March 29, 2024, 11:47 am

সংবাদ শিরোনাম
মুন্সিগঞ্জ জেলার বৈখর এলাকা হতে ০৩টি দেশীয় অস্ত্র পাইপগান ফেনসিডিলসহ ০২ জন অবৈধ অস্ত্রধারী গ্রেপ্তার কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভূটানের রাজা ৭২ হাজার জাল টাকাসহ চক্রের সদস্য গ্রেফতার পটুয়াখালীতে শ্রমীক লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ সুন্দরগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামীসহ ৯ জুয়াড়ি গ্রেপ্তার র‍্যাব-৫, এর অভিযানে রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্তবর্তী দূর্গম চর হতে ১১০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার’ চিলমারীতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত রংপুরে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে কতৃপক্ষের ব্যাপক অভিজান পীরগঞ্জের ১৫টি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ, মামলার রায় পেয়েও ১৭ মাস ধরে অবরুদ্ধ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলে কাটা পড়ে কিশোরীর মৃত্যু

ফারুক আহমেদকে হত্যা করেছে এমপি রানাসহ তার চার ভাই

প্রাইভেট ডিটেকটিভ ডেস্কঃ

আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদকে কুখ্যাত খান পরিবারের চার সন্তান এমপি রানা ও তার ভাইয়েরাই হত্যা করেছে বলে জেরার সময় মামলার বাদী নাহার আহমেদ আদালতে বলেন।

বুধবার মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।

এ সময় মামলার প্রধান আসামি এমপি রানা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে সকালে কাশিমপুর কারাগার থেকে কড়া পুলিশি প্রহরায় আদালতে নিয়ে আসা হয়।

জেরার সময় বাদী নাহার আহমেদ আদালতে বলেন, ২০১২ সালে টাঙ্গাইল-৩ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে রানা বিদ্রোহী প্রার্থী হন। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে রানার কয়েকজন কর্মীকে অস্ত্রসহ পুলিশ আটক করে। রানা আটককৃত ওই কর্মীদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে ফারুক আহমেদকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ফারুক আটককৃতদের ছাড়ানোর চেষ্টা না করায় রানা ও তার ভাইয়েরা ক্ষুব্ধ ছিলেন তার ওপর।

জেরার একপর্যায়ে আমানুরের আইনজীবী আব্দুল বাকী মিয়া ফারুক আহমেদের সঙ্গে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তমের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক বিরোধ, ফারুক চরাঞ্চলে দুটি স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালনকালে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার লোকজনের সঙ্গে বিরোধের বিষয় তুলে ধরেন।

তিনি নাহার আহমেদের কাছে জানতে চান এসব কারণে ফারুক আহমেদ খুন হয়েছেন কিনা।

জবাবে নাহার আহমেদ বলেন, সব মিথ্যা কথা। আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। কিন্তু মৃত্যু একদিন হবেই। তাই কাউকে ভয় করি না। শেষ নিঃশ্বাস নেয়া পর্যন্ত খুনিদের বিচার চেয়ে যাব।

টাঙ্গাইল কোর্ট পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে মাইক্রোবাসযোগে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে বুধবার দুপুর ১২টায় টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আনা হয়।

দুপুর সোয়া ১২টায় বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এই মামলার কার্যক্রম শুরু করেন। মামলার বাদী নাহার আহমেদকে আমানুরের আইনজীবীরা প্রায় এক ঘণ্টা জেরা করেন। মামলার আরও দুই সাক্ষী নিহত ফারুক আহমেদের ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনের হাজিরা আদালতে দাখিল করা হয়।

পরে আদালত বাদীর জেরা গ্রহণের পর আগামী ৯ মে জেরার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

মামলার প্রধান আসামি এমপি রানা ছাড়াও টাঙ্গাইল কারাগারে থাকা আরও তিন আসামি মোহাম্মদ আলী, আনিছুর রহমান রাজা ও মো. সমিরকে আদালতে হাজির করা হয়।

এছাড়া জামিনে থাকা আসামি নাসির উদ্দিন নুরু, মাসুদুর রহমান মাসুদ ও ফরিদ আহম্মেদ আদালতে হাজিরা দেন।

আদালতের কার্যক্রম শেষে দুপুরেই এমপি রানাকে কড়া পুলিশ প্রহরায় কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত থেকে জেরা শেষে কাশিমপুর কারাগারে রওনা হওয়ার সময় রানা উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবার টাঙ্গাইলের নোংরা রাজনীতির শিকার।’

দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর রানা গত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতেই আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার-১ আছেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে আবেদন করেও তিনি জামিন পাননি ।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এই হত্যায় এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।

এই মামলায় এমপি রানা ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪ জন আসামি রয়েছেন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

 

 

 

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৮এপ্রিল২০১৮/ইকবাল

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর