March 28, 2024, 6:36 pm

সংবাদ শিরোনাম
র‍্যাব-৫, এর অভিযানে রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্তবর্তী দূর্গম চর হতে ১১০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার’ চিলমারীতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত রংপুরে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে কতৃপক্ষের ব্যাপক অভিজান পীরগঞ্জের ১৫টি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ, মামলার রায় পেয়েও ১৭ মাস ধরে অবরুদ্ধ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলে কাটা পড়ে কিশোরীর মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ওয়ার্ল্ড ভিশনের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান ভোলা বোরহানউদ্দিনে নানা আয়োজনে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হলো নবাবগঞ্জে মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টারের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সিলেটে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ করেছে জমিয়ত সুন্দরগঞ্জে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপণ

তানোরে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যে সারের বেশি দাম ভুক্তভোগী কৃষক!

সোহানুল হক পারভেজ,তানোর (রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর তানোরে বিসিআইসি’র সারডিলার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন্যে এমওপি (পটাশ) সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এনিয়ে আগাম জাতের আলু চাষিরা (কৃষক) ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায় পড়েছেন। ফলে নিরুপাই হয়ে তানোর পাঁচান্দর ইউপি যোগীশো গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম,  এলাকার জিওল-চাঁদপুর গ্রামের কৃষক ওমর হাজী, আব্দুল গণি ও আব্দুল গাফ্ফার ন্যায্যমূল্যে সার প্রাপ্তির দাবিতে  উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন। প্রতি মৌসুমের ন্যায় সম্প্রতি  কিন বীজ ও জমি প্রস্তুত থাকলেও এমওপি (পটাশ) ও ডিএপি সার সংকটে ধানের বীজের চারা রোপন করতে পারছেন না তারা। তবে, দুয়েকজন কৃষক বিভিন্ন কৌশলে বেশি দামে সার সংগ্রহ করে  চারা রোপন করছেন। কিন্তু প্রায় কৃষক কোন অবস্থায় সার সংগ্রহ করতে পারেননি।
ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।কৃষক আব্দুল গাফ্ফার জানান, আলুর জমিতে যখন সার প্রয়োগের সময় তখন ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অধিক মুনাফার আশায় এমওপি ও ডিএপি সার মজুদ করে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি দেখান। ফলে কৃষকদের মধ্যে সার নিয়ে হাহাকার শুরু হয়। এসুযোগে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তায় ডিএপি সারের দাম নেয়া হচ্ছে ১১০০ থেকে সাড়ে ১২০০ টাকা। আর এমওপি (পটাশ) সারের দাম নেয়া হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১১শ টাকা। সরকারি মূল্যের চেয়ে এভাবে বেশি দামে সার বিক্রি করে অধিক মুনাফা আদায় করছেন ডিলাররা। কিন্তু প্রান্তিক কৃষকরা ডিলারের চাহিদা মত টাকা না দিলে সার নেই বলে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে অনেকেই বাধ্য হয়ে অধিক মূল্যে এমওপি ও ডিএপি সার ক্রয় করছেন।কৃষকদের অভিযোগ, খোলাবাজারে ইউরিয়া টিএসপি সার পাওয়া গেলেও পটাশ ও ডিএপি সার  মিলছে না। ডিলারদের কাছে এসব সার কিনতে গেলে তারা সাপ্লাই নেই বলে ডিএপি’র বদলে টিএসপি সার নেয়ার জন্য কৃষকদেরকে বাধ্য করছেন। এছাড়াও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে, চলতি মৌসুমে কৃষি কর্মকর্তা ডিলারদের মধ্যে বরাদ্দ সার বিভাজনের পরিমান জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে সার মনিটরিং কমিটির কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ না থাকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।এই সিন্ডিকেটের সাথে সরাসরি তানোর গোল্লাপাড়া বাজারের প্রাইম ট্রের্ডাস প্রোপাইটার প্রণব সাহা, কামারগাঁ বাজারের বিকাশ চন্দ্র, মোল্লা ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার মোহাম্মাদ আলী বাবু ও সুমন ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার সুমন শীল জড়িত থেকে তানোর পৌর এলাকা ছাড়াও কামারগাঁসহ পুরো উপজেলায় এমওপি ও ডিএপি সার সংকট সৃষ্টি করছেন। এছাড়াও ওই অসাধু ডিলাররা বাফা’র গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নীচে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা গুণাগুণ নষ্ট হওয়া সার কম দামে কিনে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করছেন।এব্যাপারে উপজেলা সারডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মাদ আলী বাবু বলেন, সিন্ডিকেট নয় এমওপি (পটাশ) সার এখন সরবরাহ নেই। কিন্তু ডিএপির বদলে টিএসপি দিয়ে কৃষকদের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে বেশি মূল্যে নয়, সরকার নির্ধারিত মূল্যে সব ধরণের সার বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর তানোর উপজেলায় টানা প্রায় ২০ দিনের অধিক বৃষ্টি না হওয়ায় পুকুর বা খালের পানি দিয়ে কোনরকম চাষাবাদ করছে কৃষকরা। আর যেসব কৃষক বিএমডিএর আওতাধীন গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে আবাদ করছেন। তাদের একদিন পরপরই জমিতে পানির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ফলে সময়মত পানি সব কৃষক পাচ্ছে না।
সময়মতো বৃষ্টি না হলে পানি সংকটের কারণে আমন ক্ষেত হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ফলে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তানোর উপজেলার পাঁচান্দ ইউপির যোগীশো গ্রামের রবিউল ইসলাম জানান, পুরো আষাঢ় মাস শেষ হয়ে গেল আকাশের কোন বৃষ্টি নেই পানি ছেঁচ দিয়ে যেটুকু আবাদ করে ছিলাম তাও শুকিয়ে গেছে ‌‌‌‌‌‌‌, টানা প্রায় ২০ দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় আমার ধানের জমিতে পানি শুকিয়ে জমি ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। ডিপ-টিউবওয়েল থেকে পুরো জমিতে পানি দিয়ে তা কভার করা সম্ভব হচ্ছে না বাকি জমি সব পড়েই আছে কি হবে জানিনা। একদিন পর পর জমিতে পানির প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে বৃষ্টির পানি ছাড়া ফসল বাঁচানো অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে জানান এই কৃষক।
তানোর উপজেলার আমশো গ্রামের কৃষক মামুন মোল্লা জানান, বৃষ্টির কারণে আমরা আবাদ শুরু করতে পারিনি। আমাদের সব জমি ডিপ-টিউবওয়েলের আওতায় না হওয়ার কারনে বেশকিছু জমি আবাদ শুরু করতে পারিনি। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি কখন বৃষ্টি হবে তখনই আবাদ শুরু করবো।
তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহমেদ  বলেন,এবার তানোরে প্রায় ২২ হাজার ৬শত হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ এর লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে এমন অনাবৃষ্টি চলতে থাকলেও এক সপ্তাহের মধ্যে জমিতে আবাদ ব্যাহত হবে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা হচ্ছে এবং সার ডিলাররা নির্ধারিত মূল্য বেশি নিলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।তিনি আরে বলেন,তানোরে টানা ২০ দিন বৃষ্টি নাই ফলে কৃষকরা সময়মত আবাদ শুরু করতে পারেনি। আমরা বিএমডিএর সাথে কথা বলেছি কৃষকদের ঠিক মত যাতে পানি সরবরাহ করে। অনাবৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত ফসলের বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি । আগামী সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আশাকরা যায় অতিদ্রুত পানির সমস্যা কেটে যাবে।
Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর