-
- অপরাধ, সারাদেশে
- কিশোর-কিশোরীর ক্লাবের টাকা লুট করেছে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা
- আপডেট সময় June, 8, 2021, 9:24 pm
- 142 বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে উপজেলার কিশোর কিশোরী ক্লাবের আবাবপত্র কেনার টাকা এবং শিক্ষার্থীদের নাস্তার টাকা হরিলুট করার। ২০২০ -২১ অর্থ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আসবাব পত্রের টাকা বরাদ্দ হলেও এখন পর্যন্ত আসবাব ক্রয় করেননি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জিন্নাতারা ইয়াসমিন।
অভিযোগ এ সকল বরাদ্দের টাকা পকেটস্ত রেখেছেন তিনি। এছাড়া কিশোর কিশোরীর জন্য বরাদ্দ নাস্তার টাকাও আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অপরদিকে ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটার, আবৃত্তি ও সঙ্গীত শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা প্রদান না করে আটকে রেখেছেন তিনি।
এ বিষয়ে নিয়ে জেন্ডার প্রমোটার এবং আবৃত্তি ও সঙ্গীত শিক্ষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট উপস্থিত হয়ে অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করা হয়। এসব ক্লাব ইউনিয়নের সুবিধাজনক একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপন করে কিশোর- কিশোরীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি, গান ও আবৃত্তি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রতিটি ক্লাবে তালিকাভূক্ত ৩৫ জন কিশোর-কিশোরী সপ্তাহে একদিন করে প্রশিক্ষন গ্রহণ করে থাকে। আর এসব প্রশিক্ষন দেয়ার জন্য উপজেলায় ৩ জন জেন্ডার প্রমোটার, প্রতিটি ক্লাবের জন্য ১ জন আবৃত্তি ও ১জন সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জেন্ডার প্রমোটার পদের জন্য দুই ক্লাসের বিপরিতে ২ হাজার টাকা এবং আবৃত্তি ও সঙ্গীত শিল্পীদের জন্য প্রতি সপ্তাহের ক্লাসের জন্য ৫শ টাকা সম্মানী ধরা হয়। সে সম্মানীর বরাদ্দ আসলেও নিয়মিত না দিয়ে উত্তোলন করে নিজের কাছে রাখেন তিনি।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে প্রতিটি ক্লাবে ৩৫জন কিশোর-কিশোরীদের বিপরিতে জনপ্রতি ৩০ টাকা করে মোট ৮হাজার ৪শ টাকা নাস্তার বরাদ্দ দেয়া থাকলেও জনপ্রতি ১০ টাকার উপরে নাস্তা দেয়া হয়না।
অপরদিকে প্রতিটি ক্লাবে একটি প্লাষ্টিক ম্যাট, একটি হোয়াইট বোর্ড, ২টি চেয়ার, একটি সাইনবোর্ড, একটি ফাইল কেবিনেট ক্রয়ের জন্য ২১হাজার করে ১৫টি ক্লাবে মোট ৩লাখ ১৫হাজার টাকা বরাদ্দ আসলেও এ সবের কোনো কিছুই দেননি তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদেরকে প্রতি সপ্তাহে একটি করে ৫ টাকা দামের বিস্কুট অথবা একটি পাউরুটি সাথে একটি কলা দেয়া হয়। এসবরে দাম ১০ থেকে ১৫ টাকার বেশি হতে পারে না।
সন্তোষপুর কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সঙ্গীত শিক্ষক আবু হানিফ, পূর্ণ চন্দ্র, আব্দুল বারেক, স্মৃতি সেন, মীরা সাহা, আবৃত্তি শিক্ষক তাপস কুমার, সৌমিক, নাজমুল ইসলাম বলেন, তার ক্লাবটি ১নং ভোটের হাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে কোন সাইনর্বোড বা আসবাব পত্র নেই। বিদ্যালয়টির চেয়ার টেবিল ব্যবহার করছেন তারা। জেন্ডার প্রমোটার মমতাজ বেগম, সানোয়ারা পারভীন আবু আতা আব্দুল্লাহ ডিফেন্স বলেন, ফেব্রয়ারি ও মার্চ মাসের সম্মানী ভাতার টাকা বরাদ্দ আসলেও এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। করোনাকালে আমরা অনেক কষ্টে আছি।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জিন্নাতারা ইয়াসমিন মোবাইল ফোনে জানান, আসবাবপত্র নাই, নাস্তা কম কিংবা সম্মানী ভাতা দেয়া হয়নি এসব নিয়ে অনেক কিছু ঘটেছে বা বিষয় আছে। আপনি অফিসে আসেন বসে কথা বলবো। এসব কথা এখন বলা যাবে না।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম জানান, কিশোর- কিশোরী ক্লাবের বরাদ্দের হিসাব নিকাশ মহিলা বিষয়ক অফিস ভালো বলতে পারবে। আমার এখানে কোন হিসাব বা বরাদ্দের কপি আসে না। আর সম্মানী ভাতা নিয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দাবী আইবিয়াসের সমস্যার কারনে টাকা আসে নাই। বিষয়টি এ পর্যন্তই আছে।
উল্লেখ্য, কিশোর- কিশোরীদের মানষিক বিকাশ, জেন্ডার সচেতনতা সৃষ্টি, গান ও আবৃত্তি প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ২০১৯ সালের নভেম্বরে এসব ক্লাব স্থাপন করা হয়।
এ জাতীয় আরো খবর