এমবিবিএস পাস করে ডাক্তারি নয়, পেশা অস্ত্র ব্যবসা!
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
লেখাপড়া করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। এমবিবিএস পাসও করেছেন। কিন্তু চিকিৎসা পেশায় না থেকে জড়িয়েছেন অস্ত্র ব্যবসায়; আর তার এই কাজে সহযোগী স্ত্রী। ডাক্তারি পাস করে অস্ত্র ব্যবসায়ী বনে যাওয়া জাহিদুল আলম কাদির ও তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে গ্রেফতারের পর তাদের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডজন খানেক বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র আর বিপুল পরিমাণ গুলি।
গ্রেফতারের সময়ও দুইজনের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পয়েন্ট ২২ বোরের রাইফেল তিনটি, পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেল একটি, পয়েন্ট ৩২ বোরের রিভলবার চারটি, পয়েন্ট ২২ রিভলবার একটি, ৭.৬৫ পিস্তল পাঁচটি ও পয়েন্ট ২৫ পিস্তল একটি। গুলির মধ্যে রয়েছে পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেলের ১১০টি, পয়েন্ট ২২ রাইফেলের এক হাজার ১০০টি, পয়েন্ট ৩২ রিভলবারের ৩৫৮টি ও পয়েন্ট ২৫ পিস্তলের ৫৪টি।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, কাদির ২০০২ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছেন। কিন্তু তিনি তার পেশায় নিয়েজিত না থেকে অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। মনিরুল জানান, গত ১৫ মে কাদির দুইটি বিদেশি পিস্তলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। পরে রিমান্ডে তিনি স্ত্রীর কাছে অস্ত্র থাকার কথা জানান। তার তথ্যের ভিত্তিতেই গাবতলী থেকে ৩ জুন মাসুমা আক্তারকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেফতার করা হয়। মাসুমাকে রিমান্ডে আনার পর তিনিও কাদিরের কাছে আরো অস্ত্র থাকার কথা জানান। পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, মাসুমার কাছ থেকে তথ্য পেয়ে কাদিরকে আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগার থেকে ফের রিমান্ডে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে অস্ত্রের মজুদের কথা জানায়। কাদিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার ময়মনসিংহের বাঘমারা এলাকার ফ্ল্যাট থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ১২টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অস্ত্রগুলো স্টিল কেবিনেটে বিশেষভাবে রাখা ছিল।
জাহিদুল আলম কাদির ডাক্তার হলেও কখনো প্রাকটিস করতেন না জানিয়ে সিটিটিসি কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, তার বাড়ী কুষ্টিয়া হলেও ময়মনসিংহে একটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকতেন। তার প্রথম স্ত্রীও ডাক্তার ছিলেন। কিন্তু স্বামীর এসব কাজে সমর্থন না করায় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে মাসুমাকে বিয়ে করে তার সহযোগিতায় অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন জানিয়ে মনিরুল ইসলাম জানান, কাদিরের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের যোগসাজস রয়েছে। বিশেষ করে জেলা পর্যায়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলোর সাথে তার অস্ত্র ব্যবসা সংক্রান্ত সংযোগ বেশি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করে তা বিক্রি করাই কাদিরের পেশা। আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে তার বেশ ভাল ধারণাও আছে। অস্ত্রের আকার পরিবর্তন, মেরামতসহ অস্ত্রচালনায়ও পারদর্শী কাদির। জিজ্ঞাসবাদে কাদির বেশ কিছু অস্ত্র বিক্রেতার নাম বলেছেন জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, কাদিরের বক্তব্য যাচাই করা হচ্ছে। কোন বৈধ ব্যবসায়ী জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।