়। শুভেচ্ছা বিনিময়ে করতে গিয়েওতো অনেক কথা বলা যায়। তবে দেখুন এই নির্বাচন ভালো গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহও দেখিয়েছেন। ফলে বিএনপি কেন বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে এটা বোধগম্য নয়। অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। ভারত, চীনের পাশাপাশি সার্কভুক্ত দেশগুলো অনেক আগেই শুভেচ্ছা জানিয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বিএনপি যে চেষ্টাটা করছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, সেটাতে কিন্তু তারা ফেল করেছে। তাদের এই অপচেষ্টা সফল হয়নি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ সারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে তারা চিঠি লিখেছে। তাতে কেউ সাড়া দেয়নি। উল্টো সবাই নির্বাচিত সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তারা (বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট) যে ক’টা আসনই পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, তাদের সংখ্যা কত সেটা আমরা দেখবো না। তারা যদি কোনো যুক্তিসংগত কোনো বিষয় সংসদে উপস্থাপন করে, তাহলে আমরা সেটা বিবেচনা করবো। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা নির্বাচনের আগে দুই দফা সংলাপ করেছি। ফলে তাদের আমরা আগেও গুরুত্ব দিয়েছি। এখানে তারা এলে আলাপ আলোচনা হতে পারতো। কিন্তু তারা যেভাবে বিষয়টিতে রিঅ্যাক্ট করেছেন, সেটা তাদের স্বভাবসুলভ নেতিবাচক রাজনীতি। এই সরকারের অধীনে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি যাবে না বলে দলটির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, এটাই তাদের শেষ কথা কিনা তা আমি জানি না। তারা আসুক, সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সব সহযোগিতা থাকবে। তারা নির্বাচনে না এসে ভুল করবেন, নাকি সঠিক করবেন সেটা তাদের বিষয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও বিএনপি ছাড়াই সংসদ শুরু হচ্ছে- বিষয়টিকে কিভাবে দেখছে ক্ষমতাসীন দল। এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে। তারা যদি অংশ না নেয় তাহলে আমরা কি তাদের জোর করে আনবো? বিএনপিতো গেলো পাঁচবছরও সংসদে ছিল না। সংসদ চলেনি? পৃথিবীর কোন দেশে ‘পারফেক্ট’ নির্বাচন হয়েছে? এমন প্রশ্ন ফের তুলে কাদের বলেন, বাঘা বাঘা দেশেও নির্বাচন নিয়ে কথা উঠেছে। ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। সেটা ব্যাপার নয়। সেটাতে বৈধতার কোনো সংকট নেই। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আপনার বইয়ে লিখেছেন একসঙ্গে দুইবার এই দেশে কোনো দলই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আপনার বইয়ে এমন একটি কথা কয়েক বার এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলো, তাহলে আপনার ভবিষ্যৎবাণী কি ভুল? এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, দৃশ্যপট সবসময় এক থাকে না। আমি যখন লিখেছি তখন প্রেক্ষাপট তেমনই ছিল। এটাতো জনমতের উপর নির্ভর করে। জনমত যখন পাল্টে গেছে তখন পরিস্থিতিতো পাল্টাতে পারে তাই না? দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির আহ্বানের প্রেক্ষাপটে এবার ভোটের আগে গত অক্টোবরে আকস্মিকভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের তিন দফায় আলোচনার সুযোগ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী; তাতে বিভিন্ন আশ্বাস পাওয়ার কথা জানিয়ে ভোটে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পর ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলে ফের রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকতে প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে এবার গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময়ের অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কথা বিএনপি নেতারা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের নেতিবাচক রাজনৈতিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেন¿ী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপির অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বিনিময়ে দলটি এলে অনেক বিষয়ে আলোচনা হতে পারত, না আসা নেতিবাচক রাজনীতি। এ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, এটায় তারা কেন আসবেন না, সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা তো তাদের বাদ দিয়ে অন্যান্যের আমন্ত্রণ জানাতে পারি না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। সব দেশেই তারা চিঠি লিখেছেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে তাতে তো কেউ সায় দেয়নি। সবাই নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচিত সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি কত আসন পেয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, তাদের সংখ্যা কত সেটা আমরা দেখব না। তারা যদি যুক্তিসঙ্গত কোনো বিষয় সংসদে উত্থাপন করে, সেটা আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করব। সংসদে আনতে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলবেন কি না- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কাদের বলেন, সংসদে যোগ দেওয়া গণতন্ত্রের অধিকার, কেন ফোন দেব। তিনি অধিকার বলে সংসদে আসবেন। সংসদ সদস্য (এমপি) পদে নির্বাচিত হলেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শপথ না নেওয়ার অবস্থানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল কারও দয়ায় নির্বাচিত হননি। তিনি সংসদে না গেলে নিজেকে বঞ্চিত করবেন। ভোটারদের বঞ্চিত করবেন। ‘সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতে মির্জা ফখরুলকে সংসদ আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন করবেন কি-না’- এমন একটি প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেন সেতুমন্ত্রী। ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল কারও দয়ায় নির্বাচিত হননি। তিনি তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই সংসদে গিয়ে অধিবেশনে যোগ দেওয়া তার অধিকার। তিনি সংসদে না গেলে নিজেকে বঞ্চিত করবেন। ভোটারদের বঞ্চিত করবেন। এটা গণতান্ত্রিক চর্চার বিরুদ্ধাচরণ। আর বিএনপি সেক্রেটারি যদি বলেন পক্ষপাতমূলক নির্বাচন হয়েছে। তাহলে তিনি কি পক্ষপাতমূলকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন? তিনি কিভাবে নির্বাচিত হলেন? তিনি কারও দয়ায় নির্বাচিত হয়নি। এটা তার অধিকার। তাকে ফোন করে আনতে হবে কেন? জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের দুই এমপির শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঐক্যফ্রন্টের দুই এমপির শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। এটাকে আমি ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছি। এটাতো ভালো। তারা সংসদে এলে অবশ্যই আমরা স্বাগত জানাবো। আমরা চাই তারা আলোচনা করবেন। বিতর্কে অংশ নেবেন। তারা যতোই সমালোচনা করবেন ততোই গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র এক চাকার সাইকেল নয়। এটি দুই চাকার বাইসাইকেল। সংসদে বিরোধীপক্ষ শক্তিশালী হলে গণতন্ত্র মজবুত হয়। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণফোরামের দুজন সংসদ সদস্য শপথ নিতে পারেন বলে শুনেছি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের আগামি ২ ফেব্রুয়ারি গণভবনে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জোটের স্টিয়ারিং কমিটির সব সদস্যের কাছে আলাদা আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়।

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর