March 20, 2023, 5:04 am

সংবাদ শিরোনাম
দীর্ঘ সেশনজটের কবলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ পুলিশ সদস্য গ্রেফতার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দূর্নীতির তেলেছমাতি ৪৫০ কোটি টাকা টেন্ডার অনিয়ম নোম্যান্সল্যান্ডে আবারো কাটা তারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা বিএসএফের,বিজিবির বাঁধা মোংলা ইপিজেডে অগ্নিকাণ্ড এসকেভেটোর দিয়ে সরানো হচ্ছে পুড়া স্তুপ কুতুবদিয়ায় চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ এর বিশেষ অভিযানে জলদস্য প্রধান মোশারফসহ ২ জন আটক ৮ টি অস্ত্র উদ্ধার বেচেঁ থাকাই যেখানে সংগ্রাম শফিকুল সফুরা দম্পতির উলিপুরে ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপহার পেল শীতার্ত মানুষ রাজাপুরে জেলেদের মাঝে ছাগল বিতরণ

স্কুল বন্ধ রেখে প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিয়ের দাওয়াতে গেলেন তিন উপজেলার শিক্ষক কর্মকর্তারা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
প্রাথমিকও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ছেলের বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠান। এ
উপলক্ষে রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী ও
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সেই অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হয়। তাই পাঠদান বন্ধ রেখে
বিয়ের দাওয়াত খেতে গেছেন তিন উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষক
কর্মচারীরা। বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রেখেই রবিবার (৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে মন্ত্রীর
ছেলের বৌভাত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন এসব শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমনকি সেই
দাওয়াতে উপস্থিত হয়েছেন তিন উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তারাও। বিষয়টি নিয়ে এলাকায়
মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বাড়ি কুড়িগ্রামের রৌমারীতে। তিনি কুড়িগ্রাম-৪
আসনের (রৌমারী,রাজীবপুর ও চিলমারী) সরকার দলীয় সংসদ সদস্য। আজ (রবিবার)
প্রতিমন্ত্রীর রৌমারীস্থ বাসভবনে তার একমাত্র ছেলে সাফায়েত বিন জাকিরের বিবাহোত্তর
বৌভাত অনুষ্ঠান হচ্ছে।
রবিবার সকালে চিলমারী ও রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা
গেছে, বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়নি। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয়
পতাকা তোলা হলেও কোনও শিক্ষক-কর্মচারী কিংবা শিক্ষার্থী নেই। প্রাথমিক, মাধ্যমিক
ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন,
‘প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের
দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা দাওয়াতে অংশ নিতে যাবেন। এজন্য আজ পাঠদান বন্ধ।
আরেক শিক্ষক বলেন, ‘ আমাদেরকে বলা হয়েছে একটা ক্লাস নিয়ে দাওয়াতে যেতে। তবে
কোনও ক্লাস নেওয়া হয়নি। বিয়ের উপহার কেনার জন্য সবার কাছ থেকে ৫শ’ টাকা করে
চাওয়া হয়েছিল। পরে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।’
সরেজমিন রবিবার চিলমারী উপজেলার মজাইডাঙ্গা সরকারী প্রাঃ বিদ্যাঃ, দক্ষিণ রাধাবল্লভ,
রাণীগঞ্জ বাজার, ফকিরেরহাট, খালেদা শওকত পাটওয়ারী, চর খরখরিয়া, নিরিশিং ভাজ,
রানীগঞ্জ মদন মোহন, খরখরিয়া ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান ঘুরে একই চিত্র পাওয়া গেছে। সকল প্রতিষ্ঠানে ঝুলছে তালা। বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষদের সাথে কথা হলে অনেকে বলেন, শৈত্য প্রবাহের কারনে আবার অনেকে বলেন
সংরক্ষিত ছুটি আবার অনেক প্রতিমন্ত্রী ছেলের বিয়ের দাওয়াতের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে
জানান। ফকিরেরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী বিপুল, আমির
হোসেনসহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতিমন্ত্রী
জাকির হোসেনের ছেলের বিয়ে এই জন্য বন্ধ দেয়া হয়েছে। মদন মোহন এলাকার দিলিপ
কুমার ক্ষোভের সাথে বলেন, শিক্ষক খুঁজতে আইছেন তাহলে রৌমারী যান। শুধু দিলিপ
কুমার নয় এলাকবাসী ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা কেমন কথা প্রতিমন্ত্রীর
ছেলে বিয়ে জন্য কি সকল স্কুল বন্ধ রাখতে হবে।
চিলমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সালেহ্ধসঢ়; সরকার বলেন, আমি
রৌমারীতে আছি, ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো। রৌমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো.
নজরুল ইসলামের ফোনে কল দিলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। আর সহকারী উপজেলা শিক্ষা
অফিসার মো. নাজমুল করিমের নাম্বারে ফোন দিলে তিনি নিজেও ওই অনুষ্ঠানে রয়েছেন
বলে জানান। আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আইবুল ইসলামকে একাধিকবার
ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিইও) মো. শহীদুল ইসলাম বলছেন ভিন্ন কথা। তার
দাবি, ‘সকল প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা আজ সংরক্ষিত ছুটি দিয়েছেন। প্রচন্ড
শীতের ভয়াবহতার কারণে প্রধান শিক্ষকদের হাতে যে সংরক্ষিত ছুটি আছে সেই ছুটি

তারা দিয়েছেন। সব প্রতিষ্ঠানে একযোগে সংরক্ষিত ছুটি দেওয়ার প্রশ্নে ডিপিইও
বলেন, ‘তারা (প্রধান শিক্ষকরা) জানিয়েছেন, প্রচন্ড শীতে বাচ্চারা অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছে,
অনেকে স্কুলে আসছে না। এজন্য একদিন ছুটি দেওয়া হয়েছে। এই ছুটি দেওয়ার ক্ষমতা
প্রধান শিক্ষকদের হাতে থাকে। প্রতিমন্ত্রীর ছেলে বিয়ের দাওয়াতে শিক্ষকদের অংশ নেওয়া
বিষয়ে ডিপিইও বলেন, ‘দাওয়াতে যে কেউ যেতেই পারেন।

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর