প্রাইভেট ডিটেকটিভ ডেক্স : শাহ রায়হান বারী
শর্তহীন সংলাপের জোরালো তাগিদ দিয়ে ডোনাল্ড লু চিঠি দিলেও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক সাড়া মিলছেনা।
এর মধ্যে আজ তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
ফলে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ঠ রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না করে সরকাার নির্বাচনের পথে হাঁটলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে চাপ আরও বাড়তে পারে। কূটনীতিকদের সাথে কথা বলে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে বিশেষ সুত্রে জানা গেছে।
তফসিল ঘোষণা নিয়ে বিভিন্ন প্রধান প্রধান পত্রিকার শিরোনামে ‘সমঝোতা ছাড়াই তপশিল’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দেশি বিদেশের চাপ, সেইসাথে সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সমঝোতার কোনো পথ খোলেনি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।
দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল যখন রাজপথে মারমুখী অবস্থায় রয়েছে এর মধ্যেই বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। বলে ধারনা করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে তফসিল চূড়ান্ত করতে বিকেল পাঁচটায় কমিশন সভায় বসবে। বৈঠকের পরেই সিইসির ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়ার কথা।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ভিডিও কনফারেন্সে বলেছেন, দুই এক দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন তাফসিল ঘোষণা করবে। সেক্ষেত্রে জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণ হবে বলে জানিয়ে আসছিলেন।
ইসির পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছে রাজনৈতিক সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়ার দায়িত্ব ও সক্ষমতা ইসির নেই। তবে রাজনীতির দলগুলোর মধ্যে সংলাপ সমঝোতার পরিস্থিতি তৈরি হলে পুনঃতফসিলের পরিকল্পনা তাদের ক্ষমতা রয়েছে।
তফসিল ঘোষণার পরে ইসি সচিবালয় ঘেরাও করতে পারে বিএনপি ও সমমনা দল গুলি।
বিএনপির দলীয় সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেই বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে নামবে।
অবরোধের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ঘেরাও এর ঘোষণা আসতে পারে বলেও জানা গিয়েছে।
এদিকে বুধবার তফসিল ঘোষণা হলে ইসি সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
বিকাল তিনটার দিকে দলটির নেতাকর্মীদের বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে জড়ো হয়ে সেখান থেকে মিছিল করে ইসির দিকে যাওয়ার কথা রয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শর্তহীন সংলাপের বসার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর চিঠির জবাব দেওয়ার কথাও বিবেচনা করছে দলটি।
এদিকে নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে সারাদেশে মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
১৪ নভেম্বর ২০২৩
সংলাপ নিয়ে ডোনাল্ড লু’র চিঠি কতটা কাজে আসবে তা জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
অনেক দিন পর আবারও আলোচনায় জাতীয় পার্টি। দলটিকে নিয়ে দুটি পত্রিকায় দুই রকমের খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর”এই মুহূর্তে নির্বাচনে গেলে স্যাংশন আসার সম্ভাবনা রয়েছে । অপর দিকে
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদেরকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে নির্বাচনে যাওয়ার পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি।
মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওই সভায় বেশিরভাগ তৃণমূল নেতা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা বলেন।
তাদের মতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচনে অংশ নিলে লাভবান হয় আওয়ামী লীগ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাতীয় পার্টি।
আবার তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে জিএম কাদের বলেন যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি এসেছে আমাদের কাছে। তারা সংলাপ চাচ্ছেন। আমরাও সংলাপের কথা বলে আসছি। আমরা আর কোনো দলের মুখাপেক্ষী থাকতে চাই না। আমরা এখন দলগতভাবে অনেক শক্তিশালী।
মাঠের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন অতীতে আমরা যখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেছি, কিছু লোক পেছন থেকে তা নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র করেছে। আগামীতে আর এরকমটা হবার সম্ভাবনা নেই। কারণ জাতীয় পার্টি এখন আগের চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী ও নিজস্ব মতামত রয়েছে।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর নির্বাচনের পথে জাপা বঙ্গভবনে জি এম কাদের’। প্রতিবেদনে বলা হয় নানামুখী দ্বিধা-সংশয় নিয়েই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পথে হাটছে বর্তমান সংসদের সাংবিধানিক প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টি।
দলটির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বরাত দিয়ে খবরে বলা হচ্ছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার প্রশ্নে দলে মতভিন্নতা কিংবা বহুমত থাকলেও নানা সমীকরণে ও কারণে দলটি এদিক-ওদিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে এখন নির্বাচনমুখী।
ভেতরে-ভেতরে কিছু ঘটনাপ্রবাহে দুইদিন আগে থেকে এতদিনের অবস্থান থেকে নড়ে দলটি এখন নির্বাচনমুখী।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য বলছে, তারপরেও দেশের ভেতরের-বাইরের পরিস্থিতি বুঝে প্রকাশ্যে সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করবে জাপা।
ভিন্ন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলে, পরিস্থিতির আলোকে জাপাও নতুনভাবে চিন্তা করবে।
এদিকে আজ বুধবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
সহিংসতায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে
সচেতন ও সাধারণ মানুষের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম নিচ্ছে ও হতাসা বিরাজ করছে। তবে অধিক অংশ মানুষ নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে কথা বলছেন ওক দ্বলীয় নির্বাচনের বিরুদ্ধে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।