মোঃ ইকবাল হাসান সরকারঃ
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার ১ বছর অতিবাহিত হলেও ওই মামলার ২ আসামি এখনও তাদের শরীরে ঘটনার সময়কার গুলি বহন করে চলছে। আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ওই দুজনের শরীরে গুলি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে এ বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রতিবেদন দিয়েছেন। এ ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে তাহলে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনার সময় এ দুজনকে কারা গুলি করেছিল।
গুলিবিদ্ধ শাহেব আলী (৩০) শাহজাদপুরের মনিরামপুর এলাকার হাজী আজাহার আলীর ছেলে এবং জহির আলী (৩২) একই এলাকার তোরাজ আলীর ছেলে। তারা বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনার পর মেয়রের বাড়িতে হামলার ঘটনায় তার স্ত্রী লুৎফুন নেছা পিয়ারীর দায়ের করা মামলায় এ দুজনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
মেয়রের স্ত্রীর মামলার আইনজীবি সিনিয়র এ্যাড: রফিক সরকার জানান, চলতি বছরের ৩০শে জানুয়ারি বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে শাহজাদপুর উপজেলা আমলী আদালতের বিচারক মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে শাহেব আলী ও জহির আলীর শরীরের গুলি আছে কি না, তা পরীক্ষা করানোর জন্য সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন।
এরপর সিরাজগঞ্জ শহীদ এম, মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (সার্জন) ডা: আব্দুর রব্বান তালুকদারকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। এই বোর্ডের চিকিৎসকরা শারীরিক পরিক্ষা করে আহতদের শরীরে গুলি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন। এদের মধ্যে শাহেব আলীর ২ উরু ও ২ পায়ের পিছন দিকে অনেকগুলো সররা গুলি এবং জহির আলীর বাঁ পায়ের পাতার তলদেশে একটি সররা গুলি বিদ্যমান রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন।
বাদির আইনজীবি আরও বলেন, সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ওই মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন আজ (মঙ্গলবার) শাহজাদপুর আমলী আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বিচারক মো: হাসিবুল হক প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে ২রা এপ্রিল শুনানীর দিন ধার্য্য করেছেন। শুনানীর দিন আদালতের অনুমোদনক্রমে আহতদের অপারেশন করে শরীর থেকে গুলি বের করার পর ওই গুলি গুলো ফরেনসিক ব্যালেষ্টিক পরীক্ষা করানোর জন্য আবেদন করা হবে বলে বাদির আইনজীবি আরও জানিয়েছেন।
এদিকে গুলিবিদ্ধ শাহেব আলী দাবী করেছেন, নিহত সাংবাদিক শিমুলের মাথা থেকে যে গুলি বের করা হয়েছে এবং আমাদের শরীরে যে গুলি আছে তা বের করে পরীক্ষা করলেই সাংবাদিক শিমুল কার গুলিতে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মেয়রের ছোট ভাই হাফিজুর রহমান পিন্টু জানান, মেয়রের বাড়িতে হামলা ও সংঘর্ষের সময় সাংবাদিক শিমুল গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি আমাদের পক্ষেরও ৪জন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিল। এদের মধ্যে হুমায়ন ও কালু ইতোমধ্যেই তাদের শরীর থেকে গুলি বের করেছে এবং শাহেব আলী ও জহির আলীর শরীরের এখনও গুলি বিদ্যমান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকাকালে পুলিশ শাহেব আলীকে গ্রেপ্তার করে এবং জহির পরবর্তিতে আদালতে স্বেচ্ছায় হাজিরা দেয়। তারা বর্তমানে জামিনে রয়েছে।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৭ফ্রেরুয়ারী২০১৮/ইকবাল