চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বন্যা ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র্র নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চিলমারী মহিলা ডিগ্রী কলেজে চলমান আশ্রয় কেন্দ্রনির্মাণ কাজে মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট ব্যবহার করেই চলছে ঢালাইয়ের কাজ। যার কারণে দেয়াল ধসে পড়েছে সম্পূর্ণ নির্মাণের আগেই। এছাড়াও ইট, বালু ও সিমেন্টের ব্যবহারও প্রয়োজনের তুলনায় কম দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারের লোকজন তাদের হুমকি-ধামকি এমনকি চাঁদাবাজির মামলাও দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে তাদের গোডাউনে দেখা মেলে ১৫০ বস্তা মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট। মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট এখানে কেন জানতে চাইলে ম্যানেজার অকপটে স্বীকার করেন এগুলি দিয়ে আর কাজ হচ্ছে না আমরা এগুলো ফেরত পাঠাবো, কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ এই মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট দিয়েই কাজ চালাচ্ছেন তারা।
গত রমজান মাসে মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট দিয়ে ছাদ ঢালাই করছিল ঠিকাদারী প্রতষ্ঠানের কর্মরত মিস্ত্রিরা। এসময় স্থানীয়রা বাঁধা দিলে ম্যানেজার তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করলে ২ জনকে গ্রেফতার করেন চিলমারী মডেল থানা পুলিশ। এছাড়াও ৫/৬ জনের নামে মামলা চলমান রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই এমন অনিয়ম চালাচ্ছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। তবে এসব অনিয়মের বিষয় কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কোহিনুর রহমান।
জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের অধিনে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বন্যা প্রবন ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ (৩য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পে ৩,১৭,১৯,১০৩,৬৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে চিলমারী মহিলা ডিগ্রী কলেজে আশ্রয়ন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। গত ২৯/০৭/২০১৯ থেকে কাজ শুরু হয়ে ২৩/০১/ ২০২১ এ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটি মা জেবি।
সরেজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসী ডেমনার পাড় গ্রামের সুপ ইয়ান এর সাথে কথা বলে জানা যায়, সিমেন্ট কম ও ড্যামেজ সিমেন্ট দিয়ে দেয়াল নির্মাণের পর দেয়াল ধসে পড়ে গেছে এবং নিম্নমানের ইট দিয়ে দেয়াল তৈরী করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটি মা জেবির সাথে একাধিকবার কথা বলার চেষ্ঠা করলে তারা কথা বলতে নারাজ।